যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা ব্যবহারাধ্যায় – সাধারন ব্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ হতে ছোট প্রশ্ন ও উত্তর
যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা ব্যবহারাধ্যায় – সাধারন ব্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ হতে ছোট প্রশ্ন ও উত্তর
১) কাহারা সাক্ষী হওয়ার উপযুক্ত? অথবা, একজন সাক্ষীর কোন কোন গুন থাকা আবশ্যক? অথবা, কারা সাক্ষীর জন্য যোগ্য?
উ:- আচার্য যাজ্ঞবল্ক্য রচিত যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতার ব্যবহারাধ্যায়ে সাক্ষীর গুনাবলী সম্পর্কে যাজ্ঞবল্ক্য বলেছেন-
“তপস্বিনো দানশীলাঃ কুলীনাঃ সত্যবাদিনঃ।
ধর্মপ্রধানা ঋজবঃ পুত্রবন্তো ধনান্বিতাঃ।
ত্র্যবরা সাক্ষিণো জ্ঞেয়াঃ শ্রৌতস্মার্ত্তক্রিয়াপরাঃ।
যথাজাতি যথাবর্ণং সর্বে সর্বেষু বা স্মৃতাঃ।।”
অর্থাৎ সাক্ষীগন তপঃ পরায়ন, দানশীল,সৎ বংশজাত, সত্যবাদী, ধর্মপরায়ণ সরল বুদ্ধি, পুত্রবান ও ধনবান হবেন। এদের সংখ্যা তিনের কম হবে না। এরা বৈদিক ও স্মৃতি শাস্ত্রসম্মত ক্রিয়াবান হবেন। সাক্ষীদের জাতি ও বর্ণ অনুসারে নির্বাচন করা হবে। কোন কোন ক্ষেত্রে যে কেউ সকলের সাক্ষী হতে পারে।
২) মিথ্যা সাক্ষী চেনার উপায় কী?
অথবা, কিরূপ লক্ষণ দেখে মিথ্যা সাক্ষী চিহ্নিতকরণ করা যায়?
উ:- মহর্ষি যাজ্ঞবল্ক্য প্রণীত যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতার ব্যবহারাধ্যায়ে যাজ্ঞবল্ক্য বলেছেন মিথ্যাসাক্ষী নিজের দোষে সকলের কাছে চিহ্নিত হয়। সে কোথাও স্থির না থেকে অস্থির ভাবে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরে বেড়ায়। মিথ্যা সাক্ষী অপ্রাসঙ্গিক আলোচনায় ব্যস্ত থাকে ও বিচলিত হয়, নিয়ত পদচারণা করে, দীর্ঘশ্বাস ফেলে, কখনো পা দিয়ে মাটিতে দাগ কাটে, কখনো বা হাত কাঁপতে থাকে, মুখ বিবর্ণ হয়ে যায়, দৃষ্টি চঞ্চল থাকে কিছু জিজ্ঞাসা না করলেও ব্যস্ত হয়ে বহুকথা বলতে থাকে। সুতরাং এসব লক্ষণ দেখে সহজেই মিথ্যা সাক্ষী চেনা যায়।
৩) রাজাঃ কীরূপ ব্যবহার দর্শন করবেন?
