গঙ্গার অপর নাম ভাগীরথী হল কেন?

“সুখদায়িনি মাতঃ তব জলমহিমা নিগমে খ্যাত।” এখানে কার কথা বলা হয়েছে? গঙ্গার অপর নাম ভাগীরথী হল কেন?

গঙ্গার অপর নাম ভাগীরথী হল কেন?

  • “সুখদায়িনি মাতঃ তব জলমহিমা নিগমে খ্যাত।” এখানে কার কথা বলা হয়েছে?
  • গঙ্গার অপর নাম ভাগীরথী হল কেন?

উত্তর : শংকরাচার্য বিরচিত “শ্রীগঙ্গাস্তোত্রম্-এ গঙ্গার মহিমা কীর্তন করা হয়েছে। আলোচ্য পাঠ্যাংশে গঙ্গাদেবীর নানা বিশেষণ প্রয়োগ করেছেন কবি ও দার্শনিক শংকরাচার্য। গঙ্গার অপর বিখ্যাত নাম হল ভাগীরথী।

গঙ্গার উৎপত্তি:

গঙ্গার যে ধারা উৎপত্তির পর মুর্শিদাবাদ হয়ে দক্ষিণদিকে প্রবাহিত হয়েছে। মহারাজ ভগীরথ গঙ্গা নদীকে মর্ত্যালোকে এনেছিলেন বলেই গঙ্গার অপর নাম ভাগীরথী হয়েছে।

পৌরাণিক কাহিনি :

রামায়ণ ও মৎস্যপুরাণ থেকে জানা যায় ইক্ষ্বাকু বংশীয় সগর রাজার অধস্তন পঞ্চম পুরুষ হলেন ভগীরথ। তিনি দিলীপের পুত্র। ভগীরথ অষ্টাবক মুনির আশীর্বাদে মাংসপিণ্ড থেকে উত্তম দেহ লাভ করেন। কপিল মুনির অভিশাপে ভস্মীভূত পিতৃপুরুষদের উদ্ধারের জন্য তিনি শিবের তপস্যা করে শিবকে সন্তুষ্ট করেন এবং হিমালয় কন্যা গঙ্গার প্রবল বেগকে ধারণে রাজি করান।

গঙ্গা অতিবেগে মহাদেবের মস্তকের উপর পতিত হলে শিব তাঁকে মস্তকে জটার মধ্যে আবন্ধ করেন। তৎপর ভগীরথের অনুরোধে গঙ্গাকে জটা থেকে সাতটি ধারায় ভূতলে অবতরণ করান। গঙ্গার তিনটি প্রবাহ পূর্বদিকে এবং অন্য তিনটি প্রবাহ পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়। আর একটি প্রবাহ ভগীরথকে অনুসরণ করে চলে। ভগীরথ সেই স্রোতের পথ নির্দেশ করে দিয়েছিলেন বলে এই প্রবাহের নাম হয় ভাগীরথী। ভগীরথ দিব্যরথে আরোহণ করে গঙ্গার সঙ্গে পাতালে যান। সেখানে গঙ্গা সগর সন্তানদের উপর দিয়ে প্রবাহিত হলে তাঁরা মুক্তিলাভ করে স্বর্গে যান।

বর্তমান অবস্থান :

গাড়োয়াল অঞ্চলের প্রবাহিত ধারা হল ভাগীরথী। এটি রামপুরের কিছু উপর হতে গঙ্গার শাখানদী রূপে বহির্ভূত হয়ে হুগলি, কলকাতা হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। ব্রাহ্মণী, ময়ূরাক্ষী, অজয়, বরাকর, দামোদর, রূপনারায়ণ, কংসাবতী প্রভৃতি নদ ও নদী ভাগীরথীতে এসে মিলিত হয়েছে।

Comments