সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ – সংজ্ঞা শব্দের ব্যুৎপত্তি, কয়েকটি বিষয়ের সংজ্ঞা ও উদাহরণ দেওয়া হল

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ

Table of Contents

এই সংজ্ঞা শব্দের ব্যুৎপত্তি ,সংজ্ঞা কাকে বলে? কয়েকটি সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ উদাহরণ প্রদত্ত হল

সংজ্ঞা শব্দের ব্যুৎপত্তি কি?

সম্- Vজ্ঞা + অ + স্ত্রীয়াম্ আপ্ । সম্যক্ জ্ঞায়তে অনয়া ইতি সংজ্ঞা অর্থাৎ যার দ্বারা কোন বিষয়ে সম্যক জ্ঞান হয় তাকে সংজ্ঞা বলে ।

সংজ্ঞা কাকে বলে?

যার দ্বারা কোন বিষয়ের স্বরূপ সম্পর্কে বিশেষভাবে জানা যায় তাকে সংজ্ঞা বলে।

নিম্নলিখিতগুলাের কয়েকটি সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ উদাহরণ প্রদত্ত হল

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ- আদেশ

প্রকৃতি বা প্রত্যয়ের কিংবা তার কোন অংশের যে রূপ পরিবর্তন হয়, তাকে বলা হয় আদেশ। যেমন- লট বিভক্তিতে স্থা- ধাতুর স্থানে ‘তিষ্ঠ’ (তিষ্ঠতি, তিষ্ঠতঃ, তিষ্ঠন্তি ইত্যাদি) এবং দৃশ ধাতু স্থানে ‘পশ্য’ (পশ্যতি, পশ্যতঃ, পশ্যন্তি) ইত্যাদি হয়। আবার বৃদ্ধ শব্দ স্থানে আদেশ হয় ‘জ্য’ (বৃদ্ধ > জ্যেষ্ঠ)।

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ- আগম

আগম শব্দটির অর্থ ‘আগমন করা’। প্রকৃতি বা প্রত্যয়ের সঙ্গে অতিরিক্ত বর্ণের আগমন বা উপস্থিতিকে আগম বলে। যেমন – বনস্পতি শব্দে বন’ ও ‘পতি’ শব্দের মধ্যে অতিরিক্ত বর্ণ ‘স্ এর উপস্থিতিকে বলা হয় আগম।

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ- গুণ

স্বরের গুণ বলিতে ই ঈ স্থানে এ, উ উ স্থানে ও, ঋ, স্থানে অবু, ৯ স্থানে অল্ বােঝায়। সূত্র-অদেঙ্ গুণঃ, (১.১.২), উরন্ রূপরঃ (অর্, অল্) সন্ধি ও কৃৎ প্রত্যয়যােগের ক্ষেত্রে গুণ বিধানের প্রয়োজন অনুভূত হৱ। যেমন জি = জে, ভী = ভে, কৃ = ক, কু= কল।

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ- বৃদ্ধি

বৃদ্ধি—আ ঐ ঔ আর্ আল্ – ইহাদিগকে বৃদ্ধি সংজ্ঞা বলে । অ স্থানে আ; ই ঈ, স্থানে ঐ; উ, উ স্থানে ঔ; ঋ, খৃ স্থানে আর্ এবং ৯ স্থানে আল্ হওয়াকে বৃদ্ধি বলে। সূত্র—বৃদ্ধিরদৈচ্ (১.১.১)। সন্ধি ও তদ্ধিতে বৃদ্ধির কার্য হয়। যেমন- মনু + অণ = মানবঃ। বিধি + অণ = বৈধঃ। নীতি + অক = নৈতিকঃ । মুখ + অক = মৌখিকঃ (উ = ঔ), শীত + ঋতঃ = শীতার্তঃ (ঋ = আর্)।

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ- উপধা

কোন শব্দের শেষবর্ণের ঠিক পূর্ববণটিকে উপধা ( Pen ultimate) বলে। সূত্র –“অলােহ্যাৎ পূর্ব উপধা” (১. ১. ৬৫)। যেমন- ‘লতা’ একটি শব্দ। এই শব্দের শেষ বর্ণ আ এবং আ এর পূর্ববর্তী বর্ণ ‘ত। সুতরাং ত’ একটি উপধা। গুণিন্ শব্দের ন্ এর পূর্ববর্তী ই-কার উপধা।