উ:- আচার্য যাজ্ঞবল্ক্যের মতে বিভিন্ন শাস্ত্রে সুপণ্ডিত বিদ্বান ব্রাহ্মণগনের সহিত ধর্ম শাস্ত্রের বিধান অনুসারে রাজা ক্রোধ ও লোভ বিসর্জন দিয়ে ব্যবহার দর্শন করবেন-
“ব্যবহারান্নৃপঃ পশ্যেদ্ বিদ্বদ্ভিঃব্রাহ্মণৈঃ সহ।
ধর্মশাস্ত্রানুসারেন ক্রোধলোভবিবর্জিতঃ।।”
৪) ব্যবহার বলতে কি বোঝ? এর চরণগুলির নাম কর।
উ:- বি-অব-√হৃ + ঘঞ্ (করণবাচ্যে ) দ্বারা ব্যবহার পথে নিষ্পন্ন হয়েছে। বি-এই উপসর্গটি নানা অর্থে অব উপসর্গটি সন্দেহ অর্থে এবং হৃ হরণ করা অর্থে প্রযুক্ত হয়েছে। অর্থাৎ যে পদ্ধতির দ্বারা নানা সন্দেহের নিরসন বা বিনাশ হয় তাকে ব্যবহার বলে। এই প্রসঙ্গে যাজ্ঞবল্ক্য বলেছেন-
“স্মৃত্যাচার ব্যপেতেন মার্গেণাধর্ষিতঃ পরৈঃ।
আবেদয়তি চেদ্রাজ্ঞে ব্যবহার পদং হিতৎ।।”
৫) রাজা কেন ব্যবহার দর্শন করবেন?
উ:- আচার্য যাজ্ঞবল্ক্য মতে স্মৃতি ও লোকাচার বিরোধী উপায়ে অপরের দ্বারা নিপীড়িত হয়ে যদি কোনো ব্যক্তি রাজার নিকট প্রতিকারের জন্য আবেদন জানায়, তবে সেই বিষয়ে রাজা ব্যবহার দর্শন করবেন।-
“স্মৃত্যাচার ব্যপেতেন মার্গেণাধর্ষিতঃ পরৈঃ।
আবেদয়তি চেদ্রাজ্ঞে ব্যবহারঃ পদং হি তৎ।।”
৬) রাজার সভাসদ্ এর বৈশিষ্ট্য কীরূপ? অথবা, রাজা কীরূপ সভাসদ্ নিয়োগ করবেন? অথবা, রাজার আইনসভার সদস্যদের গনাবলী কি কি?
উ:- আচার্য যাজ্ঞবল্ক্য মতে, রাজা মীমাংসা ব্যাকরণাদি শাস্ত্র শ্রবণকারী, বেদাদি অধ্যয়ন সম্পন্ন, ধর্মশাস্ত্রবিদ, সত্যবাদী এবং শত্রু ও মিত্রের প্রতি সমমনোভাবাপন্ন সভাসদ্ নিযুক্ত করবেন-
“শ্রুত্যাধ্যয়ন সম্পন্না ধর্মজ্ঞাঃ সত্যবাদিনঃ।
রাজ্ঞা সভাসদঃ কার্যা রিপৌ মিত্রে চ যে মাঃ।।”
৭ ) প্রাড্ বিবাক কাকে বলে?
উ:- যাজ্ঞবল্ক্যের মতে রাজা অন্য কার্যে ব্যস্ত থাকার জন্য স্বয়ং দৈনন্দিন ব্যবহার দর্শনে অসমর্থ হলে বিচারকার্য পরিচালনার জন্য সর্ব ধর্মবিদ বেদব্যাকরনাদি ও মীমাংসাদি শাস্ত্রে নিপুন একজন বিচক্ষণ ব্রাহ্মণ বিচারণ নিযুক্ত করেন, এরূপ বিচারককেই বলা হয় প্রাড্ বিবাক। তাই মিতাক্ষরাতে বলা হয়েছে-
“বিবাদানুগতং পৃষ্ট বা সমৎস্তৎ প্রযত্নতঃ।
বিচারয়তি যেনাসৌ প্রাড্ বিবাকস্তঃ স্মৃতঃ।।”
৮) যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা কী ধরনের সাহিত্য? সাহিত্য ধারার পুরোধা ব্যাক্তি কে?
উ:- যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা স্মৃতিশাস্ত্রজাতীয় গ্রন্থ বা সাহিত্য।
এর পুরোধা ব্যক্তি হলেন মিথিলাবাসী যোগীশ্বর যাজ্ঞবল্ক্য।
৯) যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতার একজন বিখ্যাত টীকাকার ও তার টীকার নাম কর?
