সংস্কৃত ছন্দ (Sanskrit Rhythm) সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তরের মাধ্যমে আলোচনা করা হল ।
সংস্কৃত ছন্দ (Sanskrit Rhythm)
ছন্দোমঞ্জরী গ্রন্থটির রচয়িতা | আচার্য গঙ্গাদাস |
ছন্দ শব্দটির অর্থ | ছন্দয়তি আহ্লাদয়তি ইতি ছন্দঃ |
ছন্দ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ | অভিপ্রায়, বশ্যতা, স্বাচ্ছন্দ্য; রকম, ছাঁদ |
ছন্দ কয়প্রকার ও কী কী | ছন্দ তিনপ্রকার। যথা-i) সমবৃত্ত, ii) অর্ধসমবৃত্ত এবং iii) বিষমবৃত্ত। |
১) তোমাদের পাঠ্য ছন্দ গ্রন্থটির নাম কী?
উ:- আমাদের পাঠ্য ছন্দ গ্রন্থটির নাম হল ছন্দোমঞ্জরী।
২) ছন্দোমঞ্জরী গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন – আচার্য গঙ্গাদাস।
৩) ছন্দ শব্দটির অর্থ কী?
উ:- “ছন্দয়তি আহ্লাদয়তি ইতি ছন্দঃ” অর্থাৎ যা আমাদের অর্থাৎ পাঠকবর্গের হৃদয়কে আনন্দদান করে, তাই ছন্দ কাব্যের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তোলে।
৪) ছন্দ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ কী?
উ:- চন্দ ধাতুর সঙ্গে অসুন্ প্রত্যয় যুক্ত করে চন্দস্ পদটি গঠিত হয়। এরপর চন্দ ধাতুর চ টি ছ হয়ে ছন্দস্ পদে পরিণত হয়। তারপর স টি বিসর্গ(ঃ) হয়ে ছন্দঃ শব্দটির সৃষ্টি হয়েছে।
৫) পদ্য কাকে বলে?
উ:- ছন্দের দ্বারা নিবন্ধ এবং চারটি চরনবিশিষ্ট পদের সমষ্টিকে পদ্য বলা হয়- ‘পদ্যং চতুষ্পদী’।
৬) পদ্য কয় প্রকার ওকী কী?
উ:- আচার্য গঙ্গাদাস পদ্যকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন। যথা- বৃত্ত এবং জাতি।
৭) বৃত্ত কাকে বলে?
উ:- ‘বৃত্তম্ অক্ষর সংখ্যাতম্‘। অর্থাৎ যে পদ্যের অক্ষর গননা করে নির্ণয় করা হয়, তাকে বৃত্ত বলে।
৮) বৃত্তছন্দ কয়প্রকার ও কী কী?
উ:- বৃত্তছন্দ তিনপ্রকার। যথা-
- i) সমবৃত্ত,
- ii) অর্ধসমবৃত্ত এবং
- iii) বিষমবৃত্ত।
৯) বিষমবৃত্ত ছন্দ কাকে বলে?
উ:- যে ছন্দের চারটি চরনের অক্ষর সংখ্যা সমান হয়, তাকে সমবৃত্তছন্দ বলে- ‘ সমং সমচতুষ্পাদং ‘।
যেমন- ইন্দ্রবজ্রা।
১০) অর্ধসমবৃত্তছন্দ কাকে বলে?
উ:- যে ছন্দে প্রথম চরনের সঙ্গে তৃতীয় চরনের অক্ষর সংখ্যা এবং দ্বিতীয় চরনের সঙ্গে চতুর্থ চরনের অক্ষর সংখ্যা সমান হয়, তাকে অর্ধসমবৃত্তছন্দ বলে- ‘ ভবত্যর্ধসমং পুনঃ’।
যেমন- পুষ্পিতাগ্রা।
১১ ) বিষমবৃত্তছন্দ কাকে বলে?
উ:- যে ছন্দে চারটি চরনের অক্ষর সংখ্যা আলাদা আলাদা হয়, তাকে বিষবৃত্তছন্দ বলে-
“ভিন্নচিহ্ন চতুষ্পাদং বিষমং পরিকীর্তিতম্।”
যেমন- উদগ্রাতা।
১২) জাতি কাকে বলে?
উ:- ‘জাতির্মাত্রা কৃতা ভবেৎ’। অর্থাৎ যে পদ্যের মাত্রা গননা করে যে ছন্দ নির্নয় করা হয়, তাকে জাতি ছন্দ বলা হয়।
১৩) গণ কাকে বলে?