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ- টি

শব্দের শেষের স্বরবর্ণকে অথবা শেষে ব্যঞ্জনবর্ণ থাকিলে সেই ব্যঞ্জনবর্ণ সমেত তাহার ঠিক পূর্ববতী স্বরকে লইয়া একসঙ্গে টি বলা হয়। সূত্র-অচোহন্ত্যাদি টি (১,১,৬৪)। লতা শব্দের শেষের আ টি হয়। রাজন্ শব্দের শেষের অন্ অংশটি টি।

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ- ইৎ

কোনও কার্যের জন্য যে বর্ণ উচ্চারিত হয়, কিন্তু কার্যকালে থাকে না, তার নাম ইৎ যথা,– অণ্’ বললে অ, ই, উ এই তিন বর্ণকে বােঝায়, ণ্ কে বােঝায় না। ণ্ কেবল অণ্’–এই সংজ্ঞা নির্দেশ করার নিমিত্ত ব্যবহৃত; এখানে ণ্ ‘’ ইৎ। এতি গচ্ছতি ন তিষ্ঠতীতি ইৎ। তস্য কার্যেহনুচ্চারঃ।

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ- পদ

“সুপ্ তিঙন্তং পদম্ (১.৪.১৪)। সুপ্ প্রত্যয়ান্ত ও তিঙ্ প্রত্যয়ান্ত শগুলিকে পদ বলে।সুপ্ ও তিঙ্ যুক্ত শব্দকে পদ বলে। অব্যয়ে বিভক্তির চিহ্ন থাকে না। কিন্তু উহারা পদ। যেমন- নর একটি শব্দ। এর সঙ্গে ঔ -এই সুপ্ বা শব্দবিভক্তি যুক্ত হয়ে নরৌ পদ গঠিত হয়েছে। আবার বদ্ একটি ধাতু। এর সাথে ‘তি এই তিঙ্ বা ক্রিয়াবিভক্তি যুক্ত হয়ে গঠিত হয়েছে বদতি’ পদ।

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ- সুপ

যে সমস্ত বিভক্তি শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে পদ গঠন করে, তাদের বলা হয় সুপ। সুপ্ -এর অন্য নাম শব্দবিভক্তি। যেমন নর’ একটি শব্দ। এর সাথে ঔ বিভক্তি যুক্ত হয়ে নরৌ’ পদ গঠিত হয়েছে। সুতরাং ‘ঔ’ একটি শব্দ বিভক্তি। আবার লতা একটি শব্দ। এর সঙ্গে ভিস্ (ভিঃ) বিভক্তি যুক্ত হয়ে ‘লতাভি’ পদ গঠিত হয়েছে। সুতরাং ভিস্ (ভিঃ) একটি শব্দবিভক্তি। .

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ- তিঙ্

যে সব বিভক্তি ধাতুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্রিয়াপদ গঠন করে সেগুলােকে তি’ বলে। তিঙ্ -এর অন্য নাম ক্রিয়াবিভক্তি। যেমন- ‘পঠ্’ একটি ধাতু- এর সঙ্গে তিঙ্ বিভক্তি যুক্ত হয়ে পঠতি ক্রিয়াপদটি গঠিত হয়েছে। আবার ‘হস্’ একটি ধাতু এর সঙ্গে ‘তু’ যুক্ত হয়ে হসতু’ ক্রিয়াপদ গঠিত হয়েছে। সুতরাং ‘তি’ ও ‘তু তি বা ক্রিয়াবিভক্তি।

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ- প্রকৃতি

মূল শব্দকে বলে প্রকৃতি। অর্থাৎ শব্দ ও ক্রিয়ার মূলকে প্রকৃতি বলে। ইহা দুই প্রকার। ধাতু ও প্রাতিপদিক। যেমন- দেহ + অক্ = দৈহিকঃ। এখানে দৈহিক শব্দটির মূল দেহ। সুতরাং দেহ একটি প্রকৃতি। আবার পঠ + তি – পঠতি। এখানে ‘পঠতি ক্রিয়ার মূল ‘পঠ্’ । সুতরাং পঠ্ ও একটি প্রকৃতি।

