শরৎবর্ণনম্ পাঠ্যাংশ হতে ছোট প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হল ।
শরৎবর্ণনম্ পাঠ্যাংশ – ছোট প্রশ্ন ও উত্তর
১) শরৎবর্ণনম্ কোথা থেকে গৃহীত হয়েছে?
উঃ- রামায়ণের কিষ্কিন্ধ্যাকান্ড থেকে গৃহীত হয়েছে।
২) কে কার কাছে শরতের শোভা বর্ণনা করেছে?
উঃ-রামচন্দ্র তার ভ্রাতা লক্ষণের কাছে শরতের শোভা বর্ণনা করেছে।
৩) রামায়ণের রচয়িতা কে?
উঃ- আদি কবি বাল্মিকী।
৪) আদি কবি কাকে বলা হয়?
উঃ- রামায়ণ হলো আদিকাব্য। সুতরাং এই কাব্যের রচয়িতা হলেন বাল্মিকী।তাই একে আদি কবি বলা হয়।
৫) রামায়ণ কোন ছন্দে রচিত?
উঃ-অনুষ্টুপ ছন্দে রচিত।
৬) রামায়ণের সাতটি কান্ড কী কী?
উঃ- রামায়ণের সাতটি কান্ড হল-
- i)আদিকান্ড বা বালকান্ড।
- ii)অযোধ্যাকান্ড।
- iii)অরণ্য কান্ড।
- iv)কিষ্কিন্ধ্যাকান্ড।
- v) সুন্দর কান্ড।
- vi)যুদ্ধ কান্ড।
- vii) উত্তর কান্ড।
৭) শরৎবর্ণনম্ কিষ্কিন্ধ্যা কাণ্ডের কততম অংশ?
উঃ- ত্রিংশতম অংশ।
৮) শরৎবর্ণনম্ পাঠ্যাংশের প্রসঙ্গ কী?
উঃ- রাক্ষসরাজ রাবণ সীতাকে অপহরণ করেছেন। রামচন্দ্র সীতা উদ্ধারের জন্য সুগ্রীবের সাথে মিত্রতা স্থাপন করেন। সীতা উদ্ধারের নিমিত্তে যুদ্ধের প্রস্তুতি পূর্বে বর্ষার আগমন হয়। ফলে যুদ্ধযাত্রা স্থগিত রাখা হয়।এরপর আসে শরৎকাল। মাল্যবান পর্বতে অবস্থানকালে সীতা বিরহে লক্ষণের এর কাছে শরতের শোভা রামচন্দ্র বর্ণনা করে সীতা উদ্ধারের জন্য সচেষ্ট হতে নির্দেশ দিয়েছেন।
৯) মৈথিলী কে? জনকের কন্যার নাম কী?
উঃ- মৈথিলী হলেন মিথিলার অধিপতি রাজা। জনকের কন্যা সীতা।
১০) রামচন্দ্র সীতাকে কি বলেছেন? এই কথার অর্থ কী?
উঃ-রামচন্দ্র সীতাকে পদ্মপলাশাক্ষী বলেছেন। পদ্মপলাশাক্ষী কথাটির অর্থ হল-পদ্মের মতো চক্ষু যার।
১১) সহস্রাক্ষ কে?
উঃ- সহস্রচক্ষু যুক্ত দেবরাজ ইন্দ্রহলেন সহস্রাক্ষ।
১২) দেবরাজ ইন্দ্র কিভাবে অবস্থান করছেন?
উঃ- দেবরাজ ইন্দ্র বারি দান করে পৃথিবীকে তৃপ্ত করে শস্য রাশি উৎপন্ন করে কৃতকার্য হয়ে অবস্থান করছেন।
১৩) রামচন্দ্র কাকে নিপাত্মজ বলেছেন?এর অর্থ কি?
উঃ-রামচন্দ্র লক্ষণকে নিপাত্মজ বলেছেন। এর অর্থ হলো রাজার পুত্র অর্থাৎ রাজপুত্র।
১৪) কারা পরিশ্রান্ত? কিভাবে?
উঃ- দীর্ঘ গম্ভীর গর্জন কারী পর্বত,বৃক্ষ আচ্ছাদনকারী মেঘগুলি বারি দান করে পরিশ্রান্ত হয়েছে।
১৫) কার বেগশূন্য হয়ে অবস্থান করছে? এবং পূর্বে তারা কিভাবে অবস্থান করত?
