সংস্কৃত গদ‍্যসাহিত‍্য গল্প সাহিত্য শর্ট প্রশ্ন ও উত্তর

Sanskrit Hons and Pass – এর একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ টপিক গদ‍্যসাহিত‍্য সংস্কৃত গল্প সাহিত্য )হতে বিভিন্ন চাকরির ( WBSSC SLST NET SET ) পরীক্ষার প্রস্তুতিমূলক LONG SHORT MCQ NOTES MCQ , Short Descriptive  Type Question and Answer / FREE PDF Download তৈরি করা হয়েছে । গদ‍্যসাহিত‍্য সংস্কৃত গল্প সাহিত্য | WBSSC SLST NET | Sanskrit Story Literature Short Question and Answer

গদ‍্যসাহিত‍্য সংস্কৃত গল্প সাহিত্য

Table of Contents


১) সংস্কৃত গল্প সাহিত্য বলতে কি ধরনের রচনা কে বোঝায়?


উঃ- সাধারণভাবে যা গল্প নামে পরিচিত সংস্কৃত অলংকার শাস্ত্রের তাকে কথা বলা হয।কথা শ্রব্যকাব্যের অন্তর্গত। শ্রব‍্যকাব‍্যের আরেকটি শ্রেণী হলো আখ্যায়িকা। এই কথা লঘু-কথা নামেও পরিচিত

২) সংস্কৃত গল্প সাহিত্য সৃষ্টির কারণ গুলি উল্লেখ কর।


উঃ- পন্ডিতের মতে সংস্কৃত গল্প সাহিত্য সৃষ্টির পেছনে তিনটি কারণ বিদ্যমান-
অবসর যাপন,নিছিক চিত্তবিনোদন, রাজকুমারদের শিক্ষাদান।


৩) সংস্কৃত গল্প সাহিত্যের গল্প গুলি কে কয় ভাগে ভাগ করা যায


উঃ- সংস্কৃত সাহিত্যে গল্প গুলি প্রধানত দুটি ভাগে বিভক্ত
মনুষ‍্যচরিত্র যুক্ত গল্প ও পশুপক্ষীচরিত্রযুক্তগল্প।


৪) গল্প সাহিত্যের সঙ্গে কোন দুটি শাস্ত্রের সম্পর্ক বা যোগ অতি ঘনিষ্ট?

উঃ- সংস্কৃত গল্প সাহিত্যের উদ্দেশ্যের প্রতি লক্ষ্য রাখলে একথা স্পষ্ট বোঝা যায় যে অর্থশাস্ত্র ও নীতিশাস্ত্রের সঙ্গে তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান।

৫) গল্পের চরিত্র রুপে পশুপাখিদের নির্বাচিত করার কারণ কি?

উঃ- সংস্কৃত গল্প সাহিত্যের একটি বৃহৎ অংশ জুড়ে রয়েছে পশুপাখির চরিত্র।এর উদ্দেশ্য ছিল জীবন ও প্রকৃতির বৃহত্তম পরিবেশের সঙ্গে শিশু-কিশোরদের পরিচিতি ও পরিবেশ সম্পর্কে তাদের ধারণা স্বচ্ছ ও অনুভূতির নিবিড় ও মানবিক হয।

৬) সংস্কৃত গল্প সাহিত্যের সঙ্গে অর্থশাস্ত্র ও নীতিশাস্ত্রের নিবিড় যোগ এর কারণ ব্যাখ্যা করো?


উঃ-রাজকার্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে রাজপুত্রদের অর্থ ও নীতিশাস্ত্র সম্পর্কিত শিক্ষালাভ ছিল আবশ্যক। রাজাদের দ্বারা নিযুক্ত ব্রাহ্মণ পণ্ডিতগণ কোমলমতি রাজপুত্রদের গল্পের মাধ্যমে চিত্তাকর্ষক ভাবে অর্থশাস্ত্র ও নীতিশাস্ত্রের জটিল তত্ত্বসমূহ শিক্ষা দিতেন। গল্প সাহিত্যের সঙ্গে অর্থশাস্ত্র ও নীতিশাস্ত্রের ঘনিষ্ট যোগাযোগের এই হলো মূল কারণ

৭) সংস্কৃত গল্প সাহিত্যে গল্পগুলির পরিবেশন রীতি উল্লেখ করো?


উঃ- সুকুমার মতি শিশু-কিশোরদের বোঝার জন্য গল্পগুলি অত্যন্ত সহজ সরল ভাষায় কথিত হয়েছে।গল্পের মূল বক্তব্যের মধ্য দিয়ে লেখকদের যে নীতিকথা পরিবেশন করতে চান, তা সহজ শ্লোকের মাধ্যমে বিবৃত হয়েছে।যা একাধারে চুম্বকের আকারে গল্প এবং তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নীতির স্মারক।


৮) রচনা বা সংকলন কালের দিক থেকে সংস্কৃত গল্প সাহিত্যের গ্রন্থ গুলি কে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায়?প্রতিটি ভাগে কোন কোন গ্রন্থ অন্তর্ভুক্ত হয?

উঃ- রচনা বা সংকলন কালের দিক থেকে সংস্কৃত গল্প সাহিত্যের গ্রন্থ গুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়।কালিদাস-পূর্ব এবং কালিদাস -পরবর্তী।
কালিদাস পূর্বভাগের অন্তর্ভুক্ত হলো পঞ্চতন্ত্র এবং বৃহৎ কথা।আর কালিদাস পরবর্তী ভাগের অন্তর্ভুক্ত হলো বেতাল পঞ্চবিংশতি, সিংহাসনদ্বাত্রিংশিকা,হিতোপদেশ প্রভৃতি গ্রন্থ।


৯) সংস্কৃত সাহিত্যের প্রাচীন কথা বা গল্পগ্রন্থ কি সেটি কার রচনা?