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ- প্রাতিপদিক

যা ধাতুও নয়, প্রত্যয়ও নয়, অথচ যার অর্থ আছে তার নাম প্রাতিপদিক। যেমন- চন্দ্র, সূর্য, লতা, বৃক্ষ ইত্যাদি। “অর্থবদধাতুর প্রত্যয়: প্রাতিপদিক” (১.২.৪৪)। প্রতিটি সুবন্ত পদের ইহা মূল প্রকৃতি। অন্যান্য ব্যাকরণে যাহাকে নাম বা শব্দ বলা হয়, পাণিনির ব্যাকরণে উহা প্রাতিপদিক । কিন্তু, কৃদন্ত, তদ্ধিতান্ত ও সমাসবদ্ধ শব্দও প্রাতিপদিক। সূত্র-“কত্তদ্ধিতসমাসশ্চ” (১.২.৪৬)।

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ- প্রত্যয়

প্রকৃতির পরে বিশেষ বিশেষ বিধিবশতঃ যা যােগ করা হয়, তাহাকে প্রত্যয় (Suffix) বলে। অর্থাৎ যেসব বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি ধাতুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে শব্দ এবং শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাদের প্রত্যয় বলা হয়। যেমন- পঠ্ + অনট্ = পঠনম্। এখানে ‘পঠ্’ একটি ধাতু। এর সঙ্গে ‘অনট্’ এই বর্ণসমষ্টি যুক্ত হয়ে পঠনম্’ শব্দটি গঠিত হয়েছে। সুতরাং ‘অনট্’ একটি প্রত্যয়। আবার পৃথিবী + অণ্ = ‘পার্থিব’। এখানে ‘পৃথিবী’ একটি শব্দ। এর সঙ্গে অণ্ প্রত্যয় যুক্ত হয়ে ‘পার্থিব’ এই নতুন শব্দ গঠিত হয়েছে। সুতরাং ‘অণ্’ আরেকটি প্রত্যয়।

কৃৎ প্রত্যয়

ধাতুর উত্তর তিঙ্ বিভক্তি অর্থাৎ তস্ ইত্যাদি ভিন্ন নানাবিধ অর্থ বােঝাইতে যে সব প্রত্যয় ঘােগ করা হয়, তাহাকে কৃৎপ্রত্যয় বলে ( Primary Suffix)। তুমুন্, ক্ত, ল্যপ্, তব্য, অনীয়, ল্যুট্ ঘঞ্, ইত্যাদি কৃৎ প্রত্যয়। সূত্র-কৃদতিঙ্ (৩.১.৬৩)।

তদ্ধিত প্রত্যয়

শব্দ বা প্রাতিপদিকের উত্তর সুপ, (সু ঔ জস্ ইত্যাদি) ভিন্ন শিষ্ট প্রয়ােগ অনুসারে যে সকল প্রত্যয় বিহিত হয়, তাকে তদ্ধিত বলে (Secondary Suffix)। এ ইহার অপত্য (পুত্র কন্যা) এইরূপ অর্থে, বা তাহার ইনি বা ইহা তাহার আছে—এমন সব নানা বিশিষ্ট অর্থে তদ্ধিত প্রত্যয় হয়। যথা, অণ্ ঢক্ তল্ ইমন্ ইত্যাদি। তদ্ধিত প্রত্যয়ের ন্ ঞ্ চ্ প্রভৃতি ‘ইৎ’ হয়, অর্থাৎ লুপ্ত হয়, ফলে আদিষরের বৃদ্ধি হয়। যেমন পুত্র+অণ্ =পৌত্র (আদি স্বর ‘উ’-কারের বৃদ্ধি ঔ হইল)। কৃপণ+ষ্যঞ্ =কার্পণ্য (ঋ-এর বৃদ্ধি আর্ হইল)।

কৃত্য প্রত্যয়

তব্য, অনীয়, যৎ, ণ্যৎ, ক্যপ্ প্রভৃতিকে কৃত্য-প্রত্যয় বলে। কৃ+তব্য=কর্তব্য, ভৃ+ক্যপ=ভৃত্য।

