মনুসংহিতা (রাজধর্ম) ব্যাখ্যা– বালোহপি নাবমন্তব্যো মনুষ্য ইতি ভূমিপঃ । মহতী দেবতা হ্যেষা নররূপেন তিষ্ঠতি।।” Manu Samhita Slokas Sanskrit Explanation-3
মনুসংহিতা শ্লোক সংস্কৃত ব্যাখ্যা-3
বালোহপি নাবমন্তব্যো মনুষ্য ইতি ভূমিপঃ ।
মহতী দেবতা হ্যেষা নররূপেন তিষ্ঠতি।।”
উৎস
আচার্যমনুনা বিরচিতায়াঃ মনুসংহিতায়াঃ রাজধর্মঃ নাম সপ্তমাধ্যায়াৎ অয়ং শ্লোকঃ সংকলিতঃ।
প্রসঙ্গ
অস্মিন্ শ্লোকে আচার্যমনুঃ রাজা বয়সা নবীনো অপি ন কদাপি কেনাপি অবমন্তব্য, বস্তুতঃ রাজানাং প্রতি প্রজানাং ব্যবহারঃ কীদৃশঃ কর্তব্যং তৎ উল্লিখিতবান্।
ব্যাখ্যা
রাজা যদি বালকঃ ভবেৎ তথাপি অস্য ন অবমন্তব্যঃ। হি অয়ং রাজা শ্রেষ্টদেবানাং সারাংশেন অসৃজৎ। স মানবরূপেন জগতে তিষ্ঠতি। ঈশ্বরঃ বিশ্বচরাচরস্য রক্ষার্থম্ অষ্টদেবানাং সারাংশং গৃহীত্বা রাজানম্ অসৃজৎ। অতঃ স মহতী দেবতা নররূপেন জগতে তিষ্ঠতি। স রাজা মহাতেজস্বী। রাজা সর্বদা মাননীয়ঃ। যা দেববিগ্রহস্য স্থূলত্বং সূক্ষত্বং ন বিচার্যেন শ্রদ্ধাপ্রদর্শনম্ ভবেৎ। তথা রাজা বৃদ্ধত্বং বালকত্বং ন বিচার্য্য। স সর্বদা পূজ্যঃ। অথঃ রাজা কদাপি নাবমন্তব্য। তদৈব রাজাজ্ঞা সর্বদা প্রজানাং পালনীয়া।
মনুসংহিতা শ্লোক বাংলা বাখ্যা -3
“বালোঅপি নাবমন্তব্যো মনুষ্য ইতি ভূমিপঃ।
মহতী দেবতা হ্যেষা নররূপেন তিষ্ঠতি।।”
উৎস:- আলোচ্য শ্লোকে সুপ্রসিদ্ধ ধর্মশাস্ত্র কার মহর্ষি মনুপ্রণিত মনুসংহিতার রাজধর্ম নামক সপ্তম অধ্যায় থেকে গৃহীত হয়েছে।
প্রসঙ্গ:- রাজা বয়সে বালক হলেও তাকে সাধারন মানুষ বলে কোন অবমাননা করা উচিত নয়। তা উপরোক্ত শ্লোকে বিবৃত হয়েছে।
সমাজের অরাজকতা এবং দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার দূর করার জন্য পরমেশ্বর রাজাকে সৃষ্টি করেছেন। বিধাতা কর্তৃক সৃষ্ট এই রাজার মধ্যে ভগবান ইন্দ্র অগ্নি বায়ু যম সূর্য বরুণ চন্দ্র এবং কুবের এই আটজন মহাদেবতার সারভূত অংশ বিদ্যমান-
“ইন্দ্রানিলযমার্কাণামগ্নেশ্চ বরুণস্য চ।
চন্দ্রাবিত্তেশয়োশ্চৈব মাত্রা নির্হৃত্য শাশ্বতীঃ।।”
তাই কখনো কোথাও যদি অল্প বয়স্ক ব্যক্তি রাজপথে অভিষিক্ত হন, তাহলে তাকে বালক কিংবা সামান্য মানুষ ভেবে অবমাননা করা উচিত নয়। ভাষ্যকার কুল্লূকভট্ট এই প্রসঙ্গে বলেছেন-
“যস্মাত্ মহতী ইয়ং কাচিত্।
দেবতা মানুষরূপেন অবতিষ্ঠতে।।”