উঃ- সংস্কৃত সাহিত্যের প্রাচীনতম কথা বা গল্পগ্রন্থ হল পঞ্চতন্ত্র।কিন্তু মূল পঞ্চতন্ত্র বর্তমানে লুপ্ত।
বিষ্ণুশর্মা নামে জনৈক ব্রাহ্মণ পণ্ডিত এর রচয়িতারূপে প্রচলিত।

১০) প্রচার বাহুল্যের দিক থেকে পঞ্চতন্ত্র পৃথিবীর কোন গ্রন্থের সঙ্গে তুলনীয?


উঃ- প্রচার বাহুল্যের দিক থেকে পঞ্চতন্ত্র বিশ্বসাহিত্যে দ্বিতীয় স্থানের অধিকারী এবং এর সঙ্গে বাইবেল তুলনীয়।বাইবেলের পর পৃথিবীতে এত বহুল প্রচারিত গ্রন্থ আর নেই।

গদ‍্যসাহিত‍্য সংস্কৃত গল্প সাহিত্য


১১) পঞ্চতন্ত্র কতগুলি ভাষায় কত সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে?


উঃ- বিশ্বকর্মা রচিত গল্পগ্রন্থ পঞ্চতন্ত্র পৃথিবীর প্রায় 50 টি ভাষায়,দুশোর বেশি সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে

১২) পঞ্চতন্ত্রের রচনাকাল উল্লেখ করো?


উঃ- বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে বিদ্বজন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকের শেষভাগ থেকে পঞ্চম শতকের প্রথম ভাগ এর মধ্যে পঞ্চতন্ত্র রচিত হয়েছে।পঞ্চতন্ত্রের কালবিষয়ে hertel বিস্তৃত,তথ‍্যবহুল ও পান্ডিত‍্যপূর্ণ আলোচনা করেছেন।তিনি মনে করেন পঞ্চতন্ত্র খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতকে কিংবা দ্বিতীয় শতকে রচিত হয়েছে।

১৩) পঞ্চতন্ত্র খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের পূর্বে রচিত হয়েছিল তার প্রমাণ কি?


উঃ- খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের প্রথমার্ধে পঞ্চতন্ত্রের একটি পহলবী ভাষার অনুবাদ গ্রন্থ পাওয়া যায়।এই অনুবাদ করেন বার্জো নামক জনৈক আরবী হাকিম।এই অনুবাদটি করটক দমনক নামে অভিহিত।
তারপর ঐ পহলবী অনুবাদ থেকে বুদ্ নামক জনৈক ফারসী খ্রিস্টান পঞ্চতন্ত্রের একটি সিরীয় ভাষার অনুবাদ প্রকাশ করেন এবং তারা” কালিলগ্ উ অদমনগ ‘নামে পরিচিত এই দুটি তথ্য প্রমাণ করে যে পঞ্চতন্ত্র ষষ্ঠ খ্রিস্টাব্দের পূর্বে রচিত হয়েছিল


১৪) পঞ্চতন্ত্র গ্রন্থ রচনার প্রেক্ষাপট আলোচনা করো?


উঃ- পঞ্চতন্ত্র গ্রন্থের কথামুখ ভূমিকা থেকে জানা যায় যে দাক্ষিণাত্যের মহিলারোপ‍্য নগরের রাজা অমরশক্তির জড়বুদ্ধিসম্পন্ন পুত্রদের শিক্ষার জন্য বিষ্ণুশর্মা নামক কোনো এক ব্রাহ্মণ গ্রন্থ রচনা করেন।

১৫) পঞ্চতন্ত্র গ্রন্থটি রচনা স্থান নির্ণয় করো?


উঃ- পঞ্চতন্ত্রের কথামুখ অংশে বর্ণিত রাজা অমর শক্তি ও লেখক বিষ্ণুরশর্মার ঐতিহাসিকত্ব নিণীত হয়নি। ইতিহাসে তাদের নাম পাওয়া যায় না।কিন্তু একথা প্রমাণিত যে পঞ্চতন্ত্রের কথা মুখে কথিত মহিলারোপ‍্য দক্ষিণাত্যের অন্তর্গত দাক্ষিণাত্যকেই পঞ্চতন্ত্রের রচনাস্থান রূপে নির্দিষ্ট করা যায়।

১৬) লুপ্ত মূল পঞ্চতন্ত্রের কতগুলি সংস্করণ হয়েছিল?

উঃ- মূল পঞ্চতন্ত্র গ্রন্থটি লুপ্ত।তাকে অবলম্বন করে চারটি সংস্করণ হয়েছিল। তার মধ্যে একটি বাদে সবগুলি লুপ্ত। সেই সংস্করন গুলি নিম্নরূপ-
i) তন্ত্রাখ‍্যায়িকা(কাশ্মীরীয় সংস্করন)
ii) উত্তর-পশ্চিমী সংস্করণ( লুপ্ত)
iii) দক্ষিণী সংস্করণ( লুপ্ত)
iv) পহলবী সংস্করন (লুপ্ত)।


১৭) মূল পঞ্চতন্ত্র অবলম্বনে রচিত তন্ত্রা আখ্যায়িকা গ্রন্থটির কয়টি সংস্করণ পাওয়া যায?

উঃ- মূল পঞ্চতন্ত্র অবলম্বনে রচিত তন্ত্রা আখ্যায়িকা গ্রন্থের দুটি সংস্করণ পাওয়া যায় i)পূর্ণভদ্র প্রনীত জৈন সংস্করন
ii)ক্ষুদ্রাকার জৈন সংস্করন।


১৮) পঞ্চতন্ত্র এর উত্তর পশ্চিমী সংস্করণ অবলম্বনে কয়টি ও কি কি গ্রন্থ রচিত হয়েছে?

