অক্ষসূক্তে ঋকবেদের সমাজচিত্র আলোচনা করা হল । অক্ষসূক্তের ঋষি-ঔলুষ কবষ দেবতা হল অক্ষ,কিতব,কৃষি এবং ছন্দ- ত্রিষ্টুপ,জগতী।
অক্ষসূক্তে ঋকবেদের যে সমাজচিত্র ফুটে উঠেছে তার বর্ণনা কর।
উঃ- ঋকবেদের দশমমন্ডলের ৩৪তম সূক্ত হল অক্ষসূক্ত। এই সূক্তটি ধর্মীয় কোনো আচার আচরন না থাকায় একে ধর্মনিরপেক্ষ সূক্ত বলা হয়। এই সূক্তের দ্বারা তৎকালীন ঋকবেদের যুগের অর্থাৎ প্রাচীন ভারতের সমাজচিত্র ফুঁটে উঠেছে।
অক্ষসূক্তে ঋকবেদের সমাজচিত্র
বৈদিকযুগে অক্ষক্রীড়া বিনোদনের একটি মাধ্যম ছিল। কিন্তু অক্ষক্রীড়া বিনোদন হলেও তা ছিল একপ্রকার অমঙ্গলজনক ব্যসন। ঋকবেদ হতে জানা যায় তৎকালীন সমাজে অক্ষক্রীড়া ছাড়া ঘোড়া দৌড় ছিল বিনোদনের আরেকটি মাধ্যম।
অক্ষসূক্তে দেখানো হয়েছে কিভাবে পাশা খেলে মানুষের করুন অবস্থা প্রাপ্ত হয়। এছাড়াও বলা হয়েছে পাশা না খেলে কৃষিকার্য কর যাতে সমাজের মঙ্গল সাধিত হয়।
কিতবের মানসিক যন্ত্রনার চিত্রগুলি যেভাবে অক্ষসূক্তে বর্ণিত হয়েছে, তাতে সেযুগের সমাজের একটি চিত্র আমাদের সামনে স্পষ্টরূপে ফুটে উঠেছে।
অর্থাৎ সেযুগের চৌর্যবৃত্তি, গনিকাবৃত্তি প্রভৃতি দেখা যেত। এগুলি সমাজে নিন্দনীয় ছিল। এছাড়াও দেখা যায় ব্রাহ্মণরা প্রভাবশালী হলেও অর্থনৈতিকভাবে রাজার উপর নির্ভরশীল ছিল। পাশাখেলায় আসক্ত ব্যাক্তিকে সকলে যে ঘৃণা করত তা অক্ষসূক্ত হতে জানা যায়।
উপসংহার
অক্ষসূক্তটি ধর্মহীন একটি গীতিকবিতা। বৈদিকযুগের পরবর্তীকালেও পাশা খেলার প্রচলন ছিল। যেমন- মহাভারত-এ পাশা খেলা দেখতে পাই,তবে এই খেলার কি নিয়মকানুন ছিল সে সম্পর্কে কোনো বিশেষ তথ্য নেই। সুতরাং কৃষিকাজে, পশুপালন ছিল সর্বশান্ত মানুষকে জীবনের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার একমাত্র পথ- এইটি ঋষি ঔলুষ কবষ -এর উচ্চারিত সতর্কবানী।