উ:- গন শব্দটির সাধারন অর্থ হল- সংঘ। তিনটি অক্ষরের সমষ্টিকে গন বলা হয়। এই তিনটি অক্ষরকে নিয়ে ছেদ চিহ্ন দিতে হবে। গন দশটি। যথা- ম, ন, ভ, য, জ, র, স, ত, গ এবং ল।
সংস্কৃত ছন্দে লঘু-গুরু নির্নয়ের চিহ্ন
উ:- গুরু চিহ্ন-( _ )
লঘু চিহ্ন-(U)
- লঘুর চিহ্ন হলো – ‘U’ (প্রাচীন – ‘।‘)
- গুরুর চিহ্ন হলে – ‘-’ (প্রাচীন – ‘S’)
“মস্ত্রিগুরুস্ত্রিলঘুশ্চ ন কারঃ
ভাদিগুরুঃ পুনরাদি লঘুর্যঃ।
জো গুরুমধ্যগতঃ রলমধ্যঃ
সঃ অন্তগুরুঃ কথিতঃ অন্তলঘুস্তঃ।।”
গুরুরেকো গকারস্তু লকারো লঘুরেককঃ
- i) তিনটি বর্ণই গুরু হলে ‘ম’ গণ হয়( _ _ _ )
- ii) তিনটি বর্ণই লঘু হলে ‘ন’ গণ হয়(U U U)
- iii) প্রথম বর্ণটি গুরু এবং শেষের বর্ণ লঘু হলে ‘ভ’ গণ হয়- ( U U)
- iv) প্রথম বর্ণটি লঘু এবং শেষের দুটি বর্ণ গুরু হলে ‘য’ গণ হয়- ( U _ )
- v) মাঝের বর্ণটি গুরু হলে ‘জ’ গণ হয়- (U_U)
- vi) মাঝের বর্ণটি লঘু হলে ‘র’ গণ হয়-( U )
- vii) শেষের বর্ণটি গুরু হলে ‘স’ গণ হয়(UU)
- viii) শেষের বর্ণটি লঘু হলে ‘ত’ গণ হয়(_ _ U)
- ix) শেষের বর্ণটি গুরু হলে ‘গ’ গণ হয়(_)
- x) শেষের বর্ণটি লঘু হলে ‘ল’ গণ হয় (U),
গণগুলির বিবরণ নিম্নরূপ –
- ম – ত্রিগুরু – শ্রীদুর্গা (শ্ র্ ঈ দ্ উ র্ গ্ আ)
- ন – ত্রিলঘু – ভবতি (ভ্ অ ব্ অ ত্ ই)
- ভ – আদিগুরু – খাদতি (খ্ আ দ্ অ ত্ ই)
- য – আদিলঘু – মনীষা (ম্ অ ন্ ঈ ষ্ আ)
- জ – মধ্যগুরু – কলাপ (ক্ অ ল্ আ প্ অ)
- র – মধ্যলঘু – মঙ্গলা (ম্ অ ঙ্ গ্ অ ল্ আ)
- স – অন্ত্যগুরু – কমলা (ক্ অ ম্ অ ল্ আ)
- ত – অন্ত্যলঘু – ৰধ্নাতি (ৰ্ অ ধ্ ন্ আ ত্ ই)
- গ – একটি গুরু – শ্রীঃ (শ্ র্ ঈঃ)
- ল – একটি লঘু – উ (উ)
সংস্কৃত ছন্দে লঘু – গুরু বিচার পদ্ধতি
ছন্দ নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজন লঘু ও গুরুর স্বর বিচার করা। এ বিষয়ে গঙ্গাদাস বলেছেন-
“স্বানুস্বারশ্চ দীর্ঘশ্চ বিসর্গী চ গুরুঃ ভবেৎ।
বর্ণঃ সংযোগপুর্বশ্চ তথা পদান্তগোঅপি বা।।”
অর্থাৎ, হ্রস্বস্বর বিশিষ্ট বর্ণ (অ,ই,উ,ঋ,৯) লঘু হয়। দীর্ঘস্বর যুক্তবর্ণ (আ, ঈ,ঊ,ঋৃ, এ,ঐ, ও,ঔ) বিসর্গ যুক্তবর্ণ অনুস্বারযুক্তবর্ণ এবং সংযুক্ত বর্ণের পূর্ব বর্ণ গুরু হয়। এছাড়াও চরনের শেষবর্ণটি গুরু হয়।
