অর্থশাস্ত্র: ব্যাখ্যা – ৪

অর্থশাস্ত্র হতে ব্যাখ্যা – ৪। তস্মাৎ স্বধর্মং ভূতানাং রাজা ন ব‍্যভিচারয়েৎ। স্বধর্মং সংদধানো হি প্রেত‍্য চেহ চ নন্দতি।।

অর্থশাস্ত্র হতে ব্যাখ্যা – ৪

তস্মাৎ স্বধর্মং ভূতানাং রাজা ন ব‍্যভিচারয়েৎ।
স্বধর্মং সংদধানো হি প্রেত‍্য চেহ চ নন্দতি।।

অনুবাদ:-

রাজার কর্তব‍্য হল প্রাণীবর্গ যাতে স্বধর্ম চ‍্যুত না হয় সেদিকে নজর রাখা। যে রাজা সকলকে স্বধর্মানুষ্ঠানে নিযুক্ত করতে পারেন, তিনি ইহলোক ও পরলোকে সুখী হন।

উৎস:-

উপরিউক্ত শ্লোকটি আচার্য কৌটিল‍্য রচিত অর্থশাস্ত্রম্ গ্রন্থের বিনয়াধিকারিকের ত্রয়ীস্থাপনা অংশ থেকে গৃহীত হয়েছে। এই শ্লোকের মধ‍্যে নিজের ধর্ম থেকে বিচ‍্যুত না হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ব্যাখ্যা

প্রাচীনকালে আমাদের সমাজে বর্ণকে চারভাগে ভাগ করা হয়েছে- ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ‍্য এবং শূদ্র। এদের নিজের নিজের ধর্মের কথা বলা হয়েছে। এবং চারটি আশ্রমের কথাও বলা হয়েছে- ব্রহ্মচর্য, গার্হস্ত‍্য, বানপস্থ ও সন্ন‍্যাস। প্রত‍্যেকেই প্রত‍্যেকের ধর্মানুসারে কাজ করার কথা বলা হয়েছে। শাস্ত্রে আরো বলা হয়েছে যে, যে সমস্ত রাজ‍্যের প্রজারা নিজের নিজের ধর্ম পালন করেন তারা অনন্ত সুখ এবং অনন্ত মোক্ষের অধিকারী হয়ে থাকেন। কিন্তু যে সমস্ত মানুষ নিজের ধর্মকে লঙ্ঘন করেন তারা কর্মসঙ্কর ও বর্ণসঙ্করের দ্বারা বিনাশ প্রাপ্ত হয়ে থাকেন। যিনি একটি রাজ‍্যের রাজা হিসাবে বিবেচিত হবেন তার প্রধান কর্তব‍্য হল সমস্ত প্রজাবর্গ ও প্রাণীবর্গকে স্বধর্ম থেকে ভ্রষ্ট হতে না দেওয়া। কেননা, নিজ ধর্ম থেকে ভ্রষ্ট হতে না দেওয়া। কেননা, নিজ ধর্ম থেকে ভ্রষ্ট হলে তাদের বিনাশ অবশ‍্যই হবে। তাই যে রাজা সকলকে দিয়ে স্বধর্ম আচরন করাতে পারেন তিনি ইহলোক ও পরলোকে সুখী হতে পারেন। তাই সকলের উদ্দেশ্যে মহামতি কৌটিল‍্যের উপদেশ হল কেউই যেন ধর্ম থেকে বিচ‍্যুত না হন।

এটাই হল শ্লোকটির অর্থ।

Comments