উ:- আচার্য যাজ্ঞবল্ক্য প্রণীত যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতার একজন বিখ্যাত টীকাকার হলেন আচার্য বিজ্ঞানেশ্বর।
তার টীকার নাম হল- মিতাক্ষরা।
১০) রাজার অবর্তমানে কে ব্যবহার দর্শন করবেন?
উ:- আচার্য যাজ্ঞবল্ক্যের মতে বিভিন্ন কার্যবশত রাজা স্বয়ং ব্যবহার দর্শনে অসমর্থ হলে সভ্যগণের সঙ্গে ব্যবহার দর্শনের জন্য একজন সর্বধর্মবিদ ব্রাহ্মণকে নিযুক্ত করবেন-
” অপশ্যতা কার্যবশাদ্ ব্যবহারান নৃপেন তু।
সভ্যৈঃ সহ নিযোক্তব্যো ব্রাহ্মণঃ সর্বধর্মবিৎ।।”
১১) ব্যবহার কয় প্রকার ও কী কী?
উ:- ব্যবহারে সংখ্যা নিয়ে আচার্যদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও যাজ্ঞবল্ক্য তার যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতার ব্যবহারাধ্যায়ে কুড়িটি ব্যবহার উল্লেখ করেছেন। যথা- i) ঋনদান, ii) নিক্ষেপ, iii) অস্বামিবিক্রয় iv) সম্ভূয়সমুত্থান v) দত্তানপকর্ম vi) বেতনাদান vii) সংবিদ্ ব্যতিক্রম viii) ক্রয়বিক্রয়ানুশয় ix) স্বামিপালবিবাদ x) সীমাবিবাদ xi) দণ্ডপারুষ্য xii) বাকপারুষ্য xiii) স্তেয় xiv) সাহস xv) স্ত্রীসংগ্রহণ xvi) দায়বিভাগ xvii) দূতাহ্বয় xviii) অভ্যুপেত্যাশুশ্রূষা xix) বিক্রীয়াসম্প্রদান এবং xx) প্রকীর্ণক।
১২) কূটসাক্ষী বা মিথ্যাসাক্ষী বলতে কী বোঝ?
উ:- কোন সাক্ষী সাক্ষ্য দেওয়ার পর যদি তৎপেক্ষা অধিক গুণবান বা অন্য দ্বিগুন সাক্ষী ওই সাক্ষী বিরুদ্ধে বিপরীত কথা বলেন তাহলে পূর্ব সাক্ষীকে কূটসাক্ষী বা মিথ্যা সাক্ষী বলা হবে। এছাড়া সাক্ষ্যদানকালে যারা বিচলিত হয়, পাদচারনা করে, দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করে, মাটিতে পা দিয়ে দাগ কাটে, হাত পা কাঁপতে থাকে বা মুখ বিবর্ণ হয়ে যায়, এদিক ওদিক তাকাতে থাকে, কিছু জিজ্ঞাসা না করলেও অযথা বহু কথা বলে। তাদের মিথ্যা বা কূট সাক্ষী বলা হয়।
১৩) চতুষ্পাদ ব্যবহার অয়ং বিবাদেষু পাদ -এখাতে চতুষ্পাদ ব্যবহার বলতে কি বোঝানো হয়েছে?
উ:- আচার্য যাজ্ঞবল্ক্য তার যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতার ব্যবহারাধ্যায়ে চতুষ্পাদ ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে বলেছেন-
‘চতুষ্পাদব্যবহারোঅয়ং বিবাদেষু প্রদর্শিত।’
অর্থাৎ ব্যবহার চতুষ্পাদ। ব্যবহারের এই চারটি পাদ হল-
- i) ভাষাপাদ
- ii) উত্তরপাদ
- iii) ক্রিয়াপাদ
- iv) সাধ্যসিদ্ধিপাদ।
১৪) স্তেয় ও সাহস কি?