- উদাহরণ-
- i) তামদ্য সংপ্রেষ্য পরিগ্রহীতুঃ।
- ত ত জ গ গ।
- ii) অর্থোহি কন্যাপরকীয় এব।
- ত ত জ গ গ,
- iii) সরসিজমনুবিদ্ধংশৈবলেনাপিরম্যম্
- ন ন ম য জ গ
- iv) মৃগশাবৈঃসমমেধিতো জনঃ
- স ভ র ল গ
- v) মুক্তেষুরশ্মিষুনিরায়তপূর্বকায়া
- ত ভ জ জ গ গ
সংস্কৃত ছন্দে লঘু গুরু নির্নয়ের উপায়
- i) স্বানুস্বারশ্চ -অর্থাৎ অনুস্বারযুক্ত বর্ণ গুরু হয়।
যেমন- কংখংগং । - ii) দীর্ঘশ্চ- অর্থাৎ দীর্ঘস্বরযুক্তবর্ণ(আ,ঈ,ঊ,এ,ঐ,ও,ঔ,ঋৃ) গুরু হয়।
- iii) বিসর্গী চ- অর্থাৎ বিসর্গযুক্ত বর্ণ গুরু হয়।
যেমন- কঃ খঃ গঃ - iv) বর্ণঃ সংযোগপূর্বশ্চ- অর্থাৎ সংযুক্ত বর্ণের পূর্ববর্ণ হয়।
যেমন- কম্বল। - v) পদান্তগঃ অপি বা – অর্থাৎ চরণের শেষ বর্ণটি লঘু হলেও গুরু হয় এবং চরণের শেষে ম্ থাকিলে তার আগের বর্ণটিকে নিয়ে গুরু করতে হবে।
বৈদিক সাহিত্যে কতগুলি সংস্কৃত ছন্দ আছে ও কী কী?
উ:- বৈদিক সাহিত্যে সাতটি ছন্দ প্রধানভাবে লক্ষণীয়।
যথা-
- i) গায়ত্রী- ২৪ অক্ষর বিশিষ্ট ছন্দ।
- ii) উষ্ণিক-২৮ অক্ষর বিশিষ্ট ছন্দ।
- iii) অনুষ্টুপ্- ৩২ অক্ষরবিশিষ্ট ছন্দ।
- iv) বৃহতী – ৩৬ অক্ষরবিশিষ্ট ছন্দ।
- v) পঙক্তি – ৪০ অক্ষরবিশিষ্ট ছন্দ।
- vi) ত্রিষ্টুপ্ – ৪৪ অক্ষরবিশিষ্ট ছন্দ।
- vii) জগতী- ৪৮ অক্ষরবিশিষ্ট ছন্দ।
সংস্কৃত ছন্দের নাম ও অক্ষর সংখ্যা :-
- i) ১১ অক্ষরের ছন্দ – ইন্দ্রবজ্রা, উপেন্দ্রবজ্রা, উপজাতি, রথোদ্ধতা।
- ii) ১২ অক্ষরের ছন্দ-বংশস্থবিল, দ্রুতবিলম্বিত।
- iii) ১৪ অক্ষরের ছন্দ-বসন্ততিলক,
- iv) ১৫ অক্ষরের ছন্দ-মালিনী,
- v) ১৭অক্ষরের ছন্দ- শিখরিনী,মন্দাক্রান্তা।
- vi) ১৯ অক্ষরের ছন্দ- শার্দূলবিক্রীড়িত।
- vii) ২১ অক্ষরের ছন্দ- স্রগ্ধরা।
অক্ষর | ছন্দের নাম | লক্ষণ | গণ | যতি |
১১ | ইন্দ্রবজ্রা | স্যাদিন্দ্রবজ্রা যদি তৌ জগৌ গঃ | ত-ত-জ-গ-গ | পাদান্তে |
১১ | উপেন্দ্রবজ্রা | উপেন্দ্রবজ্রা প্রথমে লঘৌ সা | জ-ত-জ-গ-গ | পাদান্তে |
১১ | শালিনী | মাত্তৌ গৌ চেচ্ছালিনী বেদলোকৈঃ | ম-ত-ত-গ-গ | বেদ-৪, লোক-৭ (প্রথমে চতুর্থ ও পরবর্তী সপ্তম অর্থাৎ একাদশতম অক্ষরের পর ) |
