রঘুবংশম্ মহাকাব্যে ত্রয়োদশ সর্গ অনুসারে নিম্নের প্রশ্ন টি আলোচনা করা হল। অত্রিমুনি কে ছিলেন? তাঁর পত্নীর নাম কী? রঘুবংশম্ মহাকাব্যের ত্রয়োদশ সর্গ অনুসারে অত্রিমুনির আশ্রমের বর্ণনা দাও।
রঘুবংশম্ মহাকাব্যের ত্রয়োদশ সর্গ – বড় প্রশ্ন অত্রিমুনির আশ্রমের বর্ণনা
অত্রিমুনি কে ছিলেন?
উঃ- সপ্তঋষির অন্যতম হলেন অত্রিমুনি। তিনি তপস্যার প্রভাবের দ্বারা মনোজ্ঞ তপবন রচনা করে বাস করছেন। এই তপবনটি হল চিত্রকূট পর্বতের সন্নিকটে এবং যার নিকট মন্দাকিনী নদী প্রবাহিত হয়েছে।
অত্রিমুনির পত্নীর নাম কী?
অত্রিমুনির পত্নীর নাম অনসূয়া। তার তপস্যার প্রভাব আশ্রমে দৃষ্ট হয়।
অত্রিমুনির আশ্রমের বৈশিষ্ট্য
মহাকবি কালিদাস রামায়ণের কাহিনী অবলম্বন করে প্রকৃতির রং মিশিয়ে রঘুবংশম্ মহাকাব্যটি বর্ণনা করেছেন। এই মহাকাব্যের একাদশ সর্গে রামচন্দ্র সীতাকে সঙ্গে নিয়ে পুষ্পক বিমানে চড়ে অযোধ্যা প্রত্যাবর্তনকালে রামচন্দ্র সীতাকে অত্রিমুনির আশ্রমের বর্ণনা করেছেন।
এই আশ্রমটি অতি পবিত্র স্থান যেখানে প্রাচীন আশ্রমের মূল স্বরূপ হিংসা, পাপ, বিলাসিতা প্রবেশ করা নিষিদ্ধ। সেখানে বিরাজ করে সত্য, সত্যসংযম, পবিত্রতা।
অত্রিমুনির আশ্রমের বর্ণনা
চিত্রকূট পর্বত এর কাছে অত্রি মুনির আশ্রম যার সন্নিকটে বয়ে চলে মন্দাকিনী নদী। যার প্রবাহ নির্মল ও নিশ্চল।এখানে প্রাণীরা নির্ভয় বাস করে অর্থাৎ হিংসা এই আশ্রমে প্রবেশ করতে পারে না।
অত্রিমুনির তপস্যার প্রভাব
অত্রিমুনির তপস্যার প্রভাব আশ্রম এর প্রতি স্থানে দৃষ্ট হয়। তার তপস্যার প্রভাবে প্রাণীরা হিংসা ত্যাগ করে একত্রে বাস করে। এছাড়া পশুদের প্রতি কোনো অত্যাচার করা হয় না। তবুও পশুগণ হিংসা থেকে বিরত থাকে। প্রকৃতির নিয়মে শান্তভাব বিরাজ করে। কিন্তু এখন দন্ডের ভয় ছাড়াই প্রাণীরা হিংসা বর্জিত।
প্রকৃতির নিয়মে ফুল ফোটার ফল উৎপন্ন হয়। কিন্তু অত্রিমুনির তপবনে তপস্যার প্রভাবে ফুলের জন্য অপেক্ষা না করে গাছে গাছে ফল উৎপন্ন হয়। অর্থাৎ আশ্রমের বৃক্ষ গুলি ফুল ছাড়াই ফল ধারণ করে।
অনসূয়ার প্রভাব
অনসূয়া হলেন অত্রি মুনির পত্নী। তিনি একজন মহাতপস্বী। পূর্বে একবার অনাবৃষ্টিতে সমস্ত পৃথিবী দগ্ধ হয়েছিল। তখন তারই তপস্যার প্রভাবে মন্দাকিনী নদীতে স্বর্ণ কমল ফুটে ছিল। সেই স্বর্ণ পদ্মগুলি সপ্তর্ষিরা নিজ হাতে চয়ণ করেন। তিনি মুনিগনের স্নানের অসুবিধার জন্য তপস্যার প্রভাবের দ্বারা গঙ্গা নদীকে আশ্রমের পাশ দিয়ে প্রবাহিত করেছিলেন।
তপোবনের ধ্যানমগ্নস্বরূপ
আশ্রমের ঋষিগণ বিরাসনে ধ্যান মগ্ন থাকে। বিরাসন হল ধ্যান এর এক আসন। সেই ধ্যানমগ্ন ঋষিদের বায়ুর প্রভাবে নিশ্চল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি বৃক্ষের মতো শোভা পায়। এ থেকে বোঝা যায় তপবনে ধ্যান,সপি প্রভৃতি কর্ম সংঘটিত হয়।
উপসংহার
মহাকবি কালিদাস নির্গুণ লেখনিতে প্রাচীন ভারতের আশ্রমের এক অপরূপ চিত্র। রামচন্দ্রের মুখ দিয়ে তুলে ধরেছেন। এই অপূর্ব চিত্র সমগ্র পাঠককে মুগ্ধ করে।
আরো পড়ুন
- রঘুবংশম্: ত্রয়োদশ সর্গ হতে ছোট প্রশ্ন উত্তর
- রঘুবংশম্: গঙ্গা যমুনা সঙ্গমের অপূর্ব চিত্র
- রঘুবংশম্ মহাকাব্যে ত্রয়োদশ সর্গ অনুসারে অত্রিমুনির আশ্রমের বর্ণনা
- রঘুবংশম্ মহাকাব্যে ত্রয়োদশ সর্গে বর্ণিত সমুদ্রের শোভা ও মাহাত্ম্য বর্ণনা