সম্প্রসারণ

য্, ব্, র্, ল্ অক্ষরগুলিতে অংশতঃ স্বরবর্ণের ধর্ম আছেএবং ইহারা অর্ধস্বর (Semi Vowel ) । এ সম্বন্ধে পূর্বে বলা হইয়াছে। য্, ব্, র্, ল্-এই অর্ধস্বরগুলিকে পুরােপুরি স্বরবর্ণে পরিণত করিয়া যথাক্রমে ই উ ঋ ৯ করা হইলে সম্প্রসারণ করা বলে। সূত্র -ইগ্ যণঃ সম্প্রসারণম্ (১.১.৪৫)।

সবর্ণ

যেসব বর্ণের উচ্চারণ-স্থান এবং উচ্চারণ-প্রযত্ন অভিন্ন, তারা পরস্পর সবর্ণ (liomogeneous letters) বলে অভিহিত। তুল্যাস্য প্রযত্নং সবর্ণম্ (১.১.৯)। একই উচ্চারণস্থানীয় স্বরবর্ণ সবর্ণ, এবং এইরূপ একই উচ্চারণস্থানীয় ব্যঞ্জনবর্ণ পরস্পর সবর্ণ। অ-বর্ণ অর্থাৎ অ আ সবর্ণ স্বর। ই-বর্ণ অর্থাৎ ই ঈ সবর্ণ। উ-বর্ণ অর্থাৎ উ ঊ সবর্ণ।

ব্যঞ্জনবর্ণের মধ্যে ক-বর্গ, চ-বর্গ, ট-বর্গ, তবর্গ এবং ‘-বর্গ—এদের পাঁচ পাঁচটি বর্ণ পরস্পর সবর্ণ বলে অভিহিত। যথা, ক চ ট ত প এদের সবর্ণ যথাক্রমে ঙ ঞ ণ ন ম। য ব র ল এদের সবর্ণত্ব নেই। দ্রষ্টব্য—কোন স্বরবর্ণ কোন ব্যঞ্জনবর্ণের সবর্ণ হবে না। তালু প্রভৃতি মুখের এক স্থান হইতে এবং একই প্ৰযত্নে উচ্চারিত হইলেও উহারা পরস্পর সবর্ণ নহে। এ বিষয়ে নিষেধসূত্র আছে—নাজ্ ঝলৌ (১.১.১০)। অর্থাৎ অচ্ ও হল্— ইহারা পরস্পর সবর্ণ নহে।

খাতু

ক্রিয়াবােধক ‘ভূ’ প্রভৃতিকে ধাতু (Root) বলা হয়। ‘ভুবাদয়ো ধাতব:(১.৩.১)। ক্রিয়াবাচী ভূ প্রভৃতির ধাতু সংজ্ঞা হয় । পাণিনির ধাতু পাঠে প্রথমেই বলা হয়েছে ভূ সত্ত্বায়াম্ । সত্ত্বা অর্থে ভূ ধাতুর প্রয়োগ হয় । ইহাকে আদি করিয়া ধাতু সকল পঠিত হয়েছে ।

বিভক্তি

সংখ্যাকারকাদিবােধয়িত্ৰী বিভক্তি:— যাহার দ্বারা সংখ্যা ও কারকাদি প্রভৃতি বােঝায় তাহাকে সুপ্ বিভক্তি বলে। বিভক্তি দুই প্রকার। সুপ্ বিভক্তি ও তিঙ্ বিভক্তি। শব্দের উত্তর সু ঔ জস্ প্রভৃতি সুপ্ বিভক্তি ও ধাতুর পরে তি তস্ ঝি (অন্তি) প্রভৃতি তিঙ্ বিভক্তি বসে।

নিপাত

যেমন চ, তু, হ, বা ন, এবম্ আর প্র পরা প্রভৃতি শব্দ—যাহা সাধারণত দ্রব্যবাচী নয়, তাহা নিপাত। সূত্র—‘চাদয়োহসত্ত্বে (১.১.৫৭) প্রাদয়ঃ (১.৪.৫৮ ) —প্র, পরা প্রভৃতি কুড়িটি অব্যয়ও নিপাত । নিপাত শব্দটির চমৎকার অর্থ করিষছেন নিরুক্তকার যাস্ক -“উচ্চাবচেষ্বর্ধেষু নিপতন্তীতি নিপাতা:—অর্থাৎ যে শব্দ গুলি নানাবিধ অর্থে নিপতিত হয়, তাহারাই নিপাত।