১১ | রথোদ্ধতা | রাৎ পরৈর্নরলগৈঃ রথোদ্ধতা | র-ন-র-ল-গ | পাদান্তে |
১২ | তোটকম্ | বদ তোটকমব্ধিসকারযুতম্ | স-স-স-স | পাদান্তে |
১২ | বংশস্থবিলম্ | বদন্তি বংশস্থবিলং জতৌ জরৌ | জ-ত-জ-র | পাদান্তে |
১২ | দ্রুতবিলম্বিতম্ | দ্রুতবিলম্বিতমাহ নভৌ ভরৌ | ন-ভ-ভ-র | পাদান্তে |
১২ | ভুজঙ্গপ্রয়াতম্ | ভুজঙ্গপ্রয়াতং চতুর্ভির্যকারৈঃ | য-য-য-য | পাদান্তে |
১৩ | প্রহর্ষিণী | ত্র্যাশাভির্মনজরগাঃ প্রহর্ষিণীয়ম্ | ম-ন-জ-র-গ | ত্রি-৩, আশা-১০ (প্রথমে তৃতীয় ও পরবর্তী দশম অর্থাৎ ত্রয়োদশতম অক্ষরের পর যতি) |
১৩ | রুচিরা | জভৌ সজৌ গিতি রুচিরা চতুর্গ্রহৈঃ | জ-ভ-স-জ-গ | চতুঃ-৪, গ্রহ-৯ (প্রথমে চতুর্থ ও পরবর্তী নবম অর্থাৎ ত্রয়োদশতম অক্ষরের পর যতি) |
১৪ | বসন্ততিলকম্ | জ্ঞেয়ং বসন্ততিলকং তভজা জগৌ গঃ | ত-ভ-জ-জ-গ-গ | পাদান্তে |
১৫ | মালিনী | ননমযযযুতেয়ং মালিনী ভোগিলোকৈঃ | ন-ন-ম-য-য | ভোগি =সাপ – ৮, লোক-৭ (প্রথমে অষ্টম ও পরবর্তী সপ্তম অর্থাৎ পঞ্চদশতম অক্ষরের পর যতি) |
১৭ | মন্দাক্রান্তা | মন্দাক্রান্তাম্বুধিরসনগৈর্মো ভনৌ তৌ গযুগ্মম্ | ম-ভ-ন-ত-ত-গ-গ | অম্বুধি=সাগর-৪,রস-৬, নগ-৭ (প্রথমে চতুর্থ, পরবর্তী ষষ্ঠ অর্থাৎ দশম ও পরবর্তী সপ্তম অর্থাৎ সপ্তদশতম অক্ষরের পর যতি) |
১৭ | শিখরিণী | রসৈঃ রুদ্রৈশ্ছিন্না যমনসভলাগঃ শিখরিণী | য-ম-ন-স-ভ-ল-গ | রস-৬, রুদ্র-১১ (প্রথমে ষষ্ঠ ও পরবর্তী একাদশ অর্থাৎ সপ্তদশতম অক্ষরের পর যতি) |
১৭ | হরিণী | নসমরসলাগঃ ষড্-বেদৈর্হয়ৈর্হরিণী মতা | ন-স-ম-র-স-ল-গ | ষড্-৬, বেদ-৪, হয়=ঘোড়া-৭ (প্রথমে ষষ্ঠ, পরবর্তী চতুর্থ অর্থাৎ দশম ও পরবর্তী সপ্তম অর্থাৎ সপ্তদশতম অক্ষরের পর যতি) |
১৯ | শার্দূলবিক্রীড়িতম্ | সূর্যাশ্বৈর্মসজস্ততাঃ সগুরবঃ শার্দূলবিক্রীড়িতম্ | ম-স-জ-স-ত-ত-গ | সূর্য-১২, অশ্ব-৭ (প্রথমে দ্বাদশ ও পরবর্তী সপ্তম অর্থাৎ ঊনবিংশতিতম অক্ষরের পর যতি) |
২১ | স্রগ্ধরা | ম্রভ্নৈর্যানাং ত্রয়েণ ত্রিমুনিযতিয়ুতা স্রগ্ধরা কীর্তিতেয়ম্ | ম-র-ভ-ন-য-য-য | ত্রিমুনি-৭,৭,৭, (প্রতি সপ্তমাক্ষরে যতি হয় অর্থাৎ প্রথমে সপ্তম তারপর চতুর্দশতম তারপর একবিংশতিতম অক্ষরের পর যতি) |
সংস্কৃত ছন্দের উদাহরণ
উদাহরণ | |
---|---|