উঃ- পঞ্চতন্ত্রের উত্তর-পশ্চিমী সংস্করণ অবলম্বনে মোট চারটি গ্রন্থ রচিত হয়েছিল
i) বৃহৎকথা গুনাঢ‍্য রচিত(লুপ্ত)
ii) শ্লোক সংগ্রহ বুদ্ধ স্বামী
iii) বৃহৎকথামঞ্জুরি ক্ষেমেন্দ্র
iv) কথাসরিৎসাগর সোমদেবভট্ট।


১৯) পঞ্চতন্ত্রের দক্ষিণী সংস্করন অবলম্বনে কি কি গ্রন্থ রচিত হয়েছিল?


উঃ- পঞ্চতন্ত্র এর দক্ষিণী সংস্করণ অবলম্বনে দুটি গ্রন্থ রচিত হয়েছিল। কিন্তু দক্ষিণী সংস্করণটি লুপ্ত।i)নেপালি সংস্করণ এটি তন্ত্রাখ‍্যান নামে পরিচিত।
ii) হিতোপদেশ নারায়ণ শর্মা (বঙ্গীয় সংস্করণ)।


২০) পঞ্চতন্ত্রের কাশ্মিরী সংস্করণ এর মধ্যে কোন গ্রন্থটি বেশি মূলানুগ?এর রচনাকাল উল্লেখ কর?

উঃ- পঞ্চতন্ত্র এর কাশ্মীরি সংস্করণে মধ্যে তন্ত্রা আখ্যায়িকা সবচেয়ে বেশি মুলানুগ।
মূল পঞ্চতন্ত্রের ভাষাকে তন্ত্রাখ‍্যায়িকা যতটা ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করেছে পঞ্চতন্ত্রের কোনো পরবর্তী সংস্করণ তত পরিমাণে করেনি।
আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় চতুর্থ শতকে রচিত হয়েছিল।

২১) পঞ্চতন্ত্র এর পরবর্তী সংস্করণ গুলির মধ্যে কোন বা কোন কোন সংস্করণ গুলি অধিকতর মূলানুগ?


উঃ- পঞ্চতন্ত্রের পরবর্তী সংস্করণের কারের মধ্যে কাশ্মীরি ও দক্ষিণ ভারতীয় সংস্করণ অধিকতর মূলানুগ


২২)তন্ত্র শব্দের অর্থ কি পঞ্চম তন্ত্র নামের অর্থ কি?


উঃ- তন্ত্র শব্দটি বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হতে দেখা যায
অমরকোষ এর বলা হয়েছে তন্ত্র প্রধান ও সিদ্ধান্ত অর্থে ব্যবহৃত হয় এখানে তন্ত্র শব্দের অর্থ পরিচ্ছেদ বা অধ্যায। অতএব পঞ্চতন্ত্র শব্দের অর্থ পাঁচটি তন্ত্র বা অধ্যায়ের সমাহার।

২৩) পঞ্চতন্ত্র এর পাঁচটি তন্ত্রের নাম উল্লেখ করো

উঃ- পঞ্চতন্ত্র গ্রন্থে যে পাঁচটি তন্ত্র আছে সেগুলি যথাক্রমে – মিত্রভেদঃ, মিত্র প্রাপ্তিঃ বা মিত্রলাভঃ সন্ধি বিগ্রহ বা কাকোলূকীয়ম্, লব্ধপ্রনাশঃ এবং অপরীক্ষিতকারকম্। স্বয়ং বিষ্ণুশর্মা কথামুখে এ কথা বলেছেন- তন্ত্রৈঃ পঞ্চভিরেতচ্চকার সুমনোহরং কাব‍্যং।

সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাসের অন্যান্য ছোট প্রশ্ন ও উত্তর গুলি নিচে দেখুন


২৪) পঞ্চতন্ত্রে গল্প বলার যে রীতিটি অনুসৃত হয়েছে তা বিবৃত করো?

উঃ- পঞ্চতন্ত্রের পাঁচটি তন্ত্র বা বিভাগে এক একটি স্বয়ংপূর্ণ গল্প বর্ণিত হয়েছে এবং এই পাঁচটি বিভাগের পাঁচটি গল্প মিলিত করে একটি বড় কাহিনী পাওয়া যায়।আবার প্রত্যেকটি বিভাগের মধ্যে কয়েকটি ছোট ছোট গল্প আছে সেগুলি অখন্ড নিটোল। আবার ছোট ছোট গল্পগুলি যোজনা করে প্রত‍্যেক বিভাগে একটি করে বড় গল্পের আস্বাদ পাওয়া যায় উল্লেখ্য যে রবীন্দ্রনাথের চতুরঙ্গ উপন্যাসে এই রীতি অনুসৃত হয়েছে।


২৫) পঞ্চতন্ত্র এর উত্তর পশ্চিমী সংস্করণ অবলম্বনে রচিত সর্ববৃহৎ ও প্রাচীন গল্পগ্রন্থটির নাম তার রচয়িতার নাম সহ উল্লেখ করো?


উঃ- পঞ্চতন্ত্র এর উত্তর-পশ্চিম সংস্করণ অবলম্বনে রচিত সর্ববৃহৎ ও প্রাচীন গল্পগ্রন্থ বৃহৎকথা।
বৃহৎ কথা গ্রন্থের লেখক হলেন গুনাঢ‍্য।


২৬) গুনাঢ‍্যের বৃহৎকথা কোন ভাষায় কত শ্লোকে রচিত?


উঃ- গুনাঢ্য রচিত বৃহৎকথা পৈশাচী প্রাকৃত ভাষায় রচিত।
বৃহৎকথা গ্রন্থে মোট সাত লক্ষ‍্য শ্লোক আছে। কিন্তু গ্রন্থটি বর্তমানে লুপ্ত।

২৭) গুনাঢ‍্যের কাল এবং পৃষ্ঠপোষক রাজার নাম উল্লেখ করো?


