উপমা ও প্রতিবস্তুপমা অলংকারের পার্থক্য আলোচনা করা হল ।
উপমা ও প্রতিবস্তুপমা অলংকারের পার্থক্য
‘সাহিত্যদর্পন’ বিশ্বনাথ কবিরাজ ‘উপমা’ অলংকারের লক্ষণ প্রসঙ্গে বলেছেন-
“সাম্যং বাচ্যমবৈধম্যং বাক্যৈক্য উপমা দ্বয়ো।”
অর্থাৎ বিরুদ্ধে ধর্মের অর্থাৎ উল্লেখ না করে একই বাক্যে বিজাতীয় দুটি পদার্থের মধ্যে কোন ক্রিয়া বিগত সাদৃশ্য স্পষ্টরূপে ইবাদি শব্দ দ্বারা প্রতিপালন করা হয় তাহলে তাকে উপমা অলংকার বলা হয়।
পক্ষান্তরে সাহিত্যদর্পন গ্রন্থে বিশ্বনাথ কবিরাজ প্রতিবস্তুপমার লক্ষণে বলেছেন-
“প্রতিবস্তুপমা সা স্যাদবাক্যয়োর্গম্যসাম্যয়োঃ।
একোঅপি ধর্মঃ সামান্যো যত্র নির্দিশ্যতে পৃথক্।”
অর্থাৎ উপমান ও উপমেয়রূপ দুটি বাক্যের মধ্যে বিদ্যমান একই সাধারণ ধর্ম ‘ইব’ প্রভৃতি শব্দ দ্বারা অভিহিত না হয়ে যদি অনুমান গম্য হয় এবং সেই সাধারণ ধর্মটি অর্থের দিক থেকে অভিন্ন হয়েও যদি পৃথক পৃথক শব্দ দ্বারা নির্দিষ্ট হয়, তবে প্রতিবস্তুপমা অলংকার হয়।
উপমা ও প্রতিবস্তুপমা অলংকারের মধ্যে পার্থক্য হল-
- i) উপমা একটি বাক্যের দ্বারা উপমান ও উপমেয়ের সাদৃশ্য সূচিত হয়। কিন্তু প্রতিবস্তুপমায় দুটি বাক্য থাকে -একটি উপমানভূত এবং অপরটি উপমেয়ভূত।যেমনঃ- “মুখং চন্দ্র ইব”- এই উপমায় চন্দ্রের মধ্যে সাদৃশ্য প্রতিপাদিত হয়েছে। কিন্তু প্রতিবস্তুপমায় দুটি বাক্য থাকে। শ্লোকের প্রথমার্ধগত বাক্যটি উপমেয় এবং দ্বিতীয়ার্ধগত বাক্যটি উপমান।
- ii) উপমা অলংকারে উপমান ও উপমেয়ের মধ্যে সাদৃশ্যটি স্পষ্ট। কিন্তু প্রতিবস্তুপমায় এই সাদৃশ্যটি ভিন্ন ভিন্ন শব্দ দ্বারা প্রতিপাদিত।
- iii) উপমায় সাদৃশ্যটি ‘ইব’ প্রভৃতি শব্দ দ্বারা বাচ্য হয়। কিন্তু প্রতিবস্তুপমায় সাদৃশ্যটি অনুরূপভাবে বাচ্য নয়। সাদৃশ্যটি এখানে অনুমানগম্য। তাই প্রতিবস্তুপমার উদাহরণে ‘ইবাদি’ শব্দের উল্লেখ থাকে না।
কতকগুলি অলংকার সম্পর্কে আলোচনা করা হল –
- উৎপ্রেক্ষা অলংকার
- পরিণাম অলংকার
- দৃষ্টান্ত অলংকার
- শ্লেষ অলংকার
- উপমা অলংকার
- রূপক অলংকার
- নিদর্শনা অলংকার
- তুল্যযোগিতা অলংকার
- সমাসোক্তি অলংকার
- অর্থান্তরন্যাস অলংকার
- দীপক অলংকার