টীকা: কথাসরিৎসাগর

সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাসের গল্প সাহিত্য হতে সোমদেবভট্ট রচিত কথাসরিৎসাগর সম্পর্কে টীকা রচনা করা হল।

কথাসরিৎসাগর-গল্প সাহিত্য-টীকা

ভূমিকা:-

সংস্কৃত গল্প সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ নিদর্শন হল পৈশাচী প্রাকৃত ভাষায় রচিত গুনাঢ‍্যের বৃহৎকথা। প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যে রামায়ণ ও মহাভারতের পর এর জনপ্রিয়তা। বর্তমানে গ্রন্থটি লুপ্ত হলেও একে অনুকরণ করে সোমদেবভট্ট সংস্কৃত ভাষায় কথাসরিৎসাগর গ্রন্থটি রচনা করেন।

কবি পরিচিতি:-

সোমদেবভট্ট ছিলেন কাশ্মীরি ব্রাহ্মণ বানভট্টের পুত্র এবং কাশ্মীররাজ অনন্তের সভাকবি।

কথাসরিৎসাগর গ্রন্থরচনার কারন:-

কাশ্মীর রাজ অনন্তের পত্নী সূর্যমতীর চিত্তবিনোদনের জন্য কবি গ্রন্থটি রচনা করেন।

কথাসরিৎসাগরের নামকরন:-

সরিৎ শব্দের অর্থ নদী,সাগর। ছোটো ছোটো নদী যেমন সাগর তৈরি করে, তেমনি ছোট ছোট গল্প মিলিত হয়ে গ্রন্থটির নামকরণ কথাসরিৎসাগর যথার্থ ও সার্থক হয়েছে।

কথাসরিৎসাগরের রচনাকাল:-

কাশ্মীর রাজ অনন্তের শাসনকাল ধরে সম্ভবত ১০৬০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১০৮১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী কোনো সময়ে গ্রন্থটি রচিত হয়েছিল।

গ্রন্থবিন‍্যাস:-

এই গল্পে লম্বক আছে এবং সেগুলি ১২৮ টি তরঙ্গে বিভক্ত। গ্রন্থটিতে লোকসংখ্যা প্রায় ২২০০। নরমবাহনদত্ত গ্রন্থটির মুখ্য চরিত্র। গ্রন্থটিতে প্রায় ৯০০টি গল্পের সমাবেশ লক্ষ্য করা যায়।

সমাজচিত্র:-

তৎকালীন সমাজ চিত্র এই গ্রন্থে স্পষ্ট। স্থাপত্যবিদ্যার উন্নতি,শিব ও বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব, সমুদ্রপথে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রভৃতি দেখা যায় । সুতরাং গ্রন্থটির ঐতিহাসিক মূল্য অনস্বীকার্য।

মূল‍্যায়ণ:-

সোমদেব সহজ-সরল ও সাবলীল রচনারীতি দ্বারা সাধারণ মানুষের চিন্তা ধারাকে গল্পের মাধ্যমে নিখুঁতভাবে তুলে ধরেছেন। M.N.Penger সোমদেবকে গল্প সাহিত্যের জনক এবং কথাসরিৎসাগর কে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ সমূহের অন্যতম বলে শেক্সপিয়ারের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

আরো পড়ুন -সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস

(টীকা) বিষ্ণুশর্মা রচিত গল্প সাহিত্য পঞ্চতন্ত্র

Comments