উঃ- গুনাঢ‍্যের কাল আনুমানিক প্রথম শতাব্দী। গুনাঢ‍্য সম্ভবত সাতবাহন রাজ হালের পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেছিলেন সাতবাহন বংশের রাজত্বকালে প্রাকৃত সাহিত্যের প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছিল।


২৮) গুনাঢ‍্যের বৃহৎকথার বিপুল জনপ্রিয়তার কারণ কি?


উঃ- পঞ্চতন্ত্র লুপ্ত হয়েছিল।তার গল্প গুলির মধ্যে অনেক গল্প বৃহৎকথায় রক্ষিত হয়েছিল প্রাচীনকালে গল্প সাহিত্যের এত বড় ভান্ডার আর ছিলনা বৃহৎকথা ছাড়া তাছাড়া গল্পগুলি সাধারণ মানুষের বোধ‍্য প্রাকৃত ভাষায় লেখা হয়েছিল তাই দেখা যায় যে প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যে রামায়ণ ও মহাভারতের পর বৃহৎকথা সর্বাধিক জনপ্রিয় ও মর্যাদা মন্ডিত গ্রন্থ।


২৯) পঞ্চতন্ত্র এর পাঁচটি তন্ত্র বা অধ্যায়ের প্রতিটিতে গল্পের সংখ্যা উল্লেখ করো?

উঃ- পঞ্চতন্ত্রম্ এর মিত্রভেদঃ প্রভৃতি পাঁচটি তন্ত্রে গল্পের সংখ্যা নিম্নরূপঃ-
i)মিত্রভেদঃ -মোটগল্প-২১(প্রস্তাবনা কথাবাদে)
ii) মিত্রপ্রাপ্তিঃ বা মিত্রলাভ মোটগল্প-৬।প্রস্তাবনা কথা বাদে
iii) কাকোলূকীয়ম্ বা সন্ধিবিগ‍্রহ- মোটগল্প ১৩ প্রস্তাবনা কথাবাদে।
iv) লব্ধপ্রনাশঃ মোটগল্প-১৭ প্রস্তাবনা কথাবাদে
v) অপরীক্ষিতকারকম্- মোটগল্প ১৪ প্রস্তাবনা কথাবাদে।


৩০) বৃহৎ কথার লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য কি?

উঃ- প্রাকৃত আলংকারিক হেমচন্দ্রের কাব‍্যানুশাসনম্ গ্রন্থে বৃহৎকথার কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখিত হয়েছে সেগুলো নিম্নরূপ
iমূল কাহিনী উদয়ন বাসবদত্তা ও নরবাহন দত্তকে কেন্দ্র করে গঠিত
iiতন্ত্র শাস্ত্রের মতো এই কাহিনী ও শিব পার্বতীর কথোপকথনের আকারের বিবৃত iii গল্পগুলি খুবই চিত্তকর্ষক
iv প্রনয় ও শৃঙ্গার প্রধান কাহিনীর বাহুল‍্য।
v পরিচ্ছেদগুলি লম্ভ নামে পরিচিত।

গদ‍্যসাহিত‍্য সংস্কৃত গল্প সাহিত্য

৩১) বৃহৎকথা কাহিনী অবলম্বনে সংস্কৃত সাহিত্যে রচিত গ্রন্থ সমূহের পরিচয় দাও?


উঃ- প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যের বৃহৎকথা অত্যন্ত জনপ্রিয় গ্রন্থ ছিল আর এই গ্রন্থের বহু কাহিনী অবলম্বনে সংস্কৃতে অসংখ্য কাব্যনাট্যকাদি রচিত হয়েছে যেমন ক্ষেমেন্দ্র বৃহৎ কথা মঞ্জুরী, সন্দেহর তীর কথাসরিৎসাগর বুদ্ধস্বামী রচিত বৃহৎকথা শ্লোক সংগ্রহ, দন্ডী রচিত দশকুমারচরিতম্,বানভট্ট রচিত কাদম্বরী, ধনপাল রচিত তিলকমঞ্জরী, সুবন্ধু রচিত বাসবদত্তা, ভাস রচিত স্বপ্নবাসবদত্তম্, প্রতিজ্ঞাযৌগন্ধরায়ণ, সোমদেব রচিত যশস্তিলকচম্পূ, শ্রীহর্ষ রচিত রত্নাবলী, প্রিয়দর্শিকা প্রভৃতি।

৩২) লুপ্ত বৃহৎকথা অবলম্বনে রচিত কোন তিনটি মূল গ্রন্থ প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল?


উঃ- গুনাঢ‍্যের বৃহৎকথা লুপ্ত হলেও তাকে অবলম্বন করে রচিত তিনটি গ্রন্থ অধিক প্রসিদ্ধিলাভ করেছিল। সেই তিনটি গ্রন্থ হল- বুদ্ধস্বামীর বৃহৎকথাশ্লোকসংগ্রহ, ক্ষেমেন্দ্রর বৃহৎকথামঞ্জরী, সোমদেবের কথাসরিৎসাগর- উক্ত তিনটি গ্রন্থই সংস্কৃত ভাষায় রচিত।

৩৩) বুদ্ধ স্বামী রচিত বৃহৎকথাশ্লোকসংগ্রহ গ্রন্থটির রচনাকাল উল্লেখ করো। এতে কত সর্গ এবং কত শ্লোক আছে?


