শ্রীহর্ষের নৈষধচরিত সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
শ্রীহর্ষের নৈষধচরিতঃ
কালিদাস উত্তর যুগের শ্রদ্ধার সাথে তিন জনের নাম উচ্চারিত হয় তার হলেন কিরাতার্জুণীয়ম্ মহাকাব্যের ভারবি , শিশুপাল বধ মহাকাব্যের রচয়িতা মাঘ , নৈষধচরিত এর রচয়িতা শ্রীহর্ষ ।
” তাবদ্ধা ভারবের্ভাতি যাবন্মাঘস্য নোদয়ঃ।
উদিতে নৈষধে কাব্যে ক্ব মাঘঃ ক্ব চ ভারবিঃ।।”
সময় ও কবিপরিচিতি
শ্রীহরি ও মামল্লদেবীর পুত্র শ্রীহর্ষ জয়চন্দ্রের প্রেরণায় নৈষধচরিত রচনা করেন। জয়চন্দ্র ছিলেন কুমারপালের সমসাময়িক। সুতরাং ঐতিহাসিক ভাবে বলা যায় ১১৬৩-১১৭৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে এই মহাগ্রন্থ রচনা করেন।
সর্গ
২২ টি সর্গে শৃঙ্গার রসোজ্জ্বল এই মহাকাব্য রচিত।
উৎস ও বিষয়বস্তু
মহাভারতের বনপর্ব ৪৫ থেকে ৬৫ তম অধ্যায় পর্যন্ত বর্ণিত নলদময়ন্তীর আখ্যান এই গ্রন্থের উপজীব্য।
১-৩. নায়ক-নায়িকার পারস্পরিক অনুরাগ এবং রাজহংসের দৌত্য।
৫. দেবতাদের দূতরূপে নলকে দময়ন্তীর কাছে প্রেরণ।
৯. নল – দময়ন্তীর উক্তি প্রত্যুক্তি।
১৩. স্বরস্বতীর কথায় দময়ন্তীর বিভ্রান্তি।
১৫. নল -দময়ন্তীর বিবাহ।
উৎকর্ষ
মহাকবির সর্বাতিশায়ী প্রতিভা এবং অত্যুচ্চ দার্শনিক প্রজ্ঞার গঙ্গা-যমুনা সঙ্গম ঘটেছে নৈষধচরিতে। গীতিময়তার আবেশ,উদাত্ত শব্দ সম্পদ, ভাবপ্রীতির অনুকূল হয়েছে। কৃত্রিম বন্ধাত্মক শ্লোক রচনা থেকে শ্রীহর্ষ নিবৃত্ত থেকেছেন।
রচনা বৈশিষ্ট্য
হৃদয়ানুভূতি ও বুদ্ধির পরিতৃপ্তি শ্রীহর্ষের শৃঙ্গার প্রধান এই মহাকাব্যের অঙ্গরস গুলি হল-
করুন- রাজহংসের বিলাপ,
বীর- নলের যুদ্ধ বীরতায়,
হাস্য- বৈবাহিক ভোজ সভায়,
রৌদ্র- কলির উক্তিতে ইত্যাদি।
কবির প্রিয় অর্থান্তরন্যাস অলংকারের একটি উদাহরণঃ-
“নভোনদীকূলকুলায়চক্রীকুলস্য নক্তং বিরহাকুলস্য।
দৃশোরপাং সন্তি পৃষন্তি তারাং পতন্তি তৎসংক্রমানিধারাঃ।।”