মহাকবি ভারবি রচিত কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের বনপর্ব অনুসারে দ্রৌপদীর উক্তির আলোকে পঞ্চপান্ডবের দুর্দশা বর্ণনা করা হল।
দ্রৌপদীর উক্তির আলোকে পঞ্চপান্ডবের দুর্দশা বর্ণনা করো।
ভূমিকা-
কালিদাস পরবর্তী কাব্যগগনে উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেন মহাকবি ভারবি। তিনি মহাভারতের বনপর্ব অবলম্বনে কিরাতার্জুনীয়ম মহাকাব্যটি রচনা করে লোকাত্রয় খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। এখানে প্রথম সর্গে বর্ণিত হয়েছে বনেচর ও দ্রৌপদীর ভাষণ। দ্রৌপদীর ভাষণের মাধ্যমে পঞ্চপান্ডবের দুর্দশার কথা বর্ণিত হয়েছে।
পূর্বপ্রসঙ্গ:-
কপট পাশা খেলায় পরাজিত বনবাসী যুধিষ্ঠির দুর্যোধনের রাজ্য শাসন পদ্ধতি জানার জন্য বনেচর বা কিরাত নিযুক্ত করেছিলেন। সে সমস্ত বৃত্তান্ত জেনে দ্বৈতপুরে উপস্থিত হয়ে যুধিষ্ঠিরের নিকট নিবেদন করলেন। এরপর সে দ্রুত উপায় অবলম্বন করার ইচ্ছা প্রকাশ করে এবং পারিশ্রমিক নিয়ে সেখান থেকে চলে গেলেন। এরপর যুধিষ্ঠির দ্রৌপদীর গৃহে প্রবেশ করে সমস্ত বৃত্তান্ত ভাইদের কাছে বর্ণনা করলেন। তখন দ্রৌপদী নিজের আবেগ দমন করতে না পেরে যুধিষ্ঠিরের ক্রোধ ও উৎসাহ জানানোর উদ্দেশ্যে নানা যুক্তিপূর্ণ কথা বলেছিলেন। তখনই দ্রৌপদীর মুখে পঞ্চপান্ডবের দুর্দশার অবস্থা ফুটে উঠেছে।
তা নিম্নে বর্ণিত হল-
পঞ্চপান্ডবের দুর্দশার বর্ণনা:-
পঞ্চপান্ডবেরা রাজ্য হারিয়ে বনবাসী। তারা রাজ্য সুখ থেকে বঞ্চিত হয়ে দ্বৈতবনে বসবাস করছেন। বনবাস কালে পঞ্চপান্ডবের দুর্দশাগুলি সুবিস্তারে বর্ণনা করা হবে।
ভীমের দুরবস্থা বর্ণনা:-
মধ্যম পান্ডব মহাবল ভীমসেন রাজ্য হারানোর পূর্বে দেহে রক্ত চন্দন লেপনে অভ্যস্ত ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে তার শরীর ধুলাধুসরিত। পূর্বে তিনি বিশাল রথে বিচরন করতেন। বর্তমানে তিনি পার্বত্য প্রদেশের পদব্রজে বিচরণ করতে বাধ্য হচ্ছেন। বৃকোদরের এমন দুর্দশা দেখেও মহারাজ যুধিষ্ঠিরের মনে কষ্ট জন্মাচ্ছেনা দেখে দ্রৌপদী অত্যন্ত বিস্মীত।যুধিষ্ঠিরের মতো ব্যক্তির পরাজয় অসহ্য হয়ে উঠবে। তাই উচিত জটা ত্যাগ করে ক্ষাত্র ত্যাজ গ্রহণ করে শত্রুর সাথে স্থাপিত সন্ধি ভঙ্গ করা এবং রাজ্য উদ্ধারে সচেষ্ট হওয়া।
উপসংহার:-
দ্রৌপদী ক্ষত্রিয় ধর্মের প্রতীক মহীয়সী রমণী তিনি নানাগুণে শোভিত। তার হৃদয়ের অনুভূতি গুলি পান্ডবদের দুর্দশার মাধ্যমে ব্যক্ত করে যুধিষ্ঠিরকে উৎসাহ করার চেষ্টা করেছেন। তাই শত্রু বিনাশ করে হিতরাজ্য পুনরুদ্ধারের যুধিষ্ঠিরের উদ্যোগী হওয়া উচিৎ। এই হল তার বর্ণনার তাৎপর্য।
আরো পড়ুন
ভারবির কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের প্রথম সর্গ বনপর্ব হতে অন্যান্য প্রশ্ন উত্তরগুলি দেখুন
বনপর্ব হতে ৬ নং এর প্রশ্ন উত্তরগুলি দেখুন
কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের প্রথম সর্গ বনপর্ব (প্রশ্ন নং ১ )
- প্রশ্ন নং -১ – উপায় কয়টি ও কী কী?
কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের প্রথম সর্গ বনপর্ব (প্রশ্ন নং ২ এবং ৩ )
- প্রশ্ন নং ২-ত্বয়াঅস্তেন মহী মদচ্যুতা’‘- বক্তা কে? মহী বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? মহী কার দ্বারা বর্জিত হয়েছে? উপমা প্রয়োগ করো।
- প্রশ্ন নং ৩-নিরাশ্রয়াঅন্তহতামনস্বিতা– আলোচ্য উক্তিটি কে কার উদ্দেশ্যে করেছেন? মনস্বিতা কখন আশ্রয় হারিয়ে নিহত হয়? আলোচ্য শ্লোক থেকে বক্তা পরস্পরবিরোধী বক্তব্য উল্লেখ করো।
কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের প্রথম সর্গ বনপর্ব (প্রশ্ন নং ৪ এবং ৫)
- প্রশ্ন নং ৪-তবাভিধানাৎ ব্যথতে নতানন– এই উক্তিটি কে কাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন? এখানে তবাভিধানাৎ কথাটি দ্বারা কাকে নির্দেশ করা হয়েছে? আলোচ্য শ্লোক থেকে তব কথাটির অর্থ কি? বাক্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো
- প্রশ্ন নং-৫- প্রবৃত্তিসারাঃ খলু সাদৃশং গিরঃ– উক্তিটির বক্তা কে? সাদৃশং বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? বক্তা তার বক্তব্যকে প্রবৃত্তিসারা বলেছেন কেন?
কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের প্রথম সর্গ বনপর্ব (প্রশ্ন নং ৬ এবং ৭)
- প্রশ্ন নং ৬ নয়েন জেতুং জগতীং সুযোধন- কে কাকে সুযোধন বলেছেন? তার বক্তব্যের মূল বিষয় কি? তার বক্তব্যটি সংক্ষেপে লেখ?
- প্রশ্ন নং ৭ তথাপি বক্তুং ব্যবসায়য়ন্তি মাং নিরস্তনারীসময়াদুরাধয়- কে কার উদ্দেশ্যে কথাটি বলেছিল? সময় ও দুরাধয় পদটির অর্থ কি? বক্তা পরবর্তী কথাগুলি বলতে কেন বাধ্য হয়েছিল?
কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের প্রথম সর্গ হতে সংস্কৃত বাখ্যা
মহাকবি ভারবি রচিত কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের বনপর্ব হতে প্রশ্ন ও উত্তর
- যুধিষ্ঠিরের নিকট বনেচরের বক্তব্য সংক্ষেপে বর্ণনা করো
- মহাকবি ভারবি রচিত কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের বনপর্ব হতে ভাবসম্প্রসারণ
- কিরাতার্জুনীয়ম্ মহাকাব্যের বনপর্ব হতে ছোট প্রশ্ন