বিভাবনা ও বিশেষোক্তি আলঙ্কারের পার্থক্য আলোচনা করো । অলংকার প্রসঙ্গে আলোচনার পর নিম্নে বিভাবনা ও বিশেষোক্তি আলঙ্কারের পার্থক্য আলোচিত হল ।
বিভাবনা ও বিশেষোক্তি আলঙ্কারের পার্থক্য
অলংকার কি বা অলংকার সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য জানতে এখানে ক্লিক করুন ।
বিভাবনা ও বিশেষোক্তি আলঙ্কার
‘বিভাবনা অলংকারের লক্ষণ
‘সাহিত্যদর্পন’ গ্রন্থে বিশ্বনাথ কবিরাজ মহোদয় বিভাবনা অলংকারের লক্ষণে বলেছেন-
“বিভাবনা বিনা হেতুং কার্যোৎপত্তির্যদুচ্যতে।” অর্থাৎ প্রসিদ্ধ কারণের অভাবে কার্যোৎপত্তি বর্ণিত হলে বিভাবনা অলংকার হয়।
বিশেষোক্তি অলংকারের লক্ষণ
অপরপক্ষে, ‘সাহিত্যদর্পন’ গ্রন্থে বিশ্বনাথ কবিরাজ বিশ্বশক্তি অলংকারের লক্ষণে বলেছেন-
“সতি হেতৌ ফলাভাবো বিশেষোক্তি।”
অর্থাৎ, প্রসিদ্ধ কারণের উপস্থিতি সত্ত্বেও যদি কার্যের অভাব কথিত হয়, তাহলে বিশেষোক্তি অলংকার হয়।
বিভাবনা ও বিশেষোক্তি দুটিই হেতু গঠিত অলংকার এবং দুটিই বিরোধমূলক অলংকার।
বিভাবনা অলংকারে প্রসিদ্ধ কারণের অভাব সত্ত্বেও কার্যের উৎপত্তি বর্ণিত হয়। সুতরাং বিনা কারণে কার্য উৎপত্তির কল্পনাবশতঃ বিভাবনা হলো কার্যের সঙ্গে কারণের একটি বিরোধমূলক অলংকার।
যেমনঃ-
“অভূষনমনোহারি বপুর্বয়সিসুভ্রুবঃ।”
এখানে দেহ সৌন্দর্যের প্রসিদ্ধ কারণ যে অলংকার তার অভাবেও যুবতির শরীর মনোহর হয়েছে। এভাবে কারনের অভাবে কার্যোৎপত্তি বর্ণিত হওয়ায় বিভাবনা অলংকার হয়েছে।
অপরপক্ষে বিশেষোক্তি অলংকার হল বিভাবনার সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী। এখানে প্রসিদ্ধ কারণ এর উপস্থিতি সত্ত্বেও কার্যের অভাব কথিত হয় এবং তার দ্বারা বর্ণ বর্ণনীয় বিষয়ের বিশেষ উৎকর্ষ বর্ণিত হয়। সুতরাং এটি কারনের সঙ্গে কার্যের বিরোধমূলক অলংকার।
যেমনঃ-
“ধনিনোঅপি নিরুন্মাদা যূবানোঅপি ন চঞ্চলা।”
এখানে ধনও যৌবনরূপ কারণ থাকা সত্ত্বেও উন্মত্ততা চঞ্চলতারূপ কার্য না ঘটায় বিশেষোক্তি অলংকার হয়েছে। তাছাড়া বিভাবনা অলংকারে কারণাভাব এতদ্বারা বাধিত হয়। কিন্তু বিশেষোক্তি অলংকারে কার্যাভাবটি বাধিত রূপে প্রতীয়মান হয়।
কতকগুলি অলংকার সম্পর্কে আলোচনা করা হল –
- উৎপ্রেক্ষা অলংকার
- পরিণাম অলংকার
- দৃষ্টান্ত অলংকার
- শ্লেষ অলংকার
- উপমা অলংকার
- রূপক অলংকার
- নিদর্শনা অলংকার
- তুল্যযোগিতা অলংকার
- সমাসোক্তি অলংকার
- অর্থান্তরন্যাস অলংকার
- দীপক অলংকার