বৃত্তি:- আচার্য পাণিনীর সমাস প্রকরণের বৃত্তি শব্দটি একটি পারিভাষিক শব্দ। এই বৃত্তির লক্ষণ হল- পরাধাভিধানং বৃত্তিঃ। শব্দের মধ্যে যে নিজস্ব অর্থ আছে তদতিরিক্ত অর্থ যার দ্বারা অভিহিত হয় তার নাম বৃত্তি। বৃত্তি হল এক প্রকার শক্তি। প্রত্যয়ান্তভাবে এবং অপর পদার্থান্তরভাবে যে বিশিষ্ট অর্থ জন্মে তাই পরার্থ। আর সেই পরার্থ যার দ্বারা প্রকাশিত হয় তাকে বলা হয় বৃত্তি।
অতএব বৃত্তির লক্ষণে পরার্থ উল্লেখ থাকায় তিঙন্তপদ বৃত্তি নয়। কারণ তিঙন্তের দ্বারা একার্থীভাব বা বাক্যসংকোচন সম্ভব হয় না। অন্য বৈয়াকরণরাও বলেন বিশেষণ যুক্ত কোন পদ বৃত্তির হতে গেলে বিশেষণ থাকবে না।
সমর্থ পদবিধি সূত্রে কৈয়ট বলেছেন- পর শব্দের যে অর্থ, তার অভিধান যেখানে অন্য শব্দের মাধ্যমে কথিত হয়। তাই বৃত্তি। যথা- রাজপুরুষঃ (রাজ্ঞঃ পুরুষঃ) এই সমাসবদ্ধ পদে রাজ শব্দের দ্বারা বাক্যাবস্থায় অনুক্ত পুরুষের অনুক্ত পুরুষের অর্থ বৃত্তিতে কথিত হয়েছে।
কথিত আছে পাণিনী প্রভৃতি আচার্যগণের মতানুযায়ী যা বিশিষ্ট একার্থবোধক তাই বৃত্তি। বৃত্তি পাঁচ প্রকার। যথা- i)কৃৎ, ii) তদ্ধিত, iii) সমাস iv) একদেশ, v) সনাদ্যন্তধাতু।
উদাহরণ-
- i) কৃৎ বৃত্তি – সোঢ়ুম্ (সহ্যং কর্তুম্)
- ii) তদ্ধিত বৃত্তি- দাশরথিঃ ( দশরথস্য অপত্যং পুমান্)।
- iii) সমাস বৃত্তি – বীনাপাণিঃ (বীণাপাণৌ যস্যাঃ সা)
- iv) একশেষ বৃত্তি – পিতরৌ (পিতা চ মাতা চ)
- v) সনন্ত, যঙন্ত, নামধাতু প্রভৃতি বৃত্তি- চিকীর্ষতি (কর্তুম্ ইচ্ছতি) জঙ্গম্যতে (কুটিলং গচ্ছতি), তপস্যতি (তপঃ চরতি)।