উ:- স্তেয়:- স্তেয় বা চৌর্য সাহসের এক প্রকারভেদ। যখন বলপূর্বক আক্রমণের জন্য কারও মনে পীড়া উৎপন্ন হয়, সেটি হয় সাহস। কিন্তু যখন ছলনার আশ্রয়ে দ্রব্য গৃহীত হওয়ায় মনোকষ্ট হয় তখন তাকে বলে চৌর্য বা স্তেয়। আচার্য মনুর মতে -গোপনে অন্যের অলক্ষ্যে অপরের দ্রব্য বঞ্চনাদি দ্বারা হরণ করলে, তাকে চৌর্য বা স্তেয় বলে-
“নিরন্বয়ং ভবেৎ স্তেয়ং কৃত্বাপহৃয়তে চ যৎ।”
সাহস:- সহস মানে বল। ‘সাহসা বলেন কৃতম্। ‘- ইতি সাহসম্। সহস শব্দের উত্তর ষ্ণ প্রত্যয় করে সাহস পদটি নিষ্পন্ন হয়েছে। যাজ্ঞবল্ক্য সাহসের লক্ষণ প্রসঙ্গে বলেছেন-
“সামান্যদ্রব্য প্রসভঅহরণাৎ স্মৃতম্।”
অর্থাৎ জনগণের দ্রব্য বা অপরের দ্রব্য বলপূর্বক হরণই সাহস নামে খ্যাত।
১৫) যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতাকে স্মৃতিশাস্ত্র বলা হয়েছে কেন? এই গ্রন্থের টীকাগুলির নাম লেখো?
উ:- যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা বৈদিক সাহিত্যের অন্তর্গত। বৈদিক সাহিত্য পর্যালোচনা করলে আমরা বুঝতে পারি সংহিতা, ব্রাহ্মণ, আরণ্যক ও উপনিষদের পর সূত্রসাহিত্যের আবির্ভাব ঘটে। ধর্মশাস্ত্রসমূহ এই সাহিত্যের অন্তর্গত। সূত্র সাহিত্যের অপেক্ষাকৃত পরবর্তীকালে শ্রুতি বাক্যসমূহ রোমন্থন করে বৈদিক আচারাদি স্মরণ করে যেসব শাস্ত্র রচিত হয়েছিল তাদের স্মৃতিশাস্ত্র বলে। এই যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতা বেদার্থ স্মরণ করে রচিত এবং স্মৃতির প্রমাণ স্বীকার্য। তাই এটিকে স্মৃতিশাস্ত্র বলা হয়।
যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতার মোট তিনটি টীকা পাওয়া যায়। যথা-
- i) বিশ্বরূপ রচিত – বালক্রীড়া
- ii) বিজ্ঞানেশ্বর রচিত – অপরার্ক
- iii) অপরাদিত্য রচিত – যাজ্ঞবল্ক্য ধর্মশাস্ত্র নিবদ্ধ টীকা।
১৬) সীমাবিবাদের ক্ষেত্রে কোন চিহ্নগুলির স্বীকৃতি দেওয়া হয়ে থাকে? অথবা, সীমাচিহ্ন কয়প্রকার ও কী কী?
উ:- আচার্য যাজ্ঞবল্ক্যের মতে সীমাবিবাদের ক্ষেত্রে পাঁচপ্রকার চিহ্নকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়ে থাকে। যথা-
- i) ধ্বজিনী
- ii) মৎসিনী
- iii) নৈধানী
- iv) ভয়বর্জিতা
- v) রাজশাসননীতি।
১৭) উপনিধির সংজ্ঞা নির্ণয় কর।
উ:- যাজ্ঞবল্ক্যের মতে উপনিধির সংজ্ঞা হল-
“বাসনস্থং অনাখ্যায় হস্তে অন্যস্য যদর্প্যতে।
দ্রব্যং তৎ ঔপনিধিকং প্রতিদেয়ং তদৈব তৎ।।”
অর্থাৎ নিক্ষিপ্ত দ্রব্যটি বাসন (পাত্র) বা পেটিকার মধ্যে রেখে মুখ বন্ধ করে ভেতরে রাখা জিনিষটি আকৃতি, রূপ, সংখ্যা প্রভৃতি গোপন রেখে বিশ্বাস সহকারে অন্যের কাছে রাখলে তাকে উপনিধি বলা হয়।
১৭) আধি শব্দের অর্থ কী?
