টীকা: হরিবংশম্

সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস হরিবংশম্ সম্পর্কে টীকা আলোচনা করা হল। উচ্চ মাধ্যমিক সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাসে হরিবংশম্ টীকা এই ভাবে লিখতে হবে ।

(টীকা) হরিবংশম্

হরিবংশের পরিচয় দাও।

মহাভারতের “খিল” বা পরিশিষ্ট অংশের নাম হরিবংশ। আঙ্গিক ও রচনারীতির দিক থেকে পুরানের সঙ্গে এর সমজাতীয়তা লক্ষ্য করে পন্ডিতদের মধ্যে কেউ কেউ একে হরিবংশপুরান নামে অভিহিত করেন। এখানে প্রধানভাবে হরি বা কৃষ্ণের জীবন কাহিনী আদোপান্ড বর্ণিত। পন্ডিতদের অনুমান হরিবংশ মহাভারতের চেয়ে অর্বাচীন কালের রচনা।

হরিবংশ মহাভারতের অষ্টাদশ পর্বের অতিরিক্ত অংশ বা খিল পর্বের অন্তর্গত একে আবার হরিবংশ পুরান বলা হয। (ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম বৃত্তান্ত)

হরিবংশ-এর অধ্যায় ও শ্লোক সংখ্যা

হরিবংশ-এ ৩১৮ অধ্যায় ও ১৮০০০ শ্লোক আছে। অন্যমতে হরিবংশের শ্লোকসংখ্যা ১৬৩৭৪।

হরিবংশ-এর কাহিনী কে কাকে শুনিয়েছিলেন ?

মহাভারতের বৃষ্ণি বংশের কথা বলা নেই বলে মহারাজ জন্মেন্জয় মহর্ষি বৈশম্পায়ণের কাছে বৃষ্ণিবংশের ইতিহাস শুনতে চাইলে বৈশম্পায়ণ পুরানের ক্রমে হরিবংশ (অর্থাৎ কৃষ্ণের বংশ ও তাঁর চরিত কথা বর্ণনা করেন।

বিষয়বস্তু:-

এই অংশের প্রবক্তা ব্যাসদেব। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম বৃত্তান্ত এর মূল বিষয়বস্তু তাছাড়া নানা প্রকার স্তব-স্তুতির দ্বারা বিষ্ণুর মহিমা কীর্তন দেখা যায় এর মোট শ্লোক সংখ্যা ১৫৩৭৪টি।

এখানে শ্রীকৃষ্ণকে বিষ্ণুর অবতার রূপে বর্ণনা করে তাঁর মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন দেবতার স্তব, স্তুতি এই অংশে দেখা যায়। এর শ্লোক সংখ্যা ১৬৩৭৪ টি।

হরিবংশের তিনটি পর্ব হল- 

  • (i) হরিবংশ পর্ব,
  • (ii) বিষ্ণুপর্ব এবং
  • (iii) ভবিষ্যপর্ব।

হরিবংশের বিভাগগুলি সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হল

হরিবংশ-এর তিনটি পর্ব – হরিবংশপর্ব, বিষ্ণুপর্ব, ভবিষ্যপর্ব।

হরিবংশের তিনটি পর্বের বিষয়বস্তু


হরিবংশ পর্বের বিষয় হল -পুরানের রীতিতে সৃষ্টি-স্থিতি-বিনাশের কথা কথিত এবং বেণ, পৃথু, ধ্রুব, বিশ্বামিত্র ও চন্দ্রবংশ প্রভৃতির উপাখ্যান বিবৃত। বিষ্ণু পর্বে হরি বা কৃষ্ণের সম্পূর্ণ জীবন বৃত্তান্ত বিবৃত, আর ভবিষ্যপর্বে ভবিষ্যত কালের ভাবী ঘটনার কথা বর্ণিত হয়েছে।

হরিবংশ কয়টি পর্বে বিভক্ত ? পর্বগুলির অধ্যায় সংখ্যা নির্দেশ কর।

হরিবংশ তিনটি পর্বে বিভক্ত – হরিবংশ, বিষ্ণুপর্ব ও ভবিষ্যপর্ব।
হরিবংশে অধ্যায় সংখ্যা-৫৫, বিষ্ণুপর্বে অধ্যায় সংখ্যা- ১২৮, ভবিষ্যপর্বে অধ্যায় সংখ্যা ১৩৫ ।


i) হরিবংশপর্বঃ-

এই পর্বে দেখা যায় রাজা জন্মেঞ্জয় বৈশম্পায়ন এর কাছ থেকে বৃশ্চিক বংশের ইতিহাস শুনতে চাইলে তিনি ক্রমে হরি বংশের বর্ণনা করেন এখানে শ্রীকৃষ্ণকে বিষ্ণুর অবতার রূপে বর্ণনা করা হয়েছে।


ii) বিষ্ণুপর্বঃ-

বিষ্ণু পর্বে বর্ণিত হয়েছে বিষ্ণুরূপি শ্রীকৃষ্ণের জীবন ইতিহাস।


iii) ভবিষ‍্যপর্বঃ-

এই পর্বে ভবিষ্যৎ কালের বর্ণনা করা হয়েছে বিষ্ণুর বিভিন্ন অবতার যেমন বরাহ নৃসিংহ প্রভৃতি বর্ণনা করে বিভিন্ন উপাখ্যান বর্ণিত হয়েছে এই পর্বটি পৌরাণিক কাহিনীর সংকলন।

 উপসংহার:- 

ভাষা ও বিষয়বস্তুর দিক দিয়ে এটি সম্পূর্ণ পুরাণের মতো বা মহাভারতের প্রক্ষিপ্ত অংশ যা একজনের দ্বারা বা এক সময়ের রচনা নয।”হরিবংশম্” কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একজন কবির দ্বারা রচিত হয়নি। এটি মহাভারতের প্রক্ষীপ্ত অংশ। যা পরবর্তীকালে “মহাভারত”-এর সঙ্গে সংযুক্ত হয়।

সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাসের অন্যান্য টীকা গুলি পড়ুন

Join Our Facebook Page

Comments