উঃ- পণ্ডিতদের অনুমান বুদ্ধস্বামী রচিত বৃহৎকথাশ্লোকসংগ্রহঃ গ্রন্থটি খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম নবম শতাব্দীতে রচিত হয়েছে।
বৃহৎকথা শ্লোক সংগ্রহ সম্পূর্ণ পাওয়া যায় না। আঠাশটি সর্গে ৪৫৩৯ শ্লোক পর্যন্ত এখন লভ‍্য। পণ্ডিতদের অনুমান এখানে 25 হাজার শ্লোক ছিল।


৩৪) ক্ষেমেন্দ্র রচিত বৃহৎ কথা মঞ্জুরি কয়টি পরিচ্ছেদে বিভক্ত? পরিচ্ছেদগুলি কি নামে চিহ্নিত গ্রন্থটি কি জাতীয় রচনা?


উঃ- ক্ষেমেন্দ্রের বৃহৎ কথা মঞ্জুরি আঠারোটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত।তার গ্রন্থের নাম মঞ্জরি যুক্ত বলে পরিচ্ছেদগুলি গুচ্ছ নামে চিহ্নিত। বৃহৎ কথা মঞ্জুরী সংস্কৃত গদ‍্যে রচিত সারসংক্ষেপমূলক রচনা।

৩৫) কথাসরিৎসাগর কথাটির অর্থ কি কথাসরিৎসাগর গ্রন্থের রচনাকাল উল্লেখ করো?


উঃ- কথাসরিৎসাগর কথাটির অর্থ বা কাহিনীও গল্পরূপ সরিৎ অর্থাৎ নদীসমূহের, সাগর অর্থাৎ সমুদ্র।সমুদ্রের যেমন বহু নদী এসে মিশে তেমনি সেখানে অসংখ্য কাহিনীর সমাবেশ আছে। কথাসরিৎসাগর গ্রন্থের রচনাকাল ১০৬৩-১০৮১ খ্রিস্টাব্দ।


৩৬) কথাসরিৎসাগর গ্রন্থের রচনার পটভূমি উল্লেখ করো অথবা কি উদ্দেশ্যে কথাসরিৎসাগর গ্রন্থটি রচিত হয়েছিল?


উঃ- জানা যায় যে কাশ্মীরের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে বিশেষত তার নীতি বোধহীন সন্তান কলসের দুর্ব্যবহারে দুঃখিত রানী সূর্যমতীকে অন্যমনস্ক করার জন্য সোমদেব কথাসরিৎসাগর গ্রন্থটি রচনা করেন।


৩৭) কথাসরিৎসাগর গ্রন্থের গঠন ব্যাখ্যা করো?


উঃ- কথাসরিৎসাগরে ১৮ টি লম্বক,১২৪ টি তরঙ্গ, এবং মোট ২৪হাজার শ্লোক আছে।


৩৮) বেতাল পঞ্চবিংশতি কি ধরনের রচনা এর প্রাচীনতম রূপটি কোথায় কিভাবে সংরক্ষিত হয়েছে?


উঃ- বেতাল পঞ্চবিংশতি পঁচিশটি লোককথার একটি অনবদ্য সংকলন গ্রন্।থ বেতাল পঞ্চবিংশতি প্রাচীনতমরূপটি ক্ষেমেন্দ্রের বৃহৎকথামঞ্জুরি ও সোমদেবের কথাসরিৎসাগরে পদ‍্যের বা কবিতার আকারে সংরক্ষিত।


৩৯) বেতাল পঞ্চবিংশতি গ্রন্থের আর কি কি সংস্করণ পাওয়া যায?

উঃ- বেতাল পঞ্চবিংশতি গ্রন্থের আরও তিনটি সংস্করণ পাওয়া যায- জম্ভলদত্ত রচিত গদ‍্যাত্মক সংস্করন,জনৈক বল্লভদাস কৃত সমগ্র কাহিনীর সংক্ষিপ্ত সংকলন,বেঙ্কটভট্ট রচিত বেতাল পঞ্চবিংশতি।(অপেক্ষাকৃত পরবর্তীকালের রচনা।)

৪০) বেতাল পঞ্চবিংশতি গ্রন্থটি কার রচনা গ্রন্থটির রচনা কার উল্লেখ করো?

উঃ- গদ্যপদ্য মিশ্রিত বেতাল পঞ্চবিংশতি নামক গ্রন্থটি জনৈক শিবদাস কর্তৃক রচিত। পন্ডিতদের অনুমান, গ্রন্থটি দ্বাদশ খৃষ্টাব্দের পরবর্তীকালের রচনা।

৪১) সমগ্র বেতাল কাহিনী ক্ষেমেন্দ্রের বৃহৎ কথা মঞ্জুরি ও সোমদেবের কথাসরিৎসাগরে কত শ্লোকে বিবৃত?

গদ‍্যসাহিত‍্য সংস্কৃত গল্প সাহিত্য


উঃ- সমগ্র বেতাল কাহিনী ক্ষেমেন্দ্রের বৃহৎ কথা মঞ্জুরিতে ১২২০ শ্লোকে  এবং সোমদেবের কথাসরিৎসাগরে  ২৯১৫ শ্লোকে বিবৃত আছে।


৪২) রাজা বিক্রমাদিত্য কে অবলম্বন করে সংস্কৃত সাহিত্যে বেতাল পঞ্চবিংশতি ছাড়া অন্য কোন গল্পগ্রন্থ আছে কি?

উঃ- রাজা বিক্রমাদিত্য কে অবলম্বন করে সংস্কৃত সাহিত্যে বেতাল পঞ্চবিংশতি ছাড়া অন্য একটি জনপ্রিয় গল্প-সংকলন আছে তার নাম সিংহাসন- দ্বাত্রিংশিকা।


৪৩) সিংহাসন দ্বাত্রিংশিকা গ্রন্থটি অন‍্য কি নামে প্রচলিত? কে কোন সময়ের রচনা করেন?