উ:- আধিয়তে ইতি আধিঃ অর্থাৎ যে দ্রব্যটি গচ্ছিত রাখা হয় তাকে আধি বলে। ঋণাদানের ক্ষেত্রে বিশ্বাস উৎপাদনের জন্য অধমর্ণ উত্তমর্ণের কাছে তার নিজস্ব দ্রব্যটি আধি বা বন্ধক রূপে রেখে ঋন গ্রহণ করে থাকে।
১৮) প্রতিভূ কথাটির তাৎপর্য কী?
উ:- প্রতিভূ মানে হল জামিনদার। ‘প্রতিভাব্যং নাম বিশ্বাসার্থং পুরুষান্তরেণ সহসময়ঃ।’ অর্থাৎ ঋণাদানের ক্ষেত্রে বিশ্বাস উৎপাদনের জন্য অপরের সঙ্গে চুক্তি করাই প্রতিভূত্বের লক্ষণ।
১৯) ভুক্তি বলতে কি বোঝ?
উ:- ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভুক্তি মানে হলো ভোগ বা দখল। এটি একটি প্রমাণ। জমিসংক্রান্ত বিবাদের ক্ষেত্রে লেখ্য বা দলিল পত্রাদির পর ভুক্তি বা ভোগের গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। ক্ষেত্র বিশেষের লেখ্য ও সাক্ষীপ্রমাণ অপেক্ষা ভুক্তির প্রাধান্য স্বীকার করা হয়।
২০) ব্যবহারপদং হিতৎ -অংশটির তাৎপর্য লিখ?
উ:- স্মৃতিশাস্ত্র ও আচার শাস্ত্রের বিরুদ্ধ পথে অন্যের দ্বারা নিপীড়িত হয়ে যদি কেউ প্রতিকারের আশায় বিচারের জন্য রাজার কাছে আবেদন করে তবে সেটি ব্যবহার অর্থাৎ মোকদ্দমার বিষয় হয়।
২১) চতুষ্পাদ ব্যবহারোঅয়ং বিবাদেষু প্রদর্শিতঃ- ব্যাখ্যা কর।
উ:- অভিযোগটি প্রমাণিত হলে অর্থী মামলায় জয়লাভ করে, অন্যথা সে পরাজিত হয়। চতুষ্পাদ ব্যবহার বা বিচারের এইটি নিয়ম। ব্যবহারের চারটি পাদ বা অঙ্গ হল- ভাষাপাদ, ক্রিয়াপাদ, উত্তরপাদ, সাধ্যসিদ্ধিপাদ।
২২) অর্থশাস্ত্রাৎ তুলবদ্ ধর্মশাস্ত্রমিতি স্থিতিঃ- উক্তিটির তাৎপর্য কী?
উ:- স্মৃতিশাস্ত্রদ্বয়ের বিরোধ দেখা দিলে বৃদ্ধ ব্যবহারানুযায়ী উৎসর্গ অপবাদন্যায় বলবান হবে। কিন্তু অর্থশাস্ত্র ও ধর্মশাস্ত্রই বলবানবলে গণ্য হবে। ধর্মের প্রাধান্য ও অর্থের অপ্রাধান্যই ধর্মশাস্ত্রের বলবত্তার কারণ।
২৩) ভাষাপাদ কী?
