মনুসংহিতা রাজধর্ম সপ্তম অধ্যায় হতে শ্লোক ব্যাখ্যা-12

মনুসংহিতা রাজধর্ম সপ্তম অধ্যায় হতে শ্লোক ব্যাখ্যা। শ্লোকটি হল – “তস‍্য সর্বাণি ভূতাণি স্থাবরাণি চরাণি চ।
ভয়াদ্ ভোগায় কল্পন্তে স্বধর্মান্ন চলন্তি চ।।”

মনুসংহিতা রাজধর্ম সপ্তম অধ্যায় হতে শ্লোক ব্যাখ্যা-১২

“তস‍্য সর্বাণি ভূতাণি স্থাবরাণি চরাণি চ।
ভয়াদ্ ভোগায় কল্পন্তে স্বধর্মান্ন চলন্তি চ।।”

অনুবাদ

তার অর্থাৎ সেই দন্ডের ভয়ে স্থাবর জঙ্গল সমস্ত প্রাণী ভোগ করতে সমর্থ হয় এবং (কেউই) স্বধর্ম থেকে বিচ্যুত হয় না।

উৎস

আলোচ‍্য শ্লোকটি স্মৃতিকার মনুপ্রণিত মনুসংহিতা গ্রন্থে রাজধর্ম নামক সপ্তম অধ্যায় থেকে গৃহীত হয়েছে।

প্রসঙ্গ

দন্ডের উপযোগীতার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে স্মৃতিকার মনু আলোচ‍্য শ্লোকটির অবতারণা করেছেন।

ব্যাখ্যা

     দন্ডের ভয়ে জগতের সকল প্রাণী ভোগে সমর্থ হয়, কেউই স্বধর্ম থেকে বিচ্যুত হয় না। দন্ডই নিয়ম রক্ষা করে। প্রজারা যদি রাজার কর্তৃত্বকে অস্বীকার করে রাজার প্রতি যদি শ্রদ্ধাশীল না হয়, তাহলে সামাজিক স্থিতি বিনষ্ট হয় এবং প্রজাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। কিন্তু সঠিকভাবে দণ্ডপ্রযুক্ত হলে সমস্ত প্রজাকে সন্তুষ্ট করে, রাজার স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। দন্ডের ভয়েই চরাচর জগতের সকল প্রাণী স্ব স্ব ভোগ সাধনে সমর্থ হয়। দন্ডের প্রভাবে চোর গৃহীর ধন ও ব্যবহার্য দ্রব্য অপহরণ করতে পারে না বলে জঙ্গমের ভোগ সিদ্ধি সম্ভব হয়। দন্ড আছে বলেই স্থাবর জঙ্গম কেউই স্বধর্ম থেকে বিচ্যুত হয় না। রাজা অনলস হয়ে অপরাধীর প্রতি যদি সঠিকভাবে দণ্ডবিধান না করেন তাহলে রাজ্যে মাৎস‍্যন‍্যায়ের প্রাদুর্ভাব দেখা দেবে। বলবান লোকেরা দুর্বল লোকদের উৎপীড়ন করে অধিকতর বল আহরণে প্রয়াসী হতেন।

দন্ড দুই প্রকার রাজদন্ড ও যমদণ্ড। দণ্ডের ভয়ে স্থাবর জঙ্গল সকলেই সতর্ক – কেউ কারুর পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। দেশে দণ্ড না থাকলে এর বিপরীত ব্যাপার হতো।

আলোচ‍্য শ্লোকটিতে অনুষ্টূপ ছন্দ পরিলক্ষিত হয়েছে।

মনুসংহিতা রাজধর্ম সপ্তম অধ্যায় হতে অন্যান্য প্রশ্ন ও উত্তর

Comments