ভাট্টিকাব্য দ্বিতীয় সর্গ হতে অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর দেওয়া হল।
ভাট্টিকাব্য দ্বিতীয় সর্গ হতে অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন *
১) ভট্টিকাব্যের রচয়িতা কে? এই কাব্যের অপর নাম কী?
উ:- ২২ টি সর্গে রচিত ভট্টিকাব্যের রচয়িতা হলেন কবি ভট্টি বা ভর্তৃহরি। এই কাব্যের অপর নাম ‘রাবনবধম্’, ‘ রামকাব্য’ বা ‘রামচরিত’ ইত্যাদি।
২ ) ভট্টিকাব্যে কোন রাক্ষসের কথা বলা হয়েছে? কে, কীভাবে তাকে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দূরে নিক্ষেপ করেছিলেন?
উ:- ভট্টিকাব্যের দ্বিতীয় সর্গে রাক্ষস দলপতি মারীচের কথা বলা হয়েছে।
দশরথ নন্দন রামচন্দ্র যজ্ঞ বিঘ্নকারী রাক্ষস দলপতি মারীচকে শরাঘাতে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দূরে নিক্ষেপ করেছিলেন।
৩) “দীপতুল্যঃ প্রবন্ধোঅয়ং শব্দ লক্ষণচক্ষুষাম্”- ব্যাখ্যা কর।
উ:- মহাকবি ভট্টি রচিত ভট্টিকাব্যম্ থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে।
ভট্টিকাব্যটি ব্যাকরণে ব্যুৎপন্ন পণ্ডিতের নিকট প্রদীপতুল্য অর্থাৎ প্রকাশক। কিন্তু শাস্ত্রবিমুখ পাঠকের কাছে এটি অন্ধের হাতে দর্পণের ন্যায় নিরর্থক।
৪) ভট্টিকাব্য কেন রচিত হয়েছিল? মহাকাব্যটির উৎস কী?
অথবা, ভট্টিকাব্য সৃষ্টির কারণ কী?
উ:- ভট্টিকাব্য সৃষ্টির কারণ কাব্যের মাধ্যমে ব্যাকরণ ও অলংকার শিক্ষাদান করা। গরু ও ছাত্রের মাঝখান দিয়ে হাতি চলে যাওয়ায় এক বৎসর অনধ্যায় হয়। তাই ব্যাকরণ শিক্ষা নিষিদ্ধ হওয়ায় কাব্যের মধ্য দিয়ে শিক্ষার জন্য ভট্টিকাব্যের সৃষ্টি হয়েছিল।
মহাকাব্যটির উৎস হল আদিকবি বাল্মীকি রচিত রামায়ণ মহাকাব্য।
৫) ভট্টিকাব্যের দ্বিতীয় সর্গের নাম কি? এই কাব্যের সর্গ সংখ্যা কত?
উ:- ভট্টিকাব্যের দ্বিতীয় সর্গের নাম ‘সীতাপরিণয়’।
এই কাব্যের মোট সর্গ সংখ্যা ২২টি।
৬) মনোব্যতিস্তে তু মমাপি ধর্মঃ”- লাইনটির বক্তা কে? এবং কাকে এটি বলা হয়েছিল?
উ:- মহাকবি ভট্টি রচিত ভট্টিকাব্যম্ থেকে আলোচ্য উক্তিটি নেওয়া হয়েছে।
আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন দশরথ নন্দন রামচন্দ্র। তিনি রাক্ষস দলপতি মারীচকে এই কথাটি বলেছিলেন।
৭) ভট্টিকাব্যের একজন টীকাকার এবং তাঁর রচিত টীকার নাম লেখ।
উ:- মহাকবি ভট্টির ভট্টিকাব্যের জনপ্রিয়তার কারনে এর উপর রচিত হয়েছে অসংখ্য টীকা। তার মধ্যে একজন খ্যাতিমান টীকাকার হলেন মল্লিনাথ সুরী। তাঁর রচিত টীকার নাম ‘সর্বপথীনা’।
৮) ‘ ভট্টিকাব্যম্’ পদটির ব্যাসবাক্যসহ সমাস উল্লেখ কর।
উ:- ‘ ভট্টেঃ কাব্যম্’ – ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস।
অথবা, ‘ভট্টিকৃতং কাব্যম্’ = ভট্টিকাব্যম্।
শাকপার্থিবাদিবৎ সমাস।’
৯) রামকে ‘ কাকুৎস্থ’ কেন বলা হয়েছে?
