সামান্য ও বিশেষ পার্থক্য আলোচনা কর ।
সামান্য ও বিশেষের পার্থক্য
উ:- সামান্য এবং বিশেষ উভয়ই পদার্থ হলেও তাদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।
সামান্য এবং বিশেষের পার্থক্য গুলি হল-
i) আচার্য অন্নংভট্ট সামান্যের লক্ষণ করতে গিয়ে বলেছেন- ‘নিত্যম্ একম্ অনেকানুগতং সামান্যম্।’ অর্থাৎ যেটি নিত্য অর্থাৎ সর্বদা থাকে, এক অথচ অনেক ব্যক্তিতে অনুগত অর্থাৎ সমবায় সম্বন্ধে থাকে তাকে সামান্য বলে।
আচার্য অন্নংভট্ট বিশেষের লক্ষণ প্রসঙ্গে বলেছেন-‘ নিত্যদ্রব্যবৃত্তয়ো ব্যাবর্ত্তকা বিশেষাঃ।’ অর্থাৎ যা নিত্য দ্রব্যসমূহে থাকে এবং নিত্য দ্রব্য সমূহের পরস্পরের মধ্যে যে ভেদ তা নির্ণয় করে দেয় তাকেই বিশ্বাস বলে।
ii) সামান্যের নামান্তর জাতি। এটি ন্যায় বৈশেষিক দর্শনের চতুর্থ পদার্থ।
বিশেষ ন্যায় বৈশেষিক দর্শনের পঞ্চম পদার্থ।
iii) সামান্য হল নিত্য এবং অনেক অধিকরণে সমবায় সম্বন্ধে থাকে।
কিন্তু একটা দ্রব্যে মাত্র একটাই বিশেষ থাকবে।
iv) সামান্য অনুগত প্রতীতির জনক।
বিশেষ ব্যাবৃত্তি প্রতীতির জনক।
v) সামান্য বা জাতি দ্রব্য, গুন ও কর্মে থাকে।
বিশেষ কেবলমাত্র নিত্য দ্রব্যসমূহে থাকে।
vi) সামান্য সংখ্যায় এক।
অপরদিকে, বিশেষ সংখ্যায় অনন্ত।
vii) অন্নংভট্ট পরাপর ভেদে সামান্যকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন।
একটা দ্রব্যে একাধিক বিশেষ স্বীকার করা যায় না। একটি দ্রব্যে একটিমাত্র বিশেষ থাকে।
কিন্তু আচার্য বিশ্বনাথ ভাষা পরিচ্ছেদে ত্রিবিধ সামান্য স্বীকার করেছেন। পরসামান্য, অপরসামান্য, পরাপরসামান্য।
viii) আচার্য উদয়ন কিরণাবলীতে বলেছেন-
“অত্যন্ত ব্যাবৃত্ত বুদ্ধেরেব হেতুত্বাদ বিশেষা নান্যন্তর্ভুক্তা।” অর্থাৎ ব্যাবৃত্ত বুদ্ধির হেতু বলে বিশেষ বিশেষই। তা সামান্য বা অন্য কোন পদার্থের অন্তর্ভুক্ত নয়।