তুল্যযোগিতা অলংকার সম্পর্কে আলোচনা

তুল্যযোগিতা  অলংকার সম্পর্কে আলোচনা করা হল ।

তুল্যযোগিতা অলংকার

তুল্যযোগিতা অলংকারের লক্ষণ

আচার্য বিশ্বনাথ কবিরাজ তার “সাহিত্যদর্পণ” গ্রন্থের দশম পরিচ্ছেদে তুল্যযোগিতা অলংকারের লক্ষণ প্রসঙ্গে বলেছেন-

“পদার্থানাং প্রস্তুতানাং অন্যেষাম্ বা যদা ভবেৎ
একধর্মাভিসম্বন্ধ : স্যাত্তদা তুল্যযোগিতা।।”

শ্লোকের অর্থ

অর্থাৎ, সকল প্রস্তুত (প্রকৃত) পদার্থ কিংবা সকল অপ্রস্তুত(অপ্রধান) পদার্থ যখন গুন বা ক্রিয়ারূপ যেকোনো একটি ধর্মের সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত হলে “তুল্যযোগিতা” অলংকার হয়।

তুল্যযোগিতা অলংকারের ব্যাখ্যা

তুল্য বা সমান যোগে থাকে বলে এই অলংকারের নাম তুল্যযোগিতা হয়েছে। এই অলংকারের লক্ষণ বিশ্লেষন করলে সহজেই বোঝা যায় এই অলংকার দুই ভাবে হতে পারে।

যথা:-

  • ¡) প্রস্তুত পদার্থের সঙ্গে প্রস্তুত পদার্থের গুন বা ক্রিয়ারূপ ধর্মের দ্বারা সম্বন্ধ ঘটলে তুল্যযোগিতা অলংকার হয়।
  • ¡¡) আবার অপ্রস্তুত পদার্থের সঙ্গে অপ্রস্তুত পদার্থের গুন বা ক্রিয়ারূপ ধর্মের দ্বারা সম্বন্ধ ঘটলেও তুল্যযোগিতা অলংকার হয়।

তুল্যযোগিতা অলংকারের উদাহরণ

“ত্বদঙ্গমাদবং দ্রষ্টু : কস্য চিত্তে ন ভাসতে
মালতীশশভৃল্লেখা কদলীনাং কঠোরতা।।”

শ্লোকের অর্থ

(হে সুন্দরী) তোমার দেহের কোমলতা দেখে কার না মনে মালতীফুল, জ্যোৎস্না, কলাগাছের কঠোরতা ভেসে ওঠে।

শ্লোকের তাৎপর্য

এখানে সুন্দরী নায়িকার অঙ্গের কোমলতা প্রস্তুত পদার্থ এবং মালতীফুল, জ্যোৎস্না, কলাগাছ অপ্রস্তুত পদার্থ। শ্লোকে মালতী প্রভৃতি তিনটি অপ্রস্তুত পদার্থের একই ধর্ম “কঠোরতা” প্রকাশ পাচ্ছে। অর্থাৎ, কঠোরতা ধর্মের সঙ্গে তাদের সমান সম্বন্ধ বর্ণিত হওয়ায় উক্ত শ্লোকটি “তুল্যযোগিতা” অলংকারের প্রকৃষ্ট উদাহরণ হয়েছে।

আরো কতকগুলি অলংকার সম্পর্কে আলোচনা করা হল –


Comments