অর্থশাস্ত্র হতে ব্যাখ্যা – 5 চতুবর্ণাশ্রমো লোকো রাজ্ঞা দণ্ডেন পালিতঃ। স্বধর্মকর্মাভিরতো বর্ততে স্বেষু বেশ্মসু।।
অর্থশাস্ত্র হতে ব্যাখ্যা – 5
৫) চতুবর্ণাশ্রমো লোকো রাজ্ঞা দণ্ডেন পালিতঃ।
স্বধর্মকর্মাভিরতো বর্ততে স্বেষু বেশ্মসু।।
অনুবাদ:-
চতুর্বর্ণ ও চতুরাশ্রমের লোকেরা রাজা কর্ত্তৃক দণ্ডের দ্বারা পালিত হলে নিজ নিজ ধর্মে ও কর্মে নিযুক্ত থেকে স্বগৃহে সুখ ও শান্তিতে বসবাস করতে পারে।
উৎস:-
আলোচ্য শ্লোকটি আচার্য কৌটিল্য রচিত অর্থশাস্ত্রম্ বিনয়াধিকারিকের বিদ্যাসমুদ্দেশ প্রকরণের বার্তা দণ্ডনীতি স্থাপনা অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গ
দণ্ডের ভয়ে সমস্ত প্রাণীরা নিজের ধর্মভোগ করে সুখে অবস্থান করে। এই প্রসঙ্গে শ্লোকটির অবতারনা করা হয়েছে।
ব্যাখ্যা
রাজ্যকে সুশৃঙ্খলে রাখাই অর্থাৎ প্রজাপালন করাই রাজার একমাত্র ধর্ম। রাজা তার দণ্ডের দ্বারা সমস্ত প্রজাবর্গকে নিজের কর্তব্য পালনে নিয়োজিত করেন। কারন দন্ডের ভয় না থাকলে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র তারা প্রত্যেকেই নিজের নিজের ধর্ম ভোগ করতে সমর্থ হতেন না এবং বলবান ব্যক্তিরা দুর্বলদের জোর পূর্বক সমস্ত সম্পত্তি অধিকার করে তাদের উপর অত্যাচার করতেন। কিন্তু রাজা দণ্ডবিধান করবেন এই ভয়ে চতুবর্ণ অর্থাৎ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র এবং চতুরাশ্রম অর্থাৎ ব্রহ্মচর্য, বাণপ্রস্থ , গার্হস্ত্য ও সন্ন্যাস এই চার আশ্রমের যার যা ধর্ম যেমন-ব্রাহ্মণের ধর্ম হল -বেদ অধ্যয়ন, যজন, যাজন তা পালন করা। এবং ক্ষত্রিয়ের ধর্ম হল – যজন, অধ্যয়ন, দেশরক্ষা, বৈশ্যের স্বধর্ম হল – কৃষি, পশুপালন, বানিজ্য করা। শূদ্রের ধর্ম হল ব্রাহ্মণদের সেবা করা প্রভৃতি। এই কারন দণ্ডকে চার আশ্রমের ও চার বর্ণের প্রতিভূ বলা হয়। যে সমস্ত প্রজাবর্গ রাজার দণ্ডের প্রভাবে নিজের নিজের ধর্ম ও কর্ম করে থাকেন তারা নিজেদের গৃহে সুখে ও শান্তিতে অবস্থান করতে পারেন।