দেবতার বিগ্রহ ক্ষুদ্র বিশাল স্থূল সূক্ষ্ম যাই হোক না কেন তা সর্বদা শ্রদ্ধার যোগ্য কারণ ক্ষুদ্র হলেও সে তো দেব বিগ্রহই। অনুরূপভাবে রাজা অল্প বয়স্কই হোক কিংবা অপরিণত বুদ্ধি বিশিষ্টই হোক তাতে কিছু যায় আসে না। যতক্ষণ তিনি রাজপদে, রাজত্বের ভার যতক্ষণ তার হাতে ততক্ষণ তিনি সেই সম্মানও শ্রদ্ধার যোগ্য। কারণ ব্যক্তি রাজা নন, রাজার পদমর্যাদায় পূজ্য। শাস্ত্রে একথা স্পষ্টভাবে বিবৃত হয়েছে যে দেবতার অবমাননা করলে লোকে অদৃষ্ট দোষ ভোগ করে। কিন্তু রাজাকে অবমাননা করলে অবমাননা কারীকে অদৃষ্ট এবং দৃষ্ট এই দুই ফলই ভোগ করতে হয়।
আলোচ্য শ্লোকটিতে অনুষ্টুপ্ ছন্দ পরিলক্ষিত হয়েছে।এই ছন্দের লক্ষণটি হল-
” পঞ্চমং লঘু সর্বত্র সপ্তমং দ্বিচতুর্থয়োঃ।
গুরু ষষ্ঠঞ্চ পাদানং শেষেস্বনিয়মোমতঃ।।”
মনুসংহিতার অন্যান্য প্রশ্ন গুলি পড়ুন-
- মনুসংহিতা রাজধর্ম সপ্তম অধ্যায় হতে শ্লোক ব্যাখ্যা-12
- মনুসংহিতা রাজধর্ম সপ্তম অধ্যায় হতে শ্লোক বাখ্যা-11
- মনুসংহিতা রাজধর্ম সপ্তম অধ্যায় হতে শ্লোক বাখ্যা-10
- মনুসংহিতা রাজধর্ম সপ্তম অধ্যায় হতে শ্লোক বাখ্যা-9
- মনুসংহিতা রাজধর্ম সপ্তম অধ্যায় হতে শ্লোক বাখ্যা-8
- মনুসংহিতা রাজধর্ম সপ্তম অধ্যায় হতে শ্লোক সংস্কৃত বাখ্যা-7
- মনুসংহিতা শ্লোক (রাজধর্ম ) সংস্কৃত বাখ্যা -6
- মনুসংহিতা (রাজধর্মঃ) সংস্কৃত শ্লোক বাখ্যা-5
- মনুসংহিতা শ্লোক (রাজধর্মঃ) সংস্কৃত ব্যাখ্যা-4
- মনুসংহিতা (রাজধর্ম) সংস্কৃত শ্লোক ব্যাখ্যা-3
- মনুসংহিতা সপ্তম অধ্যায় (রাজধর্ম) হতে শ্লোক সংস্কৃত বাখ্যা-2
- মনুসংহিতা সপ্তম অধ্যায় রাজধর্ম হতে সংস্কৃত বাখ্যা-1
- মনুসংহিতা: কুলং দহতি রাজাগ্নিঃ স পশুদ্রব্যসঞ্চয়ম্ – উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ
- মনুসংহিতা: দণ্ডের উৎপত্তি প্রকৃতি ও কার্যকলাপ
- মনুসংহিতা অনুসারে দন্ডের উৎপত্তি ও বৈশিষ্ট্য
- মনুসংহিতা অনুসারে দূত সম্পর্কে পূর্নাঙ্গ বিবরণ দাও
- মনুসংহিতা অনুসারে মনুর মতে রাজার বিনয়ের গুরুত্ব
- মনুসংহিতা অনুসারে রাজার মন্ত্রনা বিধি
- মনুসংহিতা (রাজধর্ম) হতে ছোট প্রশ্ন ও উত্তর
- মনুসংহিতা অনুসারে ব্যসন কী ? ব্যসনের বিভাগসমূহ প্রভাব ও পরিনাম আলোচনা কর
- মনুসংহিতা অনুসারে ষড়গুণ -এর প্রয়োগ নির্দেশ
- রাজার প্রাত্যহিক কৃত্যগুলি কী কী ( মনুসংহিতা )
- মনুসংহিতা: রাজার উৎপত্তির ঐশ্বরিক মতবাদ আলোচনা কর।
- মনুসংহিতা অনুসারে মনুর মতে দূর্গ কয় প্রকার ও কি কি
- মনুসংহিতা অনুসারে দন্ডের প্রকৃতি ও উপযোগিতা
- মনুসংহিতা অনুসারে মনুর মতে রাজার বিনয়ের গুরুত্ব-2
- মনুসংহিতা অনুসারে ব্যসন ও মৃত্যুর মধ্যে কোনটি ক্ষতিকর
- মনুসংহিতা অনুসারে রাজার উৎপত্তি ও বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর
- ব্যসন কি? ব্যসন কয় প্রকার- পুূর্ববর্তী ব্যসনগুলি পরবর্তী ব্যসনের চেয়ে ক্ষতি কারক কেন?