যাজ্ঞবল্ক‍্যসংহিতা: ব‍্যবহারাধ‍্যায় – সাধারন ব‍্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ ব‍্যাখ‍্যা – 2

যাজ্ঞবল্ক‍্যসংহিতা ব‍্যবহারাধ‍্যায় সাধারন ব‍্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ ব‍্যাখ‍্যা 2

যাজ্ঞবল্ক‍্যসংহিতা ব‍্যবহারাধ‍্যায় সাধারন ব‍্যবহার মাতৃকা প্রকরণম্ ব‍্যাখ‍্যা-2

“স্মৃত‍্যাচার ব‍্যপেতেন মার্গেণাধর্ষিতঃ পরৈঃ।
আবেদয়তি চেদ্রাজ্ঞে ব‍্যবহার পদং হিতৎ।।”

উৎস

আলোচ‍্য শ্লোকটি যোগীশ্বর যাজ্ঞবল্ক‍্য রচিত যাজ্ঞবল্ক‍্য সংহিতার ব‍্যবহারাধ‍্যায়ের অন্তর্গত সাধারণ ব‍্যবহার মাতৃকা প্রকরণ থেকে উদ্ধৃত হয়েছে।

ব‍্যাখ‍্যা

স্মৃতিশাস্ত্রে মানুষের কর্তব‍্যবিধি লিপিবদ্ধ আছে। লোকাচারের মাধ্যমেও মানুষ তার কর্তব্য জানতে পারে। স্মৃতি ও লোকাচার এই উভয়ের বিরুদ্ধ পথে অর্থাৎ হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে যদি কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তিকে আক্রমণ করে এবং আক্রান্ত ব্যক্তি তা রাজাকে জানায় তাহলে তা ব্যবহার পদবাচ্য হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিজে স্বেচ্ছায় এসে আবেদন করতে হবে। অন্যের পরোচনায় নয়। কোন একজন ব্যক্তির সঙ্গে অনেকের বিবাহ হতে পারে। কিন্তু প্রথমে যে ব্যক্তি বিচার প্রার্থী হয়ে আবেদন জানাবে, সেই হবে অর্থী বা বাদী। বাদীর লিখিত আবেদনটি রাজা যুক্তিযুক্ত মনে করলে মুদ্রাদির দ্বারা চিহ্নিত করে গ্রহণ করবেন এবং প্রত‍্যর্থী বা বিবাদীকে নোটিশ দিয়ে ডেকে আনবেন। প্রত‍্যর্থী যদি অসুস্থ থাকে তবে তাকে আনা হবে না।

ব্যবহার পদের সাধারণ লক্ষণ প্রসঙ্গে আচার্য বিজ্ঞানেশ্বর মিতাক্ষরা টীকায় বলেছেন-

“প্রতিজ্ঞোত্তরসংশয়হেতুপরামর্শ প্রমাণ নির্নয় প্রয়োজনাত্মকঃ ব‍্যবহারঃ তস‍্য পদং বিষয়ঃ।”

অর্থাৎ প্রতিজ্ঞা, উত্তর, সংশয়,হেতুপরামর্শ প্রমাণনির্ণয় ও প্রয়োজন এই ছয়টির মাধ্যমে নানা সন্দেহ দূর করে সত‍্য নির্ণয় করা হয় বিচার পদ্ধতির মাধ্যমেই মিথ্যাবাদীকে দণ্ডদান সম্ভব হয়।

অর্থীর আবেদনের পর প্রত‍্যর্থীকে ডাকা হয়।প্রত‍্যর্থীর সম্মুখে অর্থীর বক্তব্য লিখিত হয়। লেখার সময় পূর্বের আবেদনের একটুও পরিবর্তন হবে না। এই আবেদন লেখার সময় অর্থী ও প্রত‍্যর্থীর নাম,জাতি,বৎসর,মাস, দিন প্রভৃতি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হবে। চতুষ্পাদ ব্যবহারের অন্য তিনটি পাদ হলো- উত্তরপাদ,ক্রিয়াপাদ, সিদ্ধিপাদ।

নারদস্মৃতির মতে ব‍্যবহারের উৎস কাম, ক্রোধ ও লোভ। তিনি লোভ। তিনি বলেছেন-

“কমাৎ ক্রোধাচ্চ লোভাচ্চ ত্রিভ‍্যো যস্মাৎ প্রবর্ত্ততে।
ত্রিযোনিঃ কীর্ত‍্যতে তেন ত্রয়মেতদ্বিবাদকৃৎ।।”

অর্থাৎ কাম, ক্রোধ ও লোভের বশবর্তী হয়ে মানুষ বিবাদের সূত্রপাত করে বলে ব‍্যবহারকে ত্রিযোনিও বলা হয়।

Comments