টীকা: বিষ্ণুশর্মা ও পঞ্চতন্ত্র

সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস হতে বিষ্ণুশর্মা রচিত গল্প সাহিত্য পঞ্চতন্ত্র টীকা রচনা করা হল ।

বিষ্ণুশর্মা রচিত গল্প সাহিত্য পঞ্চতন্ত্র টীকা


সূচনা:-

সংস্কৃত সাহিত্যের বিশাল রত্নভাণ্ডারে গল্প সাহিত্যের একটি বিশেষ স্থান আছে। মানুষের গল্প শুনবার সহজাত প্রবৃত্তি হতে গল্প সাহিত্যের উদ্ভব। এই সংস্কৃত সাহিত্যের মধ্যে প্রধান অগ্রগণ্য হলেন পন্ডিত বিষ্ণুশর্মা। তিনি গল্প সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ সম্পদ পঞ্চতন্ত্র রচনা করেন।

বিষ্ণুশর্মার পরিচয়:-

বিষ্ণুশর্মা জন্ম ও বংশ পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। সমালোচকদের মত অনুযায়ী তিনি কাশ্মীরের ব্রাহ্মণ ছিলেন। পাশ্চাত‍্য পন্ডিত কিথ- এর মতে বিষ্ণুশর্মা বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী ছিলেন।

বিষ্ণুশর্মার আবির্ভাবকাল:-

বিষ্ণুশর্মার আবির্ভাব কাল সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য নেই। তবে পণ্ডিতগণ মনে করেন তিনি খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতকে বর্তমান ছিলেন।

পঞ্চতন্ত্র রচনার কারন:-

পঞ্চতন্ত্রের কথা মুখসূত্রে জানা যায় দাক্ষিণাত্যের মহিলারোপ‍্য নগরের রাজা অমরশক্তির তিন জড় বুদ্ধিসম্পন্ন পুত্রদের বিদ্যা শিক্ষাদানের উদ্দেশ্য বিষ্ণুশর্মা গ্রন্থটি রচনা করেন।

পঞ্চতন্ত্রের উৎস:-

সাধারণত গল্প সাহিত্যের উৎস বেদ-পুরাণ উপনিষদ,রামায়ণমহাভারত। সুতরাং বিষ্ণুশর্মা পঞ্চতন্ত্র রচনাকালে এগুলির কাছে ঋণী। তবে গ্রন্থটির মূল উৎস বৃহৎকথা।

পঞ্চতন্ত্রের মূল‍্যায়ণ:-

পাঁচটি তন্ত্রে রচিত বলে গ্রন্থটির নাম পঞ্চতন্ত্র। পাঁচটি তন্ত্র হল-মিত্রভেদ,মিত্রপ্রাপ্তি,কাকোলূকীয়ম্,লব্ধপ্রণাশ,অপরিক্ষিতকারকম্। প্রতি তন্ত্রে একটি মূল গল্পের সাথে অনেকগুলো ছোট ছোট গল্প সংযুক্ত হয়েছে। গল্পগুলি বৈচিত্র্যপূর্ণ ও সহজ-সরল ভাষায় রচিত।

উপসংহার:-

বিষ্ণুশর্মা শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে গ্রন্থটি রচনা করলেও তিনি একজন মহান শিল্পি। বিষ্ণুশর্মার বড়ো কৃতিত্ব হলো মানুষের মনের ভাব পশুপাখির অন্তরে স্থাপন করে তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। এই গ্রন্থটি বাইবেলের পরে সবচেয়ে বেশি ভাষায় অনুদিত। সুতরাং পরিশেষে বলা যায়, নীতি শিক্ষার ক্ষেত্রে সহজ ও সরল গ্রন্থ সত্যি দুর্লভ।

Comments