তর্কসংগ্রহ হতে অত্যন্তাভাব/ অন্যোন্যাভাবের পার্থক্য আলোচনা কর ।
তর্কসংগ্রহ হতে অত্যন্তাভাব ও অন্যোন্যাভাবের পার্থক্য
উ:- দ্রব্যাদি দৃষ্টি ভাবপদার্থ ভিন্ন যে পদার্থ তাকে অভাব বলে – ‘ভাবভিন্নত্বম্ অভাবত্বম্’। আচার্য অন্নংভট্ট অভাবের বিভাগ প্রসঙ্গে বলেছেন-
” অভাবশ্চতুর্বিধঃ প্রাগভাবঃ প্রধ্বংসাভাবঃ অত্যন্তাভাবঃ অন্যোন্যাভাবশ্চেতি।।”
অর্থাৎ অভাব চার প্রকার। যথা-
- i) প্রাগভাব,
- ii) প্রধ্বংসাভাব,
- iii) অত্যন্তাভাব
- iv) অন্যোন্যাভাব।
অত্যন্তাভাব ও অন্যোন্যাভাব অভাব পদার্থের অন্তর্গত হলেও এদের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। যেমন-
i) অত্যন্তাভাবের লক্ষণ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-
“ত্রৈকালিকসংসর্গাবচ্ছিন্ন প্রতিযোগিতাকোঅত্যন্তাভাবঃ” অর্থাৎ যে অভাবটি ত্রৈকালিক এবং যার প্রতিযোগিতা তাদাত্ম্য ভিন্ন সম্বন্ধ দ্বারা অবিচ্ছিন্ন থাকে তাকে অত্যন্তাভাব বলে।
অন্যোন্যাভাবের লক্ষণ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে- “তাদাত্ম্যসম্বন্ধাবচ্ছিন্ন-প্রতিযোগিতাকোঅন্যোন্যাভাবঃ।” অর্থাৎ যে ভাবটি নিজের অধিকরণে নিজের প্রতিযোগিতার তাদাত্ম্যের বিরোধী হয়, তাকে অন্যোন্যাভাব বলে।
ii) সংসর্গাভাবই অত্যন্তাভাব নামে পরিচিত।
অপরপক্ষে, সংসর্গাভাব ভিন্ন অভাব অন্যোন্যাভাব নামে পরিচিত।
iii) বায়ুতে রূপাভাব- ন্যায়কন্দলী প্রণেতা শ্রীধরভট্টের মতে, অলীকের অভাব অত্যন্তাভাব।
অপরপক্ষে, ঘটো ন পটঃ – অর্থাৎ ঘটপট নয় বললে পট তাদাত্ম্য সম্বন্ধে ঘটে নেই বোঝায়।
iv) অত্যন্তাভাবের উৎপত্তি ও বিনাশ নেই। তাই নিত্য।
অন্যোন্যাভাবের উৎপত্তি ও বিনাশ আছে তাই অনিত্য।
v) অত্যন্তাভাবের অভাব সব কালেই বিদ্যমান। অর্থাৎ বায়ুতে রূপাভাব- অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ সর্বকালেই বিদ্যমান।
অপরদিকে দুটি বস্তুর পারস্পরিক ভেদেই হল অন্যোন্যাভাব। যেমন টেবিল চেয়ার নয় অর্থাৎ টেবিলে চেয়ারের অভাব এবং চেয়ারে টেবিলের অভাব ইত্যাদি।
vi) অত্যন্তাভাবটি নিজের প্রতিযোগী সংসর্গের বিরোধী হয়।
অন্যোন্যাভাবটি নিজের অধিকরণে স্বপ্রতিযোগী তাদাত্ম্যের বিরোধী হয়।