অব্যয়

নিপাত এবং স্ব, অন্তর, প্রাত প্রভৃতি শব্দকে অব্যয় বলে (undeclinables)। বিভক্তি ও বচন অনুসারে ইহাদের কোন প্রকার বিকার বা পরিবর্তন হয় না- যন্ন ব্যেতি তদব্যম্।

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ- উপসর্গ

“প্র-পরাপ-সমন্বব নির্দুরভি-ব্যধি সূদতি-নি-প্রতি-পর্যপয়ঃ ।

উপ-আঙিতি বিংশতিরেষ সখে, উপসর্গবিধিঃ কথিতঃ কবিনা।”

প্র, পরা, অপ, সম্, অনু, অব্, নির্(নিস্), দুর্ (দুস্), অভি, বি, অধি সু, উদ্, অতি, নি, প্রতি,পরি অপি,উপ্ (আঙ্), -এই নিপাতগুলি ধাতুর পূর্বে বসিলে তখন তাহাদিগকে উপসর্গ বলে। প্রাদয়ঃ(১.৪.৫৮ ); “উপসর্গঃ ক্রিয়াযােগে (১. ৪. ৫৯), “তে প্রাগধাতো: (১. ৪. ৮০)। এইগুলির উপসর্গ সংজ্ঞা করার ফলে একই ধাতুতে নানা উপসর্গযােগে ধাতুর ভিন্ন ভিন্ন অর্থের বােধ হয়। যেমন—আহার, প্রহার, সংহার, বিহার ইত্যাদি।

গতি সংজ্ঞা

উপসর্গের আরেক নাম গতি ।

কর্মপ্রবচনীয় সংজ্ঞা

উপসর্গগুলির আরেকটি প্রয়োগ পাওয়া যায় তাহার নাম কর্মপ্রবচনীয় । কর্মপ্রবচনীয় হলে আর গতি এবং উপসর্গ সংজ্ঞা থাকে না ।

নদী সংজ্ঞা

ঈ কারান্ত এবং ঊ কারান্ত নিত্য স্ত্রী লিঙ্গ শব্দের নদী সংজ্ঞা হয় । যেমন গৌরী , বধূ ইত্যাদি ।

ঘু সংজ্ঞা

দা ধাতু ও ধা ধাতুর ঘু সংজ্ঞা হয় ।

ভাষিতপুংস্ক

যে সকল শব্দ পুং লিঙ্গ ও স্ত্রী লিঙ্গে একই অর্থ প্রকাশ করে তাহাকে ভাষিতপুংস্ক শব্দ বলে । ইহারা সাধারনত বিশেষণ রূপে প্রযুক্ত হয় ।

নিপাতন

ব্যাকরণের সূত্র অনুযায়ী যে সকল পদ সিদ্ধ করা যায় না , তাহারা নিপাতনে সিদ্ধ ।

সংযোগ

যে সকল যুক্তাক্ষর বিশিষ্ট ব্যঞ্জনবর্ণ ব্যবহৃত হয় তাহাদের সংযোগ সংজ্ঞা হয় ।

লঘু

হ্রস্ব স্বরের লঘু সংজ্ঞা হয় । অ ই উ ঋ ইহার হ্রস্ব স্বর এবং ইহাদের লঘু সংজ্ঞা হয় ।

গুরু

দীর্ঘ স্বরের গুরু সংজ্ঞা হয় । আবার সংযুক্ত বর্ণ পারে থাকিলে পূর্ব স্বর গুরু সংজ্ঞা প্রাপ্ত হয় ।

বিভাষা

যে সকল বিধি বিকল্পে হয় , তাহাদের বিভাষা সংজ্ঞা হয় ।

বহুল

পাণিনির সুত্রে এই শব্দটি নানা অর্থে প্রযুক্ত হয়েছে । যেখানে বহুল শব্দটি প্রয়োগ হয় , সেখানে বুঝিতে হবে যে সূত্রটি কোথায় নিত্য কোথায় অনিত্য এবং কোথায় বিকল্পে প্রযুক্ত হবে ।