ইন্দ্রবজ্রা ছন্দ | অর্থো হি কন্যা পরকীয় এব তামদ্য সম্প্রেষ্য পরিগ্রহীতুঃ। জাতো মমায়ং বিশদঃ প্রকামং প্রত্যর্পিতন্যাস ইবান্তরাত্মা।। |
উপেন্দ্রবজ্রা ছন্দ | স দৈবসম্পন্নবপূ রণেষুস দৈব সম্পন্নবপূ রণেষু।ম হোদধেস্তারি মহানিতান্ত- মহোদধেস্তারি মহানিতান্তম্।। |
শালিনী ছন্দ | সা নিন্দন্তী স্বানি ভাগ্যানি বালাৰাহূৎক্ষেপং ক্রন্দিতুং চ প্রবৃত্তা। স্ত্রীসংস্থানং চাপ্সরতীর্থমারা-দুৎক্ষিপ্যৈনাং জ্যোতিরেকং জগাম্।। |
রথোদ্ধতা ছন্দ | এবমাশ্রমবিরুদ্ধবৃত্তিনাসংযমঃ কিমিতি জন্মতস্ত্বয়া। সত্ত্বসংশ্রয়সুখো’পি দূষ্যতেকৃষ্ণসর্পশিশুনেব চন্দনম্।। |
তোটকম্ ছন্দ | প্রভুমীশমনীশমশেষগুণংগুণহীনমহীশগরাভরণম্। রণনির্জিতদুর্জয়দৈত্যপুরংপ্রণমামি শিবং শিবকল্পতরুম্।। |
বংশস্থবিলম্ ছন্দ | শ্রিয়ঃ কুরূণামধিপস্য পালনীংপ্রজাসু বৃত্তিং যমযুঙ্ক্ত বেদিতুম্। স বর্ণিলিঙ্গী বিদিতঃ সমাযযৌযুধিষ্ঠিরং দ্বৈতবনে বনেচরঃ।। |
দ্রুতবিলম্বিতম্ ছন্দ | অভিমুখে ময়ি সংহৃতমীক্ষিতংহসিতমন্যনিমিত্তকৃতোদয়ম্। বিনয়বারিতবৃত্তিরতস্তয়ান বিবৃতো মদনো ন চ সংবৃতঃ।। |
ভুজঙ্গপ্রয়াতম্ ছন্দ | শরীরং সুরূপং সদা রোগমুক্তংযশশ্চারু চিত্রং ধনং মেরুতুল্যম্। গুরোরঙ্ঘ্রিপদ্মে মনশ্চেন্ন লগ্নংততঃ কিং ততঃ কিং ততঃ কিং ততঃ কিম্।। |
প্রহর্ষিণী ছন্দ | এষ ত্বামভিনবকণ্ঠশোণিতার্থীশার্দূলঃ পশুমিব হন্মি চেষ্টমানম্। আর্তানাং ভয়মপনেতুমাত্তধন্বাদুষ্যন্তস্তব শরণং ভবত্বিদানীম্।। |
রুচিরা ছন্দ | প্রবর্ততাং প্রকৃতিহিতায় পার্থিবঃ সরস্বতী শ্রুতমহতাং মহীয়তাম্। মমাপি চ ক্ষপয়তু নীললোহিতঃ পুনর্ভবং পরিণতশক্তিরাত্মভূঃ।। |
বসন্ততিলকম্ ছন্দ | মুক্তেষু রশ্মিষু নিরায়তপূর্বকায়া নিষ্কম্পচামরশিখা নিভৃতোর্ধ্বকর্ণাঃ। আত্মোদ্ধতৈরপি রজোভিরলঙ্ঘনীয়া ধাবন্ত্যমী মৃগজবাক্ষমযেব রথ্যাঃ।। |
মালিনী ছন্দ | ন খলু ন খলু ৰাণঃ সন্নিপাত্যো’য়মস্মিন্মৃদুনি মৃগশরীরে তূলরাশাবিবাগ্নিঃ। ক্ব ৰত হরিণকাণাং জীবিতং চাতিলোলং ক্ব চ নিশিতনিপাতা বজ্রসারাঃ শরাস্তে।। |
মন্দাক্রান্তা ছন্দ | কশ্চিৎ কান্তাবিরহগুরুণা স্বাধিকারপ্রমত্তঃ শাপেনাস্তংগমিতমহিমা বর্ষভোগ্যেণ ভর্তুঃ। যক্ষশ্চক্রে জনকতনয়াস্নানপুণ্যোদকেষু স্নিগ্ধচ্ছায়াতরুষু বসতিং রামগির্যাশ্রমেষু।। |
