তর্কসংগ্রহ হতে স্বার্থানুমান ও পরার্থানুমানের পার্থক্য।
স্বার্থানুমান ও পরার্থানুমানের পার্থক্য – তর্কসংগ্রহ
উ:- অনুমান সাধারনত দুই ভাগে বিভক্ত।
‘স্বার্থং পরার্থং চ’।
অর্থাৎ স্বার্থানুমান অপরটি পরার্থানুমান। দুইবিষয়ের অনুমান প্রাধান্য পেলেও এর মধ্যে বেশকিছু বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।
স্বার্থানুমান ও পরার্থানুমানের পার্থক্য
i) স্বার্থানুমানের লক্ষণ প্রসঙ্গে অন্নংভট্ট বলেছেন- ‘তত্র স্বার্থং স্বানুমিতিহেতুঃ’ অর্থাৎ যখন কোন ব্যক্তি নিজের জ্ঞান লাভের উদ্দেশ্যে অনুমান গঠন করে তখন তাকে স্বার্থানুমান বলে।
অপরদিকে, পরার্থানুমানের লক্ষণ প্রসঙ্গে অন্নংভট্ট বলেছেন- ” যজুস্বয়ং ধূমাদগ্নিমনুমায় পরং প্রতিবোধয়িতুং পঞ্চাবয়ববাক্যং প্রযুজ্যতে তৎ পরার্থানুমানম্।” যখন কোন ব্যক্তির নিজেই ধূম থেকে অগ্নির অনুমান করার পর অপরের জ্ঞান উৎপাদের জন্য কোন বাক্য পঞ্চাবয়ব বাক্য প্রয়োগ করে তখন তাকেই পরার্থানুমান বলে।
ii) স্বার্থানুমানের উদাহরণ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে পর্বতে ধূম প্রত্যক্ষ করে ধূমের সঙ্গে ব্যাপ্তি সম্বন্ধ স্মরণ করে কোন ব্যক্তির পর্বতে বহ্নির অনুমান করতে পারা।
পরার্থানুমানের উদাহরণ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যখন কোন ব্যক্তি নিজে ধূম থেকে বহ্নির অনুমান করার পর অপরের কাছে ঐ অনুমিত বহ্নি প্রতিপাদন করার জন্য পঞ্চ অবয়ব বাক্য প্রয়োগ করেন তখন অন্য ব্যক্তির যে অনুমিতি হয়।
iii) স্বার্থ অনুমান তিনভাগে বিভক্ত। যথা- a) পূর্ববৎ b)শেষবৎ c)সামান্যতমদৃষ্ট।
অপরদিকে পরার্থানুমানকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- a) কেবলন্বয়ী, b) কেবলব্যাতিরেকী, c) অন্বয়ব্যাতিরেকী।
iv) স্বার্থানুমান পরার্থানুমানের পূর্ববর্তী।
অপরদিকে পরার্থানুমান স্বার্থানুমানের অনুবর্তী।
v) স্বার্থানুমানের তিনটি বচন বা অবয়ব থাকলেই চলে। এই কারণে স্বার্থানুমানকে ত্রি-অবয়বী অনুমান বলে।
অপরপক্ষে পরার্থানুমানের পাঁচটি বচন বা অবয়ব থাকে বলে একে পঞ্চ অবয়বী ন্যায় বলে।
vi) স্বার্থানুমান আকার মূলত উপস্থাপনের প্রয়োজন নেই।
কিন্তু পরার্থানুমানের আকার মূলত ভাবে উপস্থাপনের প্রয়োজন আছে। কারণ একজনের যে অনুমিতি হয় তা অপরের কাছে বোধগম্য করার জন্য ভাষায় ব্যক্ত করতে হয়।
vii) স্বার্থানুমানের ন্যায় বাক্য প্রয়োজন হয়না।
অপরপক্ষে পরার্থানুমানের ন্যায় বাক্যের প্রয়োজন অপরিহার্য।