টীকা: রাজশেখর

সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস রাজশেখর ( rajasekhar sanskrit poet ) সম্পর্কে সম্পূর্ণ টীকা রচনা করা হল।

রাজশেখর ( rajasekhar sanskrit poet )-টীকা


রাজশেখর-সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস

নবম শতকের অন্তিম দশক এবং দশম শতকের প্রথম পর্বের প্রসিদ্ধ মনীষী, বিদগ্ধ সমালোচক, সুপণ্ডিত, নাট্যকার ও কবি রাজশেখর ( rajasekhar sanskrit poet )।তিনি কৌনজের রাজা মহেন্দ্র পাল এবং তার পুত্র মহীপালের আচার্য ও সভাপন্ডিত ছিলেন। সংস্কৃত সাহিত্যের অবক্ষয় যুগে যে কৃত্রিমতা ও ব্যর্থ অনুকরণ প্রিয়তার আচার সর্বস্ব প্রথায় সাহিত্য অনুশীলনের সার্বিক উদ‍্যম নিয়োজিত হয়েছিল, তারই মধ্যে রাজশেখরের আবির্ভাব এক ব্যতিক্রম।

রাজশেখরের বংশপরিচয়

কবি প্রদত্ত সংক্ষিপ্ত বংশপরিচয় থেকে জানা যায় যে তার পৈত্রিক বাসভূমি ছিল মহারাষ্ট্র চূড়ামণি এবং তার পূর্বপুরুষ সুরানন্দ চেদিরাজ রনবিগ্রহের মুখ্য সভাকবি ছিলেন। অবশ্য রাজশেখর স্বয়ং কৌনজের দুই নরপতির আচার্যপদ অলংকৃত করে জীবনের অধিকাংশ সময় সেখানেই কাটান। তিনি কিছুদিনের জন্য কলচুরিরাজ ময়ূরবর্ষের পৃষ্ঠপোষকতায় অতিবাহিত করেন।

রাজশেখরের রচনাবলী

রাজশেখর কলচুরিরাজ ময়ূর বর্ষের পৃষ্ঠপোষকতায় অতিবাহিত করার সময়ই বিদ্ধশালভঞ্জিকা রচিত অভিনীত হয়। অতঃপর তিনি কান্যকুব্জে প্রত্যাবর্তন করে রাজা মহীপালের অনুরোধে বালভারত রচনা করেন। কর্পূরমঞ্জুরি ও বিদ্ধশালভঞ্জিকা উভয় নাটকেরই নায়িকা হলেন লাট দেশের রাজপুত্রী। কর্পূরমঞ্জরী-র নায়ক হলেন হৈহয় বংশের জৈনক কলচুরি রাজকুমার।


রাজ শেখর রচিত বালরামায়ণ, বালভারত, কর্পূরমঞ্জুরী, বিদ্ধশালভঞ্জিকা ও কাব্যমীমাংসা নামক গ্রন্থগুলি পাওয়া গেছে। নাট্যগ্রন্থ গুলির মধ্যে কর্পূরমঞ্জুরি সম্ভবত প্রথম রচনা এবং বিদ্ধশালভঞ্জিকা ও বালরামায়ণ অপেক্ষাকৃত পরবর্তী রচনা। বালভারত নামক দুই অঙ্কের অসম্পূর্ণ নাটকটির সম্ভবত তার শেষ গ্রন্থ।

রাজশেখর রচিত বালরামায়ণ

রাজ শেখর রচিত দশাঙ্ক নাটক বালরামায়নে রামচন্দ্রের বাল্য জীবন থেকে শুরু করে রাবণবধ, অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তন এবং রাজ্যাভিষেক পর্যন্ত কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।

রাজশেখর রচিত বালভারত

মহাভারতের কাহিনী অবলম্বনে রচিত বালভারত নাটকটি দুই অঙ্কের অসমাপ্ত রচনা। অন্য নাম প্রচন্ড পাণ্ডব। নাট্যকার বালরামায়ণ-এর মতো বালভারত নাটকটি বিশালকায় নাট্যকাব্য রূপে রচনা করতে মনস্থ করেন।কিন্তু কী কারণে অসম্পূর্ণ অবস্থায় ছেদ পড়ে তা আমাদের অজ্ঞাত। দ্রৌপদীর স্বয়ম্বর, কুরুপান্ডবদের অক্ষক্রীড়া, দ্রৌপদীর নিগ্রহ ও পাণ্ডবদের বনগমন পর্যন্ত কাহিনী নাটককায়িত হয়েছে।

রাজশেখর রচিত কর্পূরমঞ্জরী

চার অঙ্কের এই রচনাটি নাট্য পরিভাষায় সট্টক নামে পরিচিত এবং পুরাপুরি প্রাকৃত ভাষায় রচিত। নাট‍্যকাহিনীতে রাজা চন্দ্রপাল ও বিদর্ভ রাজকুমারীর প্রণয়, মহারানীর ক্ষোভ, তান্ত্রিক ভৌরবানন্দের অলৌকিক ক্রিয়াকলাপ, রাজমহিষীর আদেশে নায়িকার অবরোধ এবং ভৌরবানন্দের সার্বভৌমপদ প্রাপ্তির জন্য লাট রাজকন্যার সঙ্গে চন্দ্রপালের বিবাহ বর্ণিত। অন্তিম রহস্য অপসারণের পরে জানা গেল লাটরাজকন্যা ঘনসারমঞ্জুরীই ছদ্মবেশী নায়িকা কর্পূরমঞ্জুরী।

রাজশেখর রচিত বিদ্ধশালভঞ্জিকা

লাটরাজ চন্দ্রবর্মনের কন্যা মুগাঙ্কাবলী ও রাজা বিদ‍্যাধর মল্লের প্রণয়কাহিনী অবলম্বনে রচিত চার অঙ্কের নাটিকা বিদ্ধশালভঞ্জিকা।

রাজশেখর ( rajasekhar sanskrit poet) সম্পর্কে সচরাচর জিজ্ঞাস্য (FAQ)

1. রাজশেখরের আবির্ভাব কাল কত ?

রাজশেখরের আবির্ভাব কাল খ্রিস্টীয় নবম শতকের শেষশতক ও দশম শতকের প্রথম পর্ব ।

2. রাজশেখরের রচিত গ্রন্থগুলির নাম ?

রাজশেখরের রচিত গ্রন্থগুলি হল বালরামায়ণ, বালভারত, কর্পূরমঞ্জরী, বিদ্ধশালভঞ্জিকা ও কাব্য মীমাংসা ।

3.  সট্টকের লক্ষণ কি ?

সমস্ত সংলাপ প্রাকৃত ভাষায় নিবদ্ধ হবে এতে প্রবেশক ও বিষ্কম্ভক নাম অর্থোপক্ষেপক থাকবে না । এছাড়া প্রচুর পরিমানে অদ্ভূত রস থাকবে এবং এর অঙ্কগুলি যবনিকা নামে অভিহিত করা হবে- তাই  সট্টক।

Comments