উ:- ব্যবহারের যে অংশে অর্থী স্বয়ং উপস্থিত হয়ে প্রত্যর্থীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে তাকে ভাষাপাদ বলে।
২৪) উত্তরপাদ বলতে কী বোঝ?
উ:- ব্যবহারের যে অংশে অর্থীর আবেদনের প্রত্যুত্তরে প্রত্যর্থী স্বপক্ষ সমর্থনের প্রমাণ দাখিল করে তাকে উত্তরপাদ বলে।
২৫) ক্রিয়াপাদটি কী?
উ:- ব্যবহারের ক্রিয়াপাদ অংশে প্রত্যর্থীর জবাবে অর্থী অভিযোগের অনুকূলে প্রমাণ দাখিল করে।
২৬) সাধ্যসিদ্ধি পাদ কথার অর্থ কী?
উ:- সাধ্যসিদ্ধি পাদ কথার অর্থ হল- দাখিল করা প্রমাণের দ্বারা অভিযোগটি প্রমাণিত হলে অর্থীর সিদ্ধিলাভ অর্থাৎ জয় ঘোষিত হয়।
২৭) ঋণাদান কথাটির অর্থ কী?
উ:- উত্তমর্ণ কর্ত্তৃক অধমর্ণকে যত প্রকার ঋন দেওয়া হয়েছে সে সবের আদায়কে ঋণাদান বলে। ঋণ আদান অর্থাৎ আদায় করাই ঋণাদান।
২৮) যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতায় মোট কত শ্লোক আছে?
উ:- যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতায় মোট প্রায় একসহস্র শ্লোক আছে।
২৯) সভাসদ গন লোকাচারবিরুদ্ধ বা শাস্ত্রবিরুদ্ধ আচরন করলে তার শাস্তি কী? অথবা, প্রাডবিবাক পক্ষপাতদুষ্ট হলে রাজার কর্তব্য কী?
উ:- আচার্য যাজ্ঞবল্ক্যের মতে সভাসদ্ গন যদি অত্যধিক স্নেহ,লোভ বা ভয়বশত স্মৃতিশাস্ত্র অথবা লোকাচার বিরুদ্ধ কর্ম করেন তবে রাজা তাদের প্রত্যেককে পৃথক পৃথক ভাবে বিবদমান বিষয়ের দ্বিগুন অর্থ দণ্ডে দণ্ডিত করবেন।
‘সভ্যাঃ পৃথক্ পৃথক্ দণ্ড্যা বিবাদদ্ দ্বিগুনং দমম্।’
যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা: ব্যবহারাধ্যায় – সাধারন ব্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ হতে অন্যান্য প্রশ্ন গুলি
- যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা: ব্যবহারাধ্যায় – সাধারন ব্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ ব্যাখ্যা-8
- যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা: ব্যবহারাধ্যায় – সাধারন ব্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ ব্যাখ্যা-7
- যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা: ব্যবহারাধ্যায় – সাধারন ব্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ ব্যাখ্যা-6
- যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা: ব্যবহারাধ্যায় – সাধারন ব্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ ব্যাখ্যা-5
- যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা: ব্যবহারাধ্যায় – সাধারন ব্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ ব্যাখ্যা-4
- যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা: ব্যবহারাধ্যায় – সাধারন ব্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ ব্যাখ্যা -3
- যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা: ব্যবহারাধ্যায় – সাধারন ব্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ ব্যাখ্যা – 2
- যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা: ব্যবহারাধ্যায় – সাধারন ব্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ ব্যাখ্যা-1
- যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা: যাজ্ঞবল্ক্যকে অনুসরন করে ঋণাদান ও বৃদ্ধি সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা
- যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা: চতুষ্পাদ ব্যবহার
- যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা: সাক্ষী বিষয়ে যাজ্ঞবল্ক্যের মতামত আলোচনা
- যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা: ব্যবহারাধ্যায় – সাধারন ব্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ ছোট প্রশ্ন ও উত্তর
- যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা: ব্যবহারাধ্যায় – সাধারন ব্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্