ভাষাতত্ত্ব হতে হিট্টীয় ভাষা সম্পর্কে আলোচনা বা টিকা রচনা করা হল ।
হিট্টীয় ভাষা টিকা
১৮৯৩ খ্রীস্টাব্দ থেকে ১৯০৭ খ্রীস্টাব্দ ব্যাপি খননকার্যের ফলে এশিয়া মাইনরের নিকটবর্তী বোগাজ কোইতে এই ভাষার কিছু লেখ্য নিদর্শন এবং প্রত্নবস্তু আবিস্কার করেন। অধিকাংশ প্রত্নলিপিগুলি বাণমুখ বা কীলকাক্ষরে রচিত।
আধুনিক অনেক পণ্ডিতের মতে হিট্টীয় ভাষা মূল ইন্দো- ইউরোপীয় ভাষারই অংশ। যদিও সংস্কৃত, গ্রীক প্রভৃতির তুলনায় অনেক প্রাচীন। কিন্তু অনেকে আবার মনে করেন এই ভাষা মূল ইন্দো-ইউরোপের ভগিনী স্থানীয়। এবং নিশ্চয় একই মূল ভাষার ইন্দো-হিট্টহিট এর বিভিন্ন উপভাষা সমেত দুটি সন্ততি। এই ভাষার আশচর্য রকমের সরলতা এবং ক্ষয় দেখে আধুনিক পণ্ডিতগণ মনে করেন এই ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা বর্গের চেয়ে অনেক প্রাচীন।
হিট্টীয় ভাষার বৈশিষ্ট্য
এই ভাষার বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ-
- ১) পুংলিঙ্গ ও স্ত্রীলিঙ্গের পার্থক্য না থাকায় সচেতন ও অচেতন এই লিঙ্গ ভেদ।
- ২) ছয়টি কারক (কর্তৃ, কর্ম, করণ, সম্প্রদান, অপাদান ও সম্বন্ধ ) তবে অধিকাংশ স্থলে চতুর্থী ও সপ্তমীর (একবচন) সমীকৃত। দ্বিবচন লুপ্ত, শব্দরূপ বহুবচনেও প্রায় লুপ্ত। ষষ্ঠীর বিভক্তির ‘s’ তুলনীয় সংস্কৃত।
- ৩) হিট্টীয় ভাষায় মহাপ্রাণ ব্যঞ্জন বর্ণের অভাব।
- ৪) দুই জাতীয় ধাতু বিভাগ -যা বর্তমান কালে উত্তম পুরুষের এক বচনে দুইটি বিভাগ mi এবং ni এর প্রয়োগ এক বচনে দুইটি বিভাগ mi এবং ni এর প্রয়োগ অনুযায়ী বিভক্ত।
- ৫) কর্ম -কর্তৃবাচ্যে r ধ্বনির অস্তিত্ব ইতালিয় কেলাতক, আর্য এবং তুখারীয় ভাষায় মতো। তুলনীয় সংস্কৃত শেরতে, অশেরত্।
- ৬) এর মোট স্বরবর্ণ (a,e,i,u কিন্তু o নয়। ) এর অন্যান্য স্বরধ্বনিগত বৈশিষ্ট্য – দীর্ঘ স্বরধ্বনি হ্রস্বে পরিণত হয়। e/i ধ্বনির বিপর্যয় এবং I.U*r > ar, ur ইত্যাদি।
Comments