মহাকবি ভারবি রচিত কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের বনপর্ব হতে ভাবসম্প্রসারণগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল।
কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের বনপর্ব হতে ভাবসম্প্রসারণ
ন হি প্রিয়ং প্রবুক্তমিচ্ছন্তি মৃষা হিতৈষিণঃ।
উঃ- এই জগতের দুই প্রকার মানুষ থাকে। এক হিতকামী এবং অপরটি অহিতকামী। দ্বিতীয় প্রকার মানুষগন নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য মন মুগ্ধ করে প্রিয়বাক্য বলে থাকে। এই জাতীয় মানুষকে বিশ্বাস করলে বিপদে পড়তে হয়। কিন্তু যারা হিতকামী তারা কখনই মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে না।
একটি নীতি বাক্য অপ্রিয় সত্য কথা বলা উচিত হয়। তাহলে মিথ্যা কথা বলো এরূপ বলা নেই। যারা হিতকামী তারা প্রকৃত সত্যকে গোপন করে ভবিষ্যতে বিপদের মুখে ঠেলে দেয় না, বরং যা সত্য তা অত্যন্ত অপ্রিয় হলেও হিতকামীরা বলে থাকেন। সুতরাং প্রতিকারের উপায় চিন্তা করা যায় এবং ভবিষ্যতে কার্য নির্ধারণ করা সহজ হয়।
সুতরাং প্রিয়জনের দোষ-ত্রুটি বুঝেন। তাকে সত্য কথা বলে সতর্ক করে দেওয়া হলে তার মঙ্গল হয়। প্রিয় মিথ্যা কথা না বলে হিতকরও সত্য কথা বলাই প্রকৃত হিতষির কর্তব্য।
বরং বিরোধোঅপি সমং মহাত্মভিঃ ।
উঃ- এই জগতে প্রতিটি মানুষ নিজের কল্যাণ কামনা করে সেই উদ্দেশ্যে প্রত্যেকে অন্যের সাহায্যেও কামনা করে থাকে। এই উন্নতি লাভের পথ খুবই কঠিন। এই উদ্দেশ্যে সাহায্যকারী নির্বাচন করতে হবে অত্যন্ত সতর্ক ভাবে। কেননা দুর্যোধনের সংসর্গে কেবল অনির্য ঘটে থাকে। তাই দুর্জন ব্যক্তিকে বর্জন করতে হবে। তার জন্য যদি কোন মহৎ ব্যক্তির সাথে বিরোধ জন্মায় তবুও ভালো।
কারণ মহৎ ব্যক্তিকে পরাজয় করতে হলে তার সমান গুণ অর্জন করতে হবে।এইভাবে মহৎ ব্যক্তিকে পরাজিত করলে মানুষ গুণবান ব্যক্তিতে পরিণত হয়।অপরদিকে দুর্জনদের সাথে মিত্রতা করলে তার দোষগুলি মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়।
সুতরাং শত্রু হোক বা মিত্রই হোক মহৎ ব্যক্তির সাথে বিরোধ বা বন্ধুত্ব গ্রহন করা প্রতিটি মানুষের অবশ্য কর্তব্য।
অহে দুরন্তা বলবৎ বিরোধীতা।
উঃ- সমাজে দুই ধরনের মানুষ বিদ্যমান উদার মনের মানুষ ও সাধারন মনের মানুষ। উদার মনের মানুষেরা সব মানুষকে আপন জন ভেবে থাকে। এই মনোভাবের জন্য তারা নিঃশঙ্ক ভাবে জীবন যাপন করতে চাইলেও সমাজের নানা প্রতিকূল পরিবেশ নিঃশঙ্ক ভাবে জীবন যাপন করতে দেয় না।কারণ তাদের সাথে নানা ব্যক্তির বিরোধ দেখা দেয়। তবে সাধারণ ব্যক্তির সাথে বিরোধ হলে বেশি বিপদের আশঙ্কা থাকে না। বলবানের সঙ্গে বিরোধ হলে কখনো শান্তি লাভ করা যায় না।
সুতরাং জীবনে শান্তি লাভ করতে হলে শক্তিশালী ব্যক্তির কাছে বিরোধ না করায় ভালো। কারণ বলবানের সঙ্গে বিরোধের পরিনাম অত্যন্ত দুঃখ দায়ক।
পরাভবোদুপুৎসব এব মানিনাম্।