অনুবৃত্তি

পূর্ব সূত্রের পরবর্তী সূত্রে গ্রহণের নাম অনুবৃত্তি । ইহা পাণিনি ব্যকরণের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট । এই বিধানের ফলে বহু সুত্র সংক্ষিপ্ত ও বৈজ্ঞানিক উপায়ে প্রযুক্ত হয়েছে ।

নিষ্ঠা

ক্ত এবং ক্তবতু প্রত্যয়কে নিষ্ঠা বলা হয় ।

তরপ ও তমপ প্রত্যয় কে ঘ সংজ্ঞা বলা হয় ।

অসিদ্ধ

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ হতে জিজ্ঞাস্য (FAQ)

গুণ ও বৃদ্ধির পার্থক্য উদাহরণসহ লেখ।

স্বরের গুণ বলতে ই, ঈ স্থানে ‘এ’; উ, উ স্থানে ‘ও’; ঋ ঋ স্থানে ‘অর’ এবং ৯ স্থানে অল হওয়াকে বােঝায়।
অ স্থানে আ; ই ঈ, স্থানে ঐ; উ, উ স্থানে ঔ; ঋ, খৃ স্থানে আর এবং ৯ স্থানে আল হওয়াকে বৃদ্ধি বলে।
উদাহরণ – স্বরের গুণ- যেমন জি = জে, / বৃদ্ধি- শীত + ঋতঃ = শীতার্তঃ

সংজ্ঞা শব্দের ব্যুৎপত্তি কি?

সম্- Vজ্ঞা + অ + স্ত্রীয়াম্ আপ্ ।

আগম শব্দের অর্থ কি ?

আগম শব্দের অর্থ আগমন করা।

শব্দের অন্তর্গত শেষ বর্ণের পূর্ব বর্ণকে কি বলে ?

শব্দের অন্তর্গত শেষ বর্ণের পূর্ব বর্ণকে উপধা বলে।

অ স্থানে ‘আ হলে তাকে কি বলা হয় ?

অ স্থানে ‘আ হলে তাকে বৃদ্ধি বলা হয়।

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ হতে MCQ TEST

1
Created on

ব্যাকরণ - সংজ্ঞা প্রকরণ

ব্যাকরণ - সংজ্ঞা প্রকরণ

1 / 5

(ক) আগম শব্দের অর্থ

2 / 5

(খ) শব্দের অন্তর্গত শেষ বর্ণের পূর্ব বর্ণকে বলে—

3 / 5

(গ) “অ স্থানে ‘আ হলে তাকে বলা হয়

4 / 5

(ঘ) তিঙ্ যুক্ত হয়—

5 / 5

(ঙ) শব্দ ও ক্রিয়ার মূলকে বলে

Your score is

The average score is 80%

0%

সংজ্ঞা ও পরিভাষা প্রকরণ হতে MCQ TEST উত্তর

(ক) আগম শব্দের অর্থ

  • (১) আগমন করা
  • (২) যাওয়া
  • (৩) ওঠা
  • (৪) পড়া।

(খ) শব্দের অন্তর্গত শেষ বর্ণের পূর্ব বর্ণকে বলে—

  • (১) পদ
  • (২) তিঙ্
  • (৩) উপধা
  • (৪) প্রকৃতি

(গ) “অ স্থানে ‘আ হলে তাকে বলা হয়

  • (১) গুণ
  • (২) বৃদ্ধি
  • (৩) প্রত্যয়
  • (৪) প্রকৃতি

(ঘ) তিঙ্ যুক্ত হয়—

  • (১) ধাতুর সঙ্গে
  • (২) শব্দেরসঙ্গে
  • (৩) প্রত্যয়ের সঙ্গে
  • (৪) পদের সঙ্গে

(ঙ) শব্দ ও ক্রিয়ার মূলকে বলে

  • (১) বিভক্তি
  • (২) প্রাতিপদিক
  • (৩) প্রকৃতি
  • (৪) প্রত্যয়
Comments