তর্কসংগ্রহ: প্রমা ও অপ্রমা পার্থক্য

প্রমা ও অপ্রমা পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করা হল । প্রমা কাকে বলে? অপ্রমা কাকে বলে?

প্রমা ও অপ্রমা পার্থক্য

উ:- ‘ স্মৃতিভিন্নং জ্ঞানম্ অনুভবঃ ‘ অর্থাৎ স্মৃতিভিন্ন জ্ঞানই অনুভব। এই অনুভবকে যথার্থ ও অযথার্থ ভেদে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। আবার যথার্থ অনুভবকে প্রমা ও অযথার্থ অনুভবকে অপ্রমা বলে। প্রমা এবং অপ্রমা দুটিই অনুভবের বিষয় হলেও এদের মধ‍্যে বেশ কিছু পার্থক‍্য পরিলক্ষিত হয়। যেমন-

  • i) প্রমার লক্ষণ প্রসঙ্গে অন্নংভট্ট বলেছেন- ” তদ্বতি তৎপ্রকারকোঅনুভবো যথার্থঃ।” অর্থাৎ যেটি যে ধর্মবিশিষ্ট পদার্থ যদি সেই পদার্থ সেইরূপ জ্ঞান হয় তবে তাকে যথার্থ অনুভব বলে।
    অপ্রমার লক্ষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন- ” তদভাববতি তৎপ্রকারকোঅনুভবোঅযথার্থঃ“। অর্থাৎ যে বস্তু তে যে ধর্মের অভাব আছে যদি সেই বস্তুকে সেই প্রকার অভাব বিশিষ্ট রূপেই জানা যায়, তবে ওই প্রকার অনুভবকে অযথার্থ অনুভব বলে। এরূপ অযথার্থ অনুভবকে অপ্রমাও বলে।
  • ii) প্রমার উদাহরণ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে- ‘অয়ং ঘটঃ‘ অর্থাৎ এটি একটি ঘট। এরূপ ঘটকে জানা ঘট সম্বন্ধে যথার্থ জ্ঞান।
    অপরদিকে অপ্রমার উদাহরণ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে- ” স্বল্পালোকে একখন্ড দড়িকে সর্প বলে যখন জানা যায়, তখন ঐ সর্পভ্রমটি হয় অযথার্থ অনুভব।
  • iii) যথার্থ অনুভব বা অপ্রমাতে সমবায় সংসর্গক জ্ঞান থাকে।
    অযথার্থ অনুভব বা অপ্রমাতে সমবায় সংসর্গক জ্ঞান থাকেনা।
  • iv) প্রমার জ্ঞান সর্বদাই বিষয়াশ্রিত।
    কিন্তু অপ্রমার জ্ঞান বিষয়রহিত।
  • v) ন্যায় মতে প্রমা চার প্রকার। যথা প্রত্যক্ষ, অনুমিতি, উপমিতি এবং শব্দ।
    অপরদিকে ন্যায় মতে অপ্রমা চার প্রকার। যথা স্মৃতি, সংশয়, ভ্রম বা বিপর্যয় এবং তর্ক।
প্রমা কাকে বলে?

যথার্থ অনুভবকে প্রমা বলে।

অপ্রমা কাকে বলে?

অযথার্থ অনুভবকে অপ্রমা বলে।

Comments