উঃ- মানুষের জীবনে দুই প্রকার পরাজয় আছে। একটি দৈব্য পরাজয় এবং অপরটি মনুষ্য পরাজয়। মনুষ্য পরাজয়টি অত্যন্ত মানহানিকর। মানি ব্যক্তি কখনোই মনুষ্য পরাজয়কে হাসিমুখে গ্রহণ করেনা। কারন মানি ব্যক্তির নিকট মান-সম্মান বড় সম্পদ। যদি সেটিই চলে যায় তাহলে তার কাছে কিছুই থাকেনা। দৈব্য পরাজয় মানুষের জীবনে যে কোনো সময় আসতে পারে। দৈব্য পরাজয়ে মানুষ নিজে নিজেদের জ্ঞান হারিয়ে ফেলে এবং তারা ভবিষ্যতের কর্মপন্থা নির্ণয়ে ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। কিন্তু যারা প্রকৃত মানুষ তারা নিজেদের জ্ঞান হারিয়ে ফেলে না।
সুতরাং প্রতিটি মানুষেই বিপদকে ভয় না পেয়ে তাকে বরণ করে নতুন করে পন্থা অবলম্বন করা উচিত।
ভারবির কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের প্রথম সর্গ বনপর্ব হতে অন্যান্য প্রশ্ন উত্তরগুলি দেখুন
বনপর্ব হতে ৬ নং এর প্রশ্ন উত্তরগুলি দেখুন
কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের প্রথম সর্গ বনপর্ব (প্রশ্ন নং ১ )
- প্রশ্ন নং -১ – উপায় কয়টি ও কী কী?
কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের প্রথম সর্গ বনপর্ব (প্রশ্ন নং ২ এবং ৩ )
- প্রশ্ন নং ২-ত্বয়াঅস্তেন মহী মদচ্যুতা’‘- বক্তা কে? মহী বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? মহী কার দ্বারা বর্জিত হয়েছে? উপমা প্রয়োগ করো।
- প্রশ্ন নং ৩-নিরাশ্রয়াঅন্তহতামনস্বিতা– আলোচ্য উক্তিটি কে কার উদ্দেশ্যে করেছেন? মনস্বিতা কখন আশ্রয় হারিয়ে নিহত হয়? আলোচ্য শ্লোক থেকে বক্তা পরস্পরবিরোধী বক্তব্য উল্লেখ করো।
কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের প্রথম সর্গ বনপর্ব (প্রশ্ন নং ৪ এবং ৫)
- প্রশ্ন নং ৪-তবাভিধানাৎ ব্যথতে নতানন– এই উক্তিটি কে কাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন? এখানে তবাভিধানাৎ কথাটি দ্বারা কাকে নির্দেশ করা হয়েছে? আলোচ্য শ্লোক থেকে তব কথাটির অর্থ কি? বাক্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো
- প্রশ্ন নং-৫- প্রবৃত্তিসারাঃ খলু সাদৃশং গিরঃ– উক্তিটির বক্তা কে? সাদৃশং বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? বক্তা তার বক্তব্যকে প্রবৃত্তিসারা বলেছেন কেন?
কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের প্রথম সর্গ বনপর্ব (প্রশ্ন নং ৬ এবং ৭)
- প্রশ্ন নং ৬ নয়েন জেতুং জগতীং সুযোধন- কে কাকে সুযোধন বলেছেন? তার বক্তব্যের মূল বিষয় কি? তার বক্তব্যটি সংক্ষেপে লেখ?
- প্রশ্ন নং ৭ তথাপি বক্তুং ব্যবসায়য়ন্তি মাং নিরস্তনারীসময়াদুরাধয়- কে কার উদ্দেশ্যে কথাটি বলেছিল? সময় ও দুরাধয় পদটির অর্থ কি? বক্তা পরবর্তী কথাগুলি বলতে কেন বাধ্য হয়েছিল?
কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের প্রথম সর্গ হতে সংস্কৃত বাখ্যা
মহাকবি ভারবি রচিত কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের বনপর্ব হতে প্রশ্ন ও উত্তর
- কিরাতার্জুনীয়ম্ অনুসারে দ্রৌপদীর উক্তির আলোকে পঞ্চপান্ডবের দুর্দশা বর্ণনা
- যুধিষ্ঠিরের নিকট বনেচরের বক্তব্য সংক্ষেপে বর্ণনা করো
- কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের বনপর্ব হতে ছোট প্রশ্ন