উঃ- মেঘগুলি মত্তহীন হস্তিদের মতো বেগশূন্য হয়ে অবস্থান করেছে।
পূর্বে অর্থাৎ বর্ষাকালে মেঘগুলি নীলপদ্মের পাপড়ির মতো শ্যাম বর্ণ করে দশদিক আচ্ছাদন করে রাখত।
১৬) বৃষ্টিবাতাঃ এর বৈশিষ্ট্য কী রূপ?
উঃ- জলপূর্ণ অত্যন্ত বেগশালী ও কুটজ এবং অর্জুন ফুলের গন্ধযুক্ত বৃষ্টিবাতাঃ উদ্ধত হয়ে চারিদিকে বিচরণ করত।
১৭) কাদের শব্দ হঠাৎ বন্ধ বা স্তব্ধ হয়ে গেছে?
উঃ- মেঘেদের,হস্তিদের, ময়ূরদের এবং ঝর্ণাগুলির শব্দ হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেছে অর্থাৎ স্তব্ধ হয়ে গেছে। ১৮)অনস কে? এর অর্থ কি?
উঃ- রামচন্দ্র লক্ষণকে অনস বলে সম্বোধন করেছেন।
এর অর্থ হল নিষ্পাপ।
১৯) পর্বত শৃঙ্গ গুলি কিভাবে শোভা পাচ্ছে?
উঃ- বিশাল মেঘের দ্বারা বৃষ্টি প্রাপ্ত হয়ে পর্বত শৃঙ্গ গুলিতে চন্দ্র কিরনের দ্বারা অনুলিপ্ত হয়ে চিত্রের মত শোভা পাচ্ছে।
২০) শরৎলক্ষ্মী কিভাবে আবির্ভূত হয়েছেন?
উঃ- শরৎলক্ষ্মী তার সৌন্দর্য ছাতিম গাছের শাখায় শাখায় চন্দ্র, সূর্য ও তারাদের প্রভায় এবং উত্তম হস্তিদের লীলায় বিভক্ত করে আবির্ভূত হয়েছেন।
২১) শ্রিয়ঃ শব্দের অর্থ কি? শরৎলক্ষ্মী কোথায় অধিক মাত্রায় শোভা পাচ্ছে?
উঃ- শ্রিয়ঃ শব্দের অর্থ হল শোভা বা সৌন্দর্য।
শরৎলক্ষ্মী তার নিজের সৌন্দর্য অনেক আশ্রয়ে বিভক্ত করে শোভা ধারণ করলেও বলা হয় সূর্যের কিরণে বিকশিত পদ্মবনে তিনি অধিকমাত্রায় শোভা পাচ্ছে।
২২) সৌম বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?
উঃ- সৌম বলতে রামচন্দ্রের ভ্রাতা লক্ষণকে বোঝানো হয়েছে।
২৩) দপং বিনেষ্যন্নধিকং বিভাতি- কাদের দর্পের কথা বলা হয়েছে?
উঃ- ছাতিম ফুলের গন্ধযুক্ত ভ্রমরের দ্বারা অনুগীয়মান শরৎকালীন বায়ুর অনুসরণকারী মদমস্ত হস্তীদের দর্পণের কথা বলা হয়েছে।
২৪) ক্রীড়ন্তি হংসাঃ সহ চক্রবাকৈঃ- কারা কাদের সঙ্গে কিভাবে কোথায় ক্রিড়া করছে? উঃ- শরৎকালে হংসগুলি মহানদীর বেলাভূমিতে আগত চক্রবাক পক্ষীদের সঙ্গে ক্রিড়া করছে।
২৫) স্মরপ্রিয়ৈঃ পদ্মজোঅবকীর্নৈঃ – স্মরপ্রিয়ে কারা? চক্রবাকেরা কোথা থেকে এসেছে? তাদের প্রিয়াবস্তু কি? তারা কাদের সঙ্গে ক্রিড়া করছে?
উঃ- অভ্যাগত বিশাল পাখাবিশিষ্ট চক্রবাক পক্ষীরা স্মরপ্রিয় বা কামপ্রিয়।
চক্রবাকের দল মানস সরোবর থেকে মহানদী গুলির বেলাভূমিতে এসেছে।
চক্রবাক পক্ষীদের প্রিয়বস্তু কাম বা কলা। কারণ তারা কাম ও কলাতে খুবই অভিজ্ঞ।
তাদের গায়ে পদ্মের পরাগ লেগে আছে এবং তাদের বৃহৎ ও সুন্দর পাখাগুলি মেলে হংসের সাথে ক্রিড়া করছে।
২৬) বিভাতি লক্ষ্মীবহুর্ধা বিভক্তা- এখানে কোন লক্ষীকে নির্দেশ করা হয়েছে? তিনি কাদের মধ্যে বিভক্ত হয়েছে?