উঃ- সিংহাসন দ্বাত্রিংশিকা বিক্রমার্কচরিতম্ বা বিক্রমচরিতম্ নামেও প্রচলিত।
জৈন লেখক ক্ষেমঙ্কর চতুর্দশ খৃস্টাব্দে এটি রচনা করেন। এটি মহারাষ্ট্রী সংস্করন রূপে প্রচলিত।


৪৪) সিংহাসন দ্বাত্রিংশিকা গ্রন্থের ক্ষেমঙ্করকৃত মহারাষ্ট্রী সংস্করন ছাড়া অন্য সংস্করণ কি পাওয়া যায?

উঃ- সিংহাসন দ্বাত্রিংশিকা গ্রন্থের ক্ষেমঙ্করকৃত মহারাষ্টী সংস্করণ ছাড়া আরও দুটি সংস্করণ পাওয়া যায়-
বররুচি রচিত বঙ্গীয় সংস্করণ(মহারাষ্টীয় সংস্করন অনুসরনে রচিত।
অজ্ঞাতপরিচয় লেখক এর রচিত সংক্ষিপ্ত সংস্করণ।


৪৫) বেতাল পঞ্চবিংশতি গ্রন্থটির এরূপ নামকরণের কারণ কি?


উঃ- রাজা বিক্রমসেন বা ত্রিবিক্রম সেন বা বিক্রমাদিত্যকে এক সন্ন্যাসী প্রতিদিন একটি করে ফল দিতেন।সেই ফলের মধ্যে একটি করে রত্ন থাকতো। প্রতিদানে সন্ন‍্যাসীকে খুশি করার জন্য রাজা একটি গাছে দোদুল‍্যমান একটি মৃতদেহ সন্ন‍্যাসীকে এনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ওই মৃতদেহটিকে বেতাল নামে এক পিশাচ রক্ষা করত।রাজা ওই মৃতদেহ আনতে গেলে সে রাজাকে কতগুলি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে। ওই প্রসঙ্গেই বেতালের পঁচিশটি গল্প বিবৃত হয। তাই গ্রন্থটির নাম বেতাল পঞ্চবিংশতি।

৪৬) সিংহাসন দ্বাত্রিংশিকা গ্রন্থটির এইরূপ নামকরনের কারন কি?


উঃ- রাজা বিক্রমাদিত্য ইন্দ্রের কাছ থেকে যে সিংহাসন জয় করেছিলেন রাজা ভোজ তা পুনরাবিষ্কার করেন বিক্রমের মতো তেজ ও  গুণাবলীর অধিকারী না হলে কোন ব্যক্তির এই সিংহাসনে বসার অধিকার নেই এ বিষয়ে সুনিশ্চিত করার জন্য সিংহাসনে  বত্রিশ টি আত্মা বত্রিশটি মূর্তি বা পুন্ডলিকার আকারে নিবদ্ধ ছিল। যেই রাজা ভোজ সেই সিংহাসনে উপবেশন করতে যাবেন। তখন এক একটি মূর্তি এক একটি গল্প তাঁকে শোনাল। এভাবে সিংহাসনে সন্নিবেশিত 32 টি মূর্তি কর্তৃক 32টি গল্পের সমাহার বলেই গ্রন্থটির নাম সিংহাসন দ্বাত্রিংশিকা। গল্প বলার পর মূর্তিগুলি মুক্তি পায।?


৪৭) চিন্তামণি ভট্ট রচিত গল্প গ্রন্থ টির নাম কি কত খ্রিস্টাব্দে রচিত হয?


উঃ- চিন্তামণি ভট্ট রচিত গল্পগ্রন্থ টির নাম হল শুক সপ্ততিকথা।এটি সবচেয়ে বৃহদাকার সংস্করন।
গ্রন্থটি দ্বাদশ খ্রিস্টাব্দের পরবর্তীকালের রচনা।

৪৮) চিন্তামণি ভট্টের গ্রন্থটি কি মূল রচনা এই রচনা ছাড়া আর অন্য কোন সংস্করণ কি পাওয়া যায?

উঃ- চিন্তামণি ভট্ট কৃত শুকসপ্ততিকথা মূল রচনা নয়। সম্ভবত কোনো একটি প্রাচীন সংস্করণ এর উপর ভিত্তি করে রচিত। মূল রচনাটি লুপ্ত।
চিন্তামনিভট্টকৃত শুকসপ্ততিকথার বৃহৎ সংস্করণ ছাড়াও পূর্ণ ভদ্র রচিত একটি জৈন সংস্করণ এবং দেবদত্ত নামক জৈনক লেখক এর একটি সংক্ষিপ্ত রূপও প্রচলিত। ফলে শুকসপ্ততিকথা গ্রন্থের তিনটি রূপ এখনও প্রচলিত।

৪৯) শুকসপ্ততিকথা গ্রন্থটির এইরূপ নামের তাৎপর্য কি?


উঃ- এইসব গল্প এক শুকপাখির মুখে বিবৃত হয়েছে এক প্রোষিতভর্তৃকা নারী তার স্বামীর অনুপস্থিতিতে অন্য ব্যক্তির প্রতি আসক্ত হয়ে গৃহ ত্যাগ করতে চায় তখন সেই বাড়ির সুখ পাখিটাকে প্রতিদিন একটি করে গল্প বলে ভুলিয়ে রাখে এবং সত্তর দিনে সত্তরটি গল্প বলা হয় তার স্বামীও বাড়ি ফিরে আসে এবং স্ত্রীলোকটি ব্যভিচার থেকে নিবৃত্ত হয়। শুককথিত সত্তরটি গল্পের সমাহার বলে এর নাম শুকসপ্ততিকথা।


৫০) শুকসপ্ততিকথা গ্রন্থের সঙ্গে বিশ্বসাহিত্যের কোন বিখ্যাত গল্পগ্রন্থের সাদৃশ্য বিদ্যমান?


