তর্কসংগ্রহ হতে যোগ্যতা সম্পর্কে টিকা লেখ ।
তর্কসংগ্রহ হতে যোগ্যতা সম্পর্কে টিকা
যোগ্যতা:- তর্কসংগ্রহের প্রণেতা অন্নংভট্টের মতে, ‘ শক্তং পদম্ ‘ অর্থাৎ শক্তিবিশিষ্টতাই পদের লক্ষণ। আর আকাঙ্খা, যোগ্যতা ও সন্নিধি বাক্যার্থজ্ঞানের হেতু।
যোগ্যতার লক্ষণে বলা হয়েছে-
” অর্থাবাধো যোগ্যতা”
অর্থাৎ অর্থাবোধকে যোগ্যতা বলে। বাধের অর্থ বাধা বা বাক্যঘটক পদ সমূহের অন্বয়ভাব। একটি পদার্থে অন্য পদার্থের যে বাধাভাব তারই নাম যোগ্যতা।
সহজ কথায় বাক্যঘটক পদগুলো পরস্পর অন্বয়যোগ্য অর্থের প্রতিপাদক হলে যোগ্যতা থাকে। অন্বয়ে যোগ্যতার অভাবে শাব্দবোধ হবে না। যেমন- ‘বহ্নিনা সিঞ্চতী’। ‘কর্ণেন পশ্যতি’, চক্ষুষা পিবতি ‘ ইত্যাদি। এখানে বহ্নির দহনকার্যের অন্বয় যোগ্যতা আছে কিন্তু অগ্নি দ্বারা সেচন কার্য হয় না। সেচন কার্য জলের দ্বারা হয়। “বহ্নিনা সিঞ্চতী তি ন প্রমাণম্ যোগ্যতাবিরহ্যাৎ।” এরূপ কর্ণের সঙ্গে শ্রবণ ক্রিয়ার, চক্ষুরসঙ্গে দর্শন ক্রিয়ার সম্বন্ধ হয়। শ্রবণ দর্শন ক্রিয়ার হয় না এবং দর্শন পাণক্রিয়ার হয় না।
নব্য মতে যোগ্যতার জ্ঞান শাব্দবোধের কারণ হয় না। ‘বহ্নিনাসিঞ্চতী’ বাক্যে যে শাব্দবোধ হয় তার কারণ এখানে সেচনে অগ্নিকরণ কত্বের অভাবরূপ অযোগ্যতার নিশ্চয় প্রতিবন্ধক হয়েছে। এখানে বাধাভাব বলতে ব্যবহারিক বাধাভাবের কথাই বুঝতে হবে। বুদ্ধিগম্য অর্থের বাধাভাব এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নয়। যোগ্যতা পদার্থগত ধর্ম। যোগ্যতা কখনো পদে থাকেনা, থাকে পদার্থতে।