ভারতবিবেকম্ নাটক অবলম্বনে নরেন্দ্রনাথের চরিত্র

একাদশ শ্রেণীর সংস্কৃত সিলেবাসের অন্তর্গত ভারতবিবেকম্ নাটক অবলম্বনে নরেন্দ্রনাথের চরিত্র আলোচনা করো।

ভারতবিবেকম্ নাটক অবলম্বনে নরেন্দ্রনাথের চরিত্র


উঃ- নরেন্দ্র শ্রীরামকৃষ্ণের চোখে সর্বনরশ্রেষ্ঠ। তার নাম শুনেই শ্রীরামকৃষ্ণের হৃদয় অনাবিল আনন্দে নেচে উঠল। শ্রীরামকৃষ্ণের দীর্ঘদিনের পিপাসা নিবারিত করতে নর সর্বশ্রেষ্ঠ উত্তর সাধক উপস্থিত হলেন নরেন্দ্র। কিন্তু কে এই নরেন্দ্র?

নরেন্দ্রনাথের পরিচয়

নরেন্দ্রনাথ দত্ত বংশজাত এক যুবক। তার পিতা বিশ্বনাথ দত্ত এবং মাতা ভুবেনশ্বরী দেবী। বাল্যকাল থেকেই নরেন্দ্র অত্যন্ত মেধাবী। বর্তমানে তিনি বিদ‍্যা অর্জনে রত ব্রহ্মমন্দির প্রভৃতি তাঁর যোগাযোগ।

সুরেন্দ্রনাথের কথায়-

“সাম্প্রতং সঃ বিদ‍্যার্জনরত ব্রাহ্মমন্দিরাদিকঞ্চ গচ্ছতি”।

মঙ্গলকারী সদাশিব

নরেন্দ্রনাথ বয়সে তরুণ ও সুদর্শন তার কমল কুঞ্চিত কেশরাশি, সুসজ্জিত মস্তক এবং আকর্ণবিস্তৃত চোখ। বাহু দুটি যেন হস্তির শুড়ের মতো এবং তার বক্ষদেশ বিশাল। এই রুপ বালকের মুখ দর্শন করে শ্রীরামকৃষ্ণ ধন্য হয়েছিলেন। শ্রীরামকৃষ্ণের নিকট এই বালক যেন সর্ব মঙ্গলকারী সদাশিব।

সংগীত নিপুন

নরেন্দ্রনাথ সঙ্গীত বিদ্যাও পারদর্শী-“সত‍্যমেব সংগীত নিপুন’। শ্রীরামকৃষ্ণের দীর্ঘ পিপাসা নিবারণ করতে সুরেন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর আগমন। গুরুদেবের নিকট মা ভবতারিণী জয়গান করে নরেন্দ্র তার সংগীত বিদ‍্যায় শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিয়েছেন। শ্রীরামকৃষ্ণের মতে-“অপূর্ব তব কন্ঠস্বরঃ”।

অপরিমিত ভক্তি মাহাত্ম্য

নরেন্দ্রনাথের অপরিমিত ভক্তি মাহাত্ম্য। অঞ্জলি দিয়ে তিনি মৃন্ময়ী মূর্তিকে চিন্ময়ী করে তুলেছেন। আবার সাধবে নম’- বলে সাধুজনদের প্রণাম নিবেদন করেও শ্রদ্ধা ভক্তির প্রসাদ বিতরণ করেছেন।

আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত

নরেন্দ্রনাথ ছিলেন আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত। তিনি কখনও মানব শরীরে ভগবান সত্তা স্বীকার করতেন না-

“মানবশরীরে ভগবান সত্ত্বারোপং নাহং কদাপি স্বীকরিষ‍্যামি।।”

যুক্তিবাদী মানসিকতা

কিন্তু তবুও তিনি অবাক বিস্ময়ে শ্রীরামকৃষ্ণকে দেখে চলেছে। শ্রীরামকৃষ্ণের অলৌকিক ঐশ্বর্য দেখে তিনি মুগ্ধ হয়ে গেছেন। কিন্তু পরক্ষণই এরূপ ধারণা জন্মানোর জন্য নিজেকে ধিক্কার দিলেন। এতে তার যুক্তিবাদী মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়।

Comments