তর্কসংগ্রহ হতে অতিব্যাপ্তি ও অব্যাপ্তির পার্থক্য লিখ ।
অতিব্যাপ্তি ও অব্যাপ্তির পার্থক্য – তর্কসংগ্রহ
উ:- একটি লক্ষণ তখনই গ্রহণযোগ্য হবে যখন সেই লক্ষণ অব্যপ্তি, অতিব্যাপ্তি ও অসম্ভব দোষ বর্জিত হবে। অতিব্যাপ্তি ও অব্যাপ্তি উভয়েই দোষ হলেও এদের মধ্যে কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়-
অতিব্যাপ্তি ও অব্যাপ্তির পার্থক্য
i) আচার্য অন্নংভট্ট অতিব্যাপ্তির লক্ষণ প্রসঙ্গে বলেছেন- ” অলক্ষ্যবৃত্তিত্বমতিব্যাপ্তিঃ”। অর্থাৎ যে পদার্থের লক্ষণ কর্তব্য, তদ্ ভিন্ন পদার্থে অর্থাৎ অলক্ষ্যে বৃত্তি হওয়ায় তাকে অতিব্যাপ্তি বলে।
অপরদিকে অব্যাপ্তির লক্ষণ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে- “লক্ষ্যৈকদেশাবৃত্তিত্বম্ অব্যাপ্তিঃ”। অর্থাৎ লক্ষ্যবস্তুর মাত্র একাংশে বর্তমান থাকলে তাকে অব্যাপ্তি বলা হয়।
ii) অতিব্যাপ্তির উদাহরণ হল- ” গোঃ শৃঙ্গিত্বম্”। অর্থাৎ শৃঙ্গিত্ব বিশিষ্ট যদি গরুর লক্ষণ বলা হয়, তবে অতিব্যাপ্তি দোষ দেখা দেয়। কারণ শৃঙ্গত্ব ছাগল, ভেড়া, মহিষ, হরিণ প্রভৃতি প্রাণীতেও বর্তমান। ফলে লক্ষ্য গরু এবং অলক্ষ্য ছাগল, মহিষ প্রভৃতি প্রাণীতে লক্ষণের ব্যাপ্তি ঘটায় অতিব্যাপ্তি দোষ হয়েছে।
অপরদিকে, অব্যাপ্তির উদাহরণ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে- ” কপিলত্বং গোত্বম্”। অর্থাৎ যদি গরুর লক্ষণ করা হয় ‘কপিলত্বং ‘ অর্থাৎ অব্যাপ্তি দোষ হয়, কারণ কপিলত্ব অর্থাৎ কপিলবর্ণ সমস্ত গরুতে থাকেনা। গরু সাদা, কালো প্রভৃতি বিভিন্ন বর্ণের হয়।
iii) অতিব্যাপ্তির অর্থ হল-” অলক্ষ্যবৃত্তিত্ব”।
অপরদিকে, অব্যাপ্তির অর্থ হল ‘লক্ষ্যবৃত্তিত্ব’।
iv) অতিব্যাপ্তি লক্ষ্যবস্তু ছাড়াও অলক্ষ্যবস্তুতে বিদ্যমান।
কিন্তু অব্যাপ্তি লক্ষ্য বস্তুর মাত্র একাংশে থাকে।