উঃ- ইতালীয় সাহিত্যের প্রসিদ্ধ গল্পগ্রন্থ বোকাচ্চিত্ত ডেকামেরন এর সঙ্গে শুকসপ্ততিকথা গ্রন্থের কয়েকটি গল্পের বিস্ময়কর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায।

৫১)শুকসপ্ততিকথা গ্রন্থের ফার্সি ভাষার অনুবাদটি কি নামে প্রচলিত? কত খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয?


উঃ- শুকসপ্ততিকথা গ্রন্থের ফার্সি ভাষার অনুবাদ তুতিনামা নামে প্রচলিত। খ্রিস্টীয় চতুর্দশ শতকের গোড়ার দিকে অনুবাদ টি প্রকাশিত হয।


৫২) সিংহাসন দ্বাত্রিংশিকা -র অনুসরণে পরবর্তীকালে আর কি কি গ্রন্থ রচিত হয়েছিল?


উঃ- সিংহাসন দ্বাত্রিংশিকা অনুকরণে পরবর্তীকালে কয়েকটি গ্রন্থ রচিত হয়েছিল সেগুলির মধ্যে অনন্ত রচিত বীরচরিতম্, শিবদাস রচিত শালিবাহনচরিতম্ এবং অজ্ঞাতনামা লেখক এর বিক্রমসেনচরিতম্ গ্রন্থগুলি উল্লেখ‍্য।

৫৩) সংস্কৃত সাহিত্যের জনপ্রিয় গল্পগ্রন্থ হিতোপদেশ কার রচনা?গ্রন্থটির রচনা কাল উল্লেখ করো?


উঃ- সংস্কৃত সাহিত্যের জনপ্রিয় গল্প গ্রন্থ হল হিতোপদেশ এর রচয়িতা নারায়ন।এর পৃষ্ঠপোষক ছিলেন রাজা ধবলচন্দ্র।
উত্তর প্রদেশের প্রাপ্ত পুঁথিতে এর প্রতিলিপির তারিখ লেখা রয়েছে 1373 খ্রিস্টাব্দ। অনুমান করা যায় যে মূল গ্রন্থটি তার পূর্বে রচিত হয়েছিল।


৫৪) নারায়ণের হিতোপদেশ কোন মূল গল্পগ্রন্থের উপর আধারিত?এই গ্রন্থটি কোথায় রচিত হয় এবং কোথায় বেশি জনপ্রিয?


উঃ- নারায়ণের হিতোপদেশ বিষ্ণুশর্মাকৃত পঞ্চতন্ত্র গ্রন্থের উপর আধারিত।এই গ্রন্থটি পঞ্চতন্ত্রের গল্প গুলির সর্বশেষ সংস্করণ তবে পঞ্চতন্ত্রের নেই এমন 17 টি নতুন গল্প এখানে সংযোজিত হয়েছে।
হিতোপদেশ বঙ্গদেশে রচিত হয় এবং বঙ্গদেশেই টি সর্বাধিক জনপ্রিয।

৫৫) হিতোপদেশ গ্রন্থের গঠন বিভাগ উল্লেখ করো?


উঃ- হিতোপদেশ গ্রন্থের চারটি ভাগ আছে- মিত্রলাভ মিত্রভেদ সন্ধি ও বিগ্রহ।
পঞ্চতন্ত্র এর তৃতীয় তন্ত্রকে দুটি ভাগে এখানে বিভক্ত করা হয়েছে সন্ধি ও বিগ্রহ পঞ্চতন্ত্র চতুর্থ পর্ব লব্ধপ্রনাশ এখানে গৃহীত হয়নি।

৫৬) হিতোপদেশ গ্রন্থটির লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য কি?


উঃ- পদ‍্যাংশ অপেক্ষা হিতোপদেশের গদ‍্যাংশের রচনা অনেক স্বতঃস্ফূর্ত সাবলীল।বুদ্ধির চকিত দীপ্তি,গল্পের চতুর্দিক পরিবর্তন,তীক্ষ্ন বাস্তবতা বোধ এবং জীবন ও বহু সামাজিক সমস্যার ভাগগম্ভীর, নির্লিপ্ত প্রতিফলন এর কয়েকটি উল্লেখ্য বৈশিষ্ট্য।

৫৭) হিতোপদেশ গ্রন্থের দুটি প্রধান ত্রুটি কি?

উঃ- নারায়ণের হিতোপদেশ গ্রন্থের দুটি প্রধান ত্রুটি হল পদাংশের আধিক্য যার ফলে কাহিনীর গতি হয়েছে শ্লথ হারিয়েছে আকর্ষণ এবং প্রায় প্রতিটি বাক্যের কর্মবাচ্য ব্যবহারের অত্যধিক প্রবণতা।এতে গ্রন্থের পঠন যোগ্যতা অনেকাংশে ব্যাহত হয়েছে

৫৮) কে মৈথিল কোকিল নামে পরিচিত তিনি কার সভাকবি ছিলেন?


উঃ- প্রসিদ্ধ বৈষ্ণব পদাবলী কার বিদ্যাপতি মৈথিল কোকিল নামে পরিচিত ছিলেন
বিদ্যাপতি মিথিলার রাজা শিবসিংহের সভাকবির পদ অলংকৃত করেছিলেন


৫৯) বিদ্যাপতি রচিত গল্প গ্রন্থ টির নাম কি এতে কয়টি গল্প আছে?

উঃ- বিদ্যাপতি রচিত গল্প গ্রন্থটির নাম পুরুষপরীক্ষা। এতে 44 বিভিন্ন স্বাদের গল্প আছে।


৬০) বিদ্যাপতির পুরুষ পরীক্ষা গ্রন্থের গল্প গুলির প্রতিপাদ্য বিষয় কি? গদ‍্যসাহিত‍্য সংস্কৃত গল্প সাহিত্য


উঃ- পঞ্চতন্ত্র ও হিতোপদেশ গ্রন্থের মতো কিছু নীতি উপদেশমূলক ছোট ছোট গল্প কিছু মজাদার কাহিনী এবং কিছু পুরুষোচিত গুণাবলীর প্রশংসামূলক গল্পের সমবায়ে বিদ্যাপতির পুরুষ পরীক্ষা গ্রন্থটি রচিত।

৬১) ভোজপ্রবন্ধ গ্রন্থের লেখকের নাম কি?
কত খৃঃ এটি রচিত হয়?