শিখরিণী ছন্দ | চলাপাঙ্গাং দৃষ্টিং স্পৃশসি ৰহুশো বেপথুমতীং রহস্যাখ্যায়ীব স্বনসি মৃদু কর্ণান্তিকচরঃ। করৌ ব্যাধুন্বত্যাঃ পিবসি রতিসর্বস্বমধরংবয়ং তত্ত্বান্বেষান্মধুকর হতাস্ত্বং খলু কৃতী।। |
হরিণী ছন্দ | সুতনু হৃদয়াৎ প্রত্যাদেশব্যলীকমপৈতু তেকিমপি মনসঃ সংমাহো মে তদা ৰলবানভূৎ। প্রৰলতমসামেবংপ্রায়াঃ শুভেষু প্রবৃত্তয়ঃ স্রজমপি শিরস্যন্ধঃ ক্ষিপ্তাং ধুনোত্যহিশঙ্কয়া।। |
শার্দূলবিক্রীড়িতম্ ছন্দ | নীবারাঃ শুকগর্ভকোটরমুখভ্রষ্টাস্তরূণামধঃ প্রস্নিগ্ধাঃ ক্বচিদিঙ্গুদীফলভিদঃ সূচ্যন্ত এবোপলাঃ। বিশ্বাসোপগমাদভিন্নগতয়ঃ শব্দং সহন্তে মৃগা- স্তোয়াধারপথাশ্চ বল্কলশিখানিস্যন্দরেখাঙ্কিতাঃ।। |
স্রগ্ধরা ছন্দ | যা সৃষ্টিঃ স্রষ্টুরাদ্যা বহতি বিধিহুতং যা হবির্যা চ হোত্রী যে দ্বে কালং বিধত্তঃ শ্রুতিবিষয়গুণা যা স্থিতা ব্যাপ্য বিশ্বম্। যামাহুঃ সর্বৰীজপ্রকৃতিরিতি যয়া প্রাণিনঃ প্রাণবন্তঃ প্রত্যক্ষাভিঃ প্রপন্নস্তনুভিরবতু বস্তাভিরষ্টাভিরীশঃ।। |
সংস্কৃত ছন্দে যতি চিহ্ন
একটি সম্পূর্ণ শ্লোক সবসময় একশ্বাসে উচ্চারণ করা সম্ভব নয় আবার যেখানে সেখানে শ্বাস ছাড়লে বা গ্রহণ করলে শ্লোকের শ্রুতিমাধুর্য নষ্ট হয়। তাই কোথায় শ্বাস ছাড়তে হবে অর্থাৎ কোথায় জিহ্বার বিশ্রাম হবে তা পূর্বাচার্যরা নির্দিষ্ট করে বলে গেছেন। শ্লোক পূর্বাচার্যদের দ্বারা নির্দিষ্ট জিভের বিশ্রামস্থানকে যতি বলে।
শ্লোকে কোথায় যতি হবে তা যদি বলা না থাকে তাহলে পাদের অন্তে যতি হবে বলে বুঝে নিতে হবে। আর নির্দেশ থাকলে সেই অনুসারে যতি হবে। ছন্দোলক্ষণে অধিকাংশ সময়ই সংখ্যাবাচক শব্দ না দিয়ে সংখ্যাবোধক শব্দ দেওয়া হয়। তাই সংখ্যাবোধক শব্দগুলোরও জ্ঞান থাকা দরকার।
যেমন – চন্দ্র=১, পক্ষ=২, গুণ/নেত্র=৩, জলধি/ বেদ=৪ ইত্যাদি। নীচে তালিকাতে প্রয়োজনানুসারে এগুলি বলা আছে।
মালিনী | ভোগি (৮টি ) লোক (৭ টি) |
শিখরিনী | রস (৬ টি) রুদ্র (১১টি) |
মন্দাক্রান্ত | অম্বুধি ( ৪ টি) রস (৬ টি) নগ ( ৭ টি) |
শার্দূলবিক্রীড়ত | সূর্য (১২টি) অশ্ব ( ৭ টি) |
স্রগ্ধরা | ত্রিমুনি (২১÷ ৩ = ৭) প্রতি সপ্তম অক্ষরের পর যতি বসে। |