উঃ- এখানে বক্তা শ্রীরামচন্দ্র শরৎকালীন সৌন্দর্য অর্থাৎ শরৎ লক্ষ্মীকে নির্দেশ করেছেন।
শরৎকালীন লক্ষ্মী মদমত্ত হস্তীদের মধ্যে দর্পিত গোসমূহের মধ্যে এবং স্বচ্ছসলিলা নদীগুলিতে বহুভাবে বিভক্ত হয়ে শোভা পাচ্ছে।
২৭) ধ্যান পরা ময়ূরাঃ – কেন কোথায় তারা ধ্যানপরা হয়?
অথবা, শরৎকালে ময়ূরেরা কোথায় কিভাবে অবস্থান করে?
উঃ- ময়ূরগুলি শরৎ মেঘযুক্ত আকাশকে দেখে পেখমরূপ অলংকার পরিত্যাগ করে সৌন্দর্যহীন অবস্থান বর্ষা বিরহে নিরানন্দ যৌগীরতম বনে অবস্থান করেছে।
২৮) আকাশ, নদী, বাতাস ও অধিকার বর্ণনা দাও।
উঃ- আকাশ বিধৌত ধারালো অস্ত্রের মতো উজ্জ্বলবর্ণ রূপে প্রকাশিত হয়েছে।
নদীর জলরাশি ধীরে ধীরে প্রবাহিত হচ্ছে। বাতাসে শ্বেত পদ্মের গন্ধে শীতল বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে এবং দিকগুলি অন্ধকার মুক্ত হয়ে প্রকাশিত হচ্ছে।
২৯) শরদবর্ণনম্ এ কোন কোন প্রানীর উল্লেখ আছে?
উঃ- রামায়ণের কিষ্কিন্ধ্যা কান্ড থেকে গৃহীত শরৎবর্ণনম্ এ মত্তহস্তী, সাপ,ব্যাঙ,ময়ূর,হংস,সারস,চক্রবাক পক্ষী, গরু ইত্যাদি প্রাণীর উল্লেখ আছে।
৩০) বনে প্রান্তভাগ কিভাবে শোভা পাচ্ছে?
উঃ- মনোহর সুন্দর গন্ধবিশিষ্ট ফুলের অতিভারবশত অবনত অগ্রশামা বিশিষ্ট সোনার মতো গৌরবর্ণ দৃষ্টিনন্দন প্রচুর অসন বৃক্ষের দ্বারা শোভা পাচ্ছে।
৩১) প্রকৃতির নিস্তব্ধতা কেমন? বা কাদের শব্দ একেবারে নিরব হয়ে গেছে?
উঃ- নদী,মেঘ,ঝর্নার জলের অত্যন্ত গতিশীল বাতাস ও ময়ূরদের এবং নিরানন্দ ব্যাঙদের শব্দ অবশ্যই বর্তমানে একেবারে নিরব হয়ে গেছে।
৩২) পাঠ্যাংশ অবলম্বনে সাপেদের বিশেষণ গুলি লেখ?
উঃ- সাপেদের বিশেষণগুলো হল- নানাবর্ণ বিশিষ্ট, জীর্ণকায়, মৃতপ্রায়, ক্ষুধার্ত এবং বিষধর।
৩৩) সাপেরা কখন কোথা থেকে বেরিয়ে আসছে?
উঃ- শরতের আগমনে আকাশ নতুনভাবে মেঘমালার উদয় হলে বিষধর সাপেরা দীর্ঘদিন গর্তের মধ্যে বাস করলেও সেখান থেকে বেরিয়ে আসে।
৩৪) শরৎ রজনীকে কার সাথে কিভাবে তুলনা করা হয়েছে?
অথবা শরৎ রাত্রির বর্ণনা দাও।
উঃ- শরৎকালীন রজনীকে শুভ্রবস্ত্র পরিহিতা রমনীর সাথে তুলনা করা হয়েছে। উদিত চন্দ্র হলো তার সুন্দর মুখ। প্রস্ফুটিত তারা হল তার চারু নেত্র এবং জ্যোৎস্নারূপ তার শুভ্র বস্ত্র।
আরো পড়ুন শরৎবর্ণনম্ পাঠ্যাংশ হতে প্রশ্ন ও উত্তর
- শরৎবর্ণনম্ পাঠ্যাংশ হতে গুরুত্বপূর্ণ শ্লোকগুলির বাখ্যা
- শরৎবর্ণনম্ পাঠ্যাংশ অনুসারে যেভাবে শরৎকালের বর্ণনা