উ:- রামচন্দ্রের পূর্বপুরুষ মহারাজ পুরুঞ্জয় যুদ্ধে বৃষরূপধারী দেবরাজ ইন্দ্রের ককুদের (ঘাড়ে অবস্থিত মাংসাপিণ্ড) উপর অবস্থান দৈত্য নিধন করেছিলেন বলে তাকে ‘কাকুস্থ’ বলা হতো। রামচন্দ্র তাঁর বংশধর বলে তাকে কাকুৎস্থ বলা হয়।
১০) ব্যাকরণগত টীকা লিখ।
‘গন্ধবহঃ, সুগন্ধঃ’
উ:- ‘গন্ধস্য বহঃ’ গন্ধবহঃ ষষ্ঠী তৎপুরুষ।
বহতি ইতি বহ্ + অচ্ = বহঃ। সুগন্ধঃ = শোভনঃ। গন্ধঃ যস্য সঃ বহুব্রীহি।
১১ ) “যেনার্দিদদ্ দৈত্যপুরং পিনাকী ” কাকে কেন পিনাকী বলা হয়?
উ:- শিবকে পিনাকী বলা হয়। কারণ শিবের ধনুকটির নাম পিনাক। ‘পিনাকঃ অস্য অস্তি’ এই অর্থে পিনাক+ ইনি প্রত্যয় করে পিনাকী পদ গঠিত হয়। শিব এই পিনাক ধনু দিয়ে দৈত্যপুরীত্রয় ত্রিপুর ধ্বংস করেছিলেন।
১২) ‘ধনু সবাণং কুরু মাতিযাসীঃ’ -কে কাকে একথা বলেছিলেন? এখানে কোন ধনুদের কথা বলা হয়েছে?
উ:- জামদগ্ন্য পরশুরাম দশরথ নন্দন রামচন্দ্রকে একথাটি বলেছিলেন। পরশুরামের হাতে যে ধনুকটি ছিল সেটি উত্তরাধিসূত্রে পাওয়া ভগবান বিষ্ণুর ধপু। তাই ঐ ধনুককে বৈষ্ণব ধনু বলা হয়। এখানে পরশুরামের হস্তস্থিত বৈষ্ণবধনুকের কথা বলা হয়েছে।
১৩) ‘ধর্মোঅস্তি সত্যং তব রাক্ষসায়ম্’ – এখানে রাক্ষসধর্মটি কি?
উ:- ব্রাহ্মণদের ভক্ষণ করা, যজ্ঞানুষ্ঠানকারকদের হত্যা করা এবং নগরকে শ্মশানে পরিণত করাই রাক্ষধর্ম – ‘অদ্মো দ্বিজান্ দেবযজীন্ নিহষ্মঃ কুর্মঃ পুরং প্রেতনরাধিবাসম্। ধর্মোঅয়ং।”
১৪) মল্লিনাথ ভট্টিকাব্যের কি নামকরণ করেন?
উ:- প্রসিদ্ধ টীকাকার মল্লিনাথ ভট্টিকাব্যের নাম করেছেন ‘উদাহরণ কাব্য’। – ” রামকথামাশ্রিত্য পাণিনীয় সূত্রাণাম্ উদাহরণ কাব্যং চিকীর্ষুঃ।”
১৫) ‘ ন মানিনী সংসহতেঅন্যসঙ্গমম্ ‘ – উক্তিটির তাৎপর্য কি?
উ:- অভিমানিনী স্ত্রী কখনও স্বামীর অন্য নারীর সংসর্গ সহ্য করতে পারে না। অলংকার শাস্ত্রের মতে নায়কের দেহে অন্য নায়িকার সংভোগ চিহ্ন দেখে কূপিতা নায়িকাকে খন্ডিতা নায়িকা বলা হয়েছে। এখানে প্রভাত বায়ুর আন্দোলনে পদ্মিনীর উপর ভ্রমর বসতে না পারায় কবির দৃষ্টিতে এটি খন্ডিতা নায়িকার নায়ককে প্রত্যাখ্যানের সমান।
- ভট্টিকাব্য: সংস্কৃত ব্যাখ্যা – বিম্বাগতৈস্তীরবনৈঃ সমৃদ্ধিং
- ভট্টিকাব্য: সংস্কৃত ব্যাখ্যা – দত্তাবধানং মধুলেহিগীতৌ
- ভট্টিকাব্য: সংস্কৃত ব্যাখ্যা – হিরন্ময়ী শাললতেব জঙ্গমা
- ভাট্টিকাব্য সর্গ 2: সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
- ভাট্টিকাব্য সর্গ 2: শ্লোকের ব্যাকরণ
- ভট্টিকাব্য: সংস্কৃত ব্যাখ্যা – ন তজ্জ্বলং যন্ন সুচারুপঙ্কজম্
- ভট্টিকাব্য: সংস্কৃত ব্যাখ্যা – গর্জন্ হরিঃ সাম্ভসি শৈলকুঞ্জে
- ভট্টিকাব্য: সংস্কৃত ব্যাখ্যা – প্রভাতবাতাহতিকম্পিতাকৃতিঃ
- ভট্টিকাব্য: সংস্কৃত ব্যাখ্যা – সিতারবিন্দ প্রচয়েষু লীনাঃ
- ভট্টিকাব্যের দ্বিতীয় সর্গে রামকর্তৃক শরৎকালের বর্ণনা
- ভট্টির রচনাশৈলী