যাজ্ঞবল্ক‍্যসংহিতা: ব‍্যবহারাধ‍্যায় – সাধারন ব‍্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ ব‍্যাখ‍্যা-7

যাজ্ঞবল্ক‍্যসংহিতা ব‍্যবহারাধ‍্যায় সাধারন ব‍্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ ব‍্যাখ‍্যা -7

যাজ্ঞবল্ক‍্যসংহিতা ব‍্যবহারাধ‍্যায় সাধারন ব‍্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ ব‍্যাখ‍্যা -7

ব্যবহারান্নৃপঃ পশ‍্যেদ্ বিদ্বদ্ভিঃ ব্রাহ্মণৈঃ সহ।
ধর্মশাস্ত্রানুসারেণ ক্রোধলোভাবিবর্জিতঃ।।”

অনুবাদ:-

বিভিন্নশাস্ত্রে সুপন্ডিত বিদ্বান্ ব্রাহ্মণ গণের সহিত ধর্ম শাস্ত্রের বিধান অনুসারে রাজা ক্রোধ ও লোভ বিসর্জন দিয়ে ব্যবহার দর্শন অর্থাৎ বিবাদের বিচার করবেন।

উৎস:-

আচার্য যাজ্ঞবল্ক‍্য রচিত যাজ্ঞবল্ক‍্যসংহিতার ব‍্যবহারাধ‍্যায়ে ব্যবহার দর্শন প্রসঙ্গে রাজা কর্তব্য সম্পর্কে আলোচ্য শ্লোকটির অবতারনা করা হয়েছে।

ব‍্যাখ‍্যা

রাজাসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর রাজার প্রথম ও প্রধান কর্তব্য হলো সুষ্ঠুভাবে প্রজা পালন করা। প্রজা পালনেই হলো রাজার পরম ধর্ম। ব্যবহার দর্শন ব্যতীত দুষ্ট দমন অসম্ভব। সেই কারণে আচার্য যাজ্ঞবল্ক‍্য ব্যবহার অধ্যায়ের প্রারম্ভেই বিচার ব্যবস্থার জন্য রাজাকে পরামর্শ দিয়েছেন।

বিদ্বান ব্রাহ্মণগনের সঙ্গে রাজা বিচার ব্যবস্থা পরিচালনা করবেন। আচার্য বিজ্ঞানেশ্বর তার মিতাক্ষরা টীকায় ব্যবহারের সংজ্ঞা নিরূপণ প্রসঙ্গে বলেছেন- “অন‍্যবিরোধেন সাত্মসম্বন্ধিতয়াকথনং ব‍্যবহারঃ।” অর্থাৎ অন্যের উক্তির বিরোধিতা করে নিজের সম্বন্ধে কিছু বলাই ব্যবহার। যেমন একজন বলল এই জমিটি আমার, সঙ্গে সঙ্গে অন্যজন তার বিরোধিতা করে বলল না এ জমিটি তোমার নয়, আমার। উভয়ের মধ্যে এরূপ বিবাদের নিষ্পত্তি যে উপায়ে সাধিত হয় তাকে বলে ব্যবহার।

ব‍্যবহার শব্দের বুৎপত্তি নির্ণয় করতে গিয়ে আচার্য কাত‍্যায়ণ বলেছেন-

“বিনানার্থে অব সন্দেহে হরণং হার উচ‍্যতে।
নানাসন্দেহ হরণাৎ ব‍্যবহার ইতি স্মৃতঃ।।”

অর্থাৎ বি এর অর্থ নানা অব এর অর্থ সন্দেহ, হার শব্দের অর্থ হরণ। যে উপায়ে নানা প্রকার সন্দেহ দূর করা যায় তাকে ব‍্যবহার বলে।

ব‍্যবহার প্রয়োগ বিষয়ে যাজ্ঞবল্ক‍্যের মত হল -বিদ্বদ্ভিঃ ব্রাহ্মণৈঃ সহ অর্থাৎ বেদজ্ঞ, ব্যাকরণ, ধর্মশাস্ত্রাদিতে অভিজ্ঞ বিদ্বান্ ব্রাহ্মণগণের সঙ্গে রাজা স্বয়ং ব্যবহার দর্শন করবেন। রাজার ব্যবহার দর্শন প্রসঙ্গে যাজ্ঞবল্ক‍্য বলেছেন-

” ধর্মশাস্ত্রানুসারেণ ক্রোধলোভবিবর্জিতঃ।”

অর্থাৎ ধর্ম শাস্ত্রানুসারে ক্রোধ ও লোভ বর্জন করে রাজা বিচার কার্য সম্পাদন করবেন।

Comments