শেষ:- পাণিনী ব্যাকরণের অন্যতম পারিভাষিক শব্দ হল শেষ। পাণিনী তার দুটি সূত্রে এই শেষ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। ষষ্ঠী শেষে(কারক প্রকরণে) এবং শেষো বহুব্রীহিঃ (সমাস প্রকরণে) শেষ শব্দের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে দীক্ষিত ষষ্ঠী শেষে এই সূত্রের ভাষ্য লিখেছেন-
‘কারক প্রাতিপদিকার্থ ব্যাতিরিক্ত সস্বামীভাবাদি সম্বন্ধ শেষঃ।
অর্থাৎ কারক সম্বন্ধ ছাড়া এবং প্রাতিপদিকের অর্থ ছাড়া সস্বামীভাব প্রভৃতি যে সম্বন্ধ তা শেষ। সাধারনভাবে শেষ শব্দের অর্থ অবশিষ্ট -উক্তাদন্যঃ শেষঃ। অর্থাৎ যা বলা হয়নি বা বলতে বাকী আছে তাকে শেষ বলে। পাণিনী ব্যাকরণে ষষ্ঠী বিভক্তি অন্য সব বিভক্তির শেষে আলোচিত হয়েছে। তাই তিনি সূত্র করেছেন- শেষে ষষ্ঠী। প্রথমাদি অন্য ৬টি বিভক্তি। যেখানে ব্যবহার হয়েছে সেই সেই ক্ষেত্র ছাড়া অন্যত্র ষষ্ঠী বিভক্তি হয়েছে।
বস্তুতঃ শেষ শব্দে সাধারন সম্বন্ধকে বোঝায়। স্বার্থে প্রাতিপদিকার্থে প্রথমা হয়। আর যদি প্রাতিপদিকার্থে প্রথমা হয়। আর যদি প্রাতিপদিক ক্রিয়াপদিক ক্রিয়াপদের সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত হয়ে ব্যবহৃত হয়, তাহলে কর্ম করণ প্রভৃতি কারক সংজ্ঞা প্রাপ্ত হয়। এবং তার সঙ্গে দ্বিতীয়া প্রভৃতি পাঁচটি কারক বিভক্তি হয়। এতদ্ ব্যাতিরেক স্থলে অর্থাৎ প্রাতিপদিকের সঙ্গে প্রাতিপদিকের এবং প্রাতিপদিকের সঙ্গে সাধারন সম্বন্ধ হলে তা শেষ নামে অভিহিত হয়।
অর্থাৎ শেষ রূপ যে সাধারন সম্বন্ধ তা কারক সম্বন্ধ নয়। প্রাতিপদিকও নয়। যেমন- রাজ্ঞঃ পুরুষঃ – এক্ষেত্রে রাজন্ ও পুরুষের স্ব-স্বামীভাব রয়েছে। তাই ষষ্ঠী হল শেষে ষষ্ঠী।
সমাস প্রকরণের অন্তর্গত শেষো বহুব্রীহিঃ সূত্রেও পাণিনী শেষ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। এখানেও শেষ শব্দের অর্থ অবশিষ্ট স্থল। সমাসের সূত্রে প্রথমা ছাড়া অন্য সব বিভক্তিরই বিশেষ উল্লেখ পূর্বক সমাস বিহিত হয়েছে। যেমন- দ্বিতীয়া তৎপুরুষ, তৃতীয়া তৎপুরুষ, কেবল প্রথমা বিভক্তিরই বিশেষ উল্লেখ করে কোন সমাস বলা হয় না। উক্ত সূত্রে শেষ বলতে প্রথমান্ত পদকে বোঝায়। বহুব্রীহি প্রথমান্ত পদের সমাস এই তথ্য জানানোই শেষ শব্দ প্রয়োগের উদ্দেশ্য।