উঃ- ভোজপ্রবন্ধ গ্রন্থের রচয়িতা বল্লাল বা বল্লভ। গ্রন্থটি আনুমানিক ষোড়শ খৃঃ রচিত হয়।


৬২) ভোজপ্রবন্ধ গ্রন্থের বিষয়বস্তুর পরিচয় দাও।


উঃ- ধারা রাজ্যের প্রসিদ্ধ রাজা ভোজকে কেন্দ্র করে গল্পকার এখানে স্থান ও কালের ঔচিত‍্য লংঘন করে ইতিহাস প্রসিদ্ধ কালিদাস ভবভূতি মাঘ মল্লিনাথ প্রভৃতি ব্যক্তিবর্গ কে তাঁর রাজসভায় এনেছেন। দেখা যায় যে, প্রত‍্যেকে নিজ নিজ কবিত্বগুনে রাজা ভোজকে প্রীতি করে যথাযোগ্য পরিতোষিক লাভ করেন। এই হল ভোজপ্রবন্ধঃ গ্রন্থের বিষয়বস্তু।

৬৩) কথার্নবঃ গ্রন্থটির রচয়িতা কে? এতে কতগুলি গল্প আছে?


উঃ- কথার্নব গল্প গ্রন্থটির রচয়িতা শিবদাস এতে মূর্খ, ভন্ড,ধূর্ত তস্কর প্রভৃতি চরিত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত ৩৫টি গল্প সংকলিত হয়েছে।

৬৪) কথাকোশ বা বৃহৎকথাকোশ গ্রন্থটির লেখক কে গ্রন্থটি গদ‍্যে না পদ‍্যে রচিত এতে কতগুলি কাহিনী বর্ণিত হয়েছে?


উঃ- কথাকোশ বা বৃহৎকথা কোশ গ্রন্থটি রচনা করেন আচার্য হরিষেন।

গ্রন্থটি আদ্যোপান্ত শ্লোকে অর্থাৎ কবিতা রচিত হয়েছে।এতে মোট 157 টি কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।


৬৫) কথাকোশ গ্রন্থটি কত খ্রিস্টাব্দে রচিত? এই গ্রন্থের অন্তর্গত গল্পগুলির চরিত্র কারা?


উঃ- হরিষেনের কথাকোশ গ্রন্থটি ৯৩২ খৃঃ রচিত। কথাকোশঃ এর গল্প গুলির বর্ণিত চরিত্র হলেন চাণক্য। বররুচি প্রভৃতি ইতিহাস প্রসিদ্ধ ব্যক্তিগণ।


৬৬) সংস্কৃত গল্প সাহিত্যের দুটি স্বল্পখ্যাত গল্পগ্রন্থের নাম ও তাদের রচয়িতার নাম উল্লেখ করো?


উঃ- চটিগল্প কেটে দুটি স্বল্পপরিচিত গ্রন্থের নাম প্রবন্ধ চিন্তামণি ও প্রবন্ধ কোষ।
প্রবন্ধচিন্তামনি গ্রন্থের লেখক মেরুতঙ্গ,আর প্রবন্ধকোষঃ গ্রন্থের লেখক রাজশেখর সূরি।

৬৭) প্রবন্ধ চিন্তামণি গ্রন্থটির রচনা কার উল্লেখ কর গ্রন্থটির গঠন ও বিষয়বস্তু বিবৃত করো?


উঃ- প্রবন্ধ চিন্তামণি গ্রন্থ টি ১৩০৬ খৃঃ রচিত হয়েছে।
রচনাটি পাঁচটি খন্ড বা প্রকাশে বিভক্ত। প্রতিটি প্রকাশে রাজা, কবি, সন্ত, বিদ্বান ও বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী বিষয়ক তথ্যাদি আছে


৬৮) সিংহাসন দ্বাত্রিংশিকা গ্রন্থের অনুকরনে রচিত ভরটক দ্বাত্রিংশিকা গ্রন্থে কতগুলি গল্প আছে?ভরটক শব্দের অর্থ কি এর বিষয়বস্তু কি?


উঃ- ভরটক দ্বাত্রিংশিকা গ্রন্থে ৩২ টি গল্প আছে। ভরটক শব্দের অর্থ শৈব সাধু সন্ন‍্যাসী। এখানে শৈব সাধু সন্ন‍্যাসীর ভন্ডামি ও নীতিহীনতার মুখরোচক কাহিনী বিবৃত হয়েছে।


৭০) পন্ডিতপ্রবর ম‍্যাকডোনাল সংস্কৃত সাহিত‍্যের কোন রচনাকে The most original department of Indian literature ( ভারতীয় সাহিত্যের সবচেয়ে মৌলিক বিভাগ )রূপে অভিহিত করেছেন এরূপ বলার কারণ কি?


উঃ- পন্ডিত প্রবর ম‍্যাকডোনেল সংস্কৃত গল্প সাহিত‍্যকে The most original department of Indian literature রূপে অভিহিত করেছেন।
গল্প সাহিত্যেই রচয়িতার প্রতিভা ও শক্তি সর্বাধিক প্রকাশ ঘটেছে।এখানে বাস্তবতাবোধ কৌতুক জীবনবোধ এবং মানবীয় রসের যথার্থ প্রকাশ দেখা যায।

সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাসের অন্যান্য ছোট প্রশ্ন ও উত্তর গুলি নিচে দেখুন

আরো পড়ুন

হিতোপদেশ Click on Picture

Comments