বৃহদ্দেবতা

বৃহদ্দেবতা টিকা ।

বৃহদ্দেবতা টিকা

বৈদিক গ্রন্থগুলির মধ্যে আচার্য শৌণক রচিত বৃহদ্দেবতা অন্যতম। বিদ্বৎমহলে গ্রন্থটি উপাঙ্গ নামে পরিচিত।  এটি নিরুক্তের পরবর্তী এবং সর্বানুক্রমণীর পূর্ববর্তী কালে রচিত হয়। এখানে বেদোক্ত বিভিন্ন কাহিনীকে মহাকাব্যের ভঙ্গিতে বর্ণনা করা হয়েছে। পুরুষ ও মহিলা ঋষিদের নামের তালিকা,  দেবতাদের বাহনের তালিকা ছাড়া খিলবৈশ্বদের, আপ্রীসূক্ত বিষয়ে অপূর্ব আলোচনা নিবন্ধ হয়েছে।

শৌনকের মতে ঋষি যেভাবে বা বিষয়ে মন্ত্র রচনা করেন সেইভাবে বা বিষয়ই সেই মন্ত্রের দেবতা হন-

“যস‍্য বাক‍্যং স ঋষিঃ যা তেন
“যস‍্য বাক‍্যং স ঋষিঃ, যা তেন উচ‍্যতে সা দেবতা।”

এই কারণে ঋষিরা সরমা,  অক্ষ বা পাশাকেও  দেবতারূপে বর্ণনা করেছেন। ত্রিলোকস্থ অগ্নির তিনরকম নাম স্বীকার করেছেন আচার্য শৌণক। যেমন-

” ইহাগ্নি ভূতস‍্য ঋষিভির্লোকে স্তুতিভিরীড়িতঃ
জাতবেদা স্তুতো মধ‍্যে স্তুতো মধ‍্যে বৈশ্বানরো দিবি।”

অর্থাৎ এক অগ্নি দেবতাই ত্রিলোকে তিনরূপে ও তিননামে বিরাজ করেন।  পৃথিবীতে অগ্নি, অন্তরীক্ষে জাতবেদা এবং দ‍্যুলোকে বৈশ্বানর নামে।

ঋগ্বেদের দেবতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হলেন দেবরাজ ইন্দ্র। তাঁর সম্পর্কে বৃহদ্দেবতায় শৌণক বলেছেন-

” রসাদানং তু কর্মাস‍্য বৃত্রস‍্য চ নিবর্হণম্।
স্তুতে প্রভুত্বং সর্বস‍্য বলস‍্য নিখিলাকৃতিঃ।।”

আচার্য শৌণক তাঁর বৃহৎদেবতা গ্রন্থে পূর্ববর্তী ভাষ্যকারদের উপস্থিতির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন।

“অপরে বদন্তিঃ কোচিৎ এবমাহুঃ”।

ইত্যাদি উক্তির মাধ্যমে। শৌণকের ব্যাখ্যা উচ্চকোটির এবং অধ‍্যাত্মনিষ্ঠ। তাঁর ব‍্যাখ‍্যান শৈলীতে বৈষ্ণব মতবাদের প্রভাব স্পষ্ট দৃষ্ট হয়। তিনি মূলত শুক্লযজুর্বেদের মাধ্যন্দিন সংহিতার ভাষ্যকার ছিলেন।

Comments