মনুসংহিতা রাজধর্ম সপ্তম অধ্যায় হতে শ্লোক বাখ্যা-10

যদি ন প্রণয়েদ্রাজা দণ্ডং দণ্ড‍্যেস্বতন্দ্রিতঃ।
শূলে মৎস‍্যানিবাপক্ষ‍ন্ দুর্বলান্ বলবত্তরাঃ।।”

মনুসংহিতা রাজধর্ম সপ্তম অধ্যায় হতে বাংলা শ্লোক বাখ্যা-10

যদি ন প্রণয়েদ্রাজা দণ্ডং দণ্ড‍্যেস্বতন্দ্রিতঃ।
শূলে মৎস‍্যানিবাপক্ষ‍ন্ দুর্বলান্ বলবত্তরাঃ।।”

অনুবাদ:-

রাজা যদি নিরলসভাবে দন্ডনীয়ের প্রতি দন্ড প্রয়োগ না করেন, তাহলে অপেক্ষাকৃত অধিক বলশালী ব্যক্তিগণ দুর্বল ব্যক্তিদের শূলে মাছের মতো পাক করে ফেলত।

উৎস:-

আলোচ‍্য শ্লোকটি সুপ্রসিদ্ধ ধর্মশাস্ত্রকার মহর্ষি মনু প্রণীত মনুসংহিতার সপ্তম অধ‍্যায় থেকে গৃহীত।
প্রসঙ্গ:- আলোচ‍্য শ্লোকে দণ্ড যথাযথভাবে প্রযুক্ত না হলে সমাজে কিরূপ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়, তা এখানে সুন্দরভাবে উপমার সাহায‍্যে আলোচনা করা হয়েছে।

ব্যাখ্যা

      রাজা রাজ‍্যের কর্ণধার হওয়ায় তার অবশ‍্য করণীয় কিছু কর্তব‍্য রয়েছে। যেমন- প্রজাদের নিরাপত্তা বিধান করা, রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং দণ্ডযোগ্য ব্যক্তিকে যথাযোগ্য দন্ড দান করা। এজন্য রাজাকে নিরলসভাবে ও সতর্কতার সঙ্গে অবস্থান করতে হয়। রাজা দণ্ডনীয় ব্যক্তিকে যথাযথভাবে দণ্ডিত না করলে বা দন্ডের অপপ্রয়োগ করলে সমগ্র দেশে অন্যায় ও অরাজকতা মাথা তুলে দাঁড়াবে। ক্ষমতাবানরা  ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে দুর্বল ব‍্যাক্তিদের উপর উৎপীড়ন চালাবে।  উল্লেখ্য শতপথ ব্রাহ্মণের অন্তর্গত মনুমৎস‍্যকথা আখ‍্যানে বলা হয়েছে যে- জলে যেমন বৃহৎ বৃহৎ মাছগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মাছগুলিকে নির্বিচারে গ্রাস করে। ঠিক তেমনি রাজা যদি যথাযথ দণ্ড প্রয়োগ না করেন তাহলে অপেক্ষাকৃত বলবান প্রজাগণ দুর্বল প্রজাগরণের উপর অত্যাচার করতে থাকবে। এই অরাজক অবস্থাকে মাৎস‍্যন‍্যায় বলে। এই প্রসঙ্গে মেধাতিথি বলেছেন- ‘যথা মৎস‍্যাঃ শূল‍্যাক্রিয়ন্তে ভোজনার্থমেবমশক্তো জনোঅধিক শক্তিভিরুপহীয়েত ধনশরীরদারহরণাদিনা।’
আলোচ‍্য শ্লোকে অনুষ্টুপ্ ছন্দের লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়েছে।

মনুসংহিতা রাজধর্ম সপ্তম অধ্যায় হতে অন্যান্য প্রশ্ন ও উত্তর

Comments