সংস্কৃত ব্যাকরণ এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রত্যয়। প্রত্যয় দুই প্রকার কৃত্ প্রত্যয় ও তদ্ধিত প্রত্যয়। নিম্নে ক্ত প্রত্যয় এবং ক্তবতু প্রত্যয়ের ব্যবহার ও ক্ত এবং ক্তবতু প্রত্যয় দ্বারা অনুবাদ কিভাবে গঠিত হবে তা দেখানো হল ।
ক্ত প্রত্যয় এবং ক্তবতু প্রত্যয়ের গঠন ও ব্যবহার
এই ক্ত এবং ক্তবতু প্রত্যয়কে নিষ্ঠা প্রত্যয় বলে।
ক্ত প্রত্যয়ের ব্যবহার
১) সাধারনত অতীতকালে ধাতুর উত্তর ক্ত প্রত্যয়ের ব্যবহার দেখা যায়।
২) প্রধানত কর্মবাচ্যে এবং ভাববাচ্যে অতীতকালে ধাতুর উত্তর ক্ত প্রত্যয় হয়।
যেমন- রামেণ হতঃ বালী(কর্মবাচ্যে)। ময়া কথিতম্(ভাববাচ্যে)।
ক্ত প্রত্যয় গঠনের নিয়ম
ক্ত প্রত্যয়ের ত থাকে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দেখা যায় ।
যেমন –
- জ , চ – থাকলে ক হয় । ত্যাজ্ +ক্ত = ত্যাক্ত ।
- শ ,ষ – থাকলে ষ্ট হয় । দৃশ্ + ক্ত = দৃষ্ট ।
- ম্ থাকলে লোপ পায় । গম্ + ক্ত = গত ।
বি দ্র :- ধাতুর পূর্বে যদি ব থাকে তাহলে উ – কার হয় । যেমন -বচ + ক্ত = উক্ত ।
ক্তবতু প্রত্যয়ের ব্যবহার
১) সাধারনত অতীতকালে ধাতুর উত্তর ক্তবতু প্রত্যয়ের ব্যবহার দেখা যায়।
২) প্রধানত কর্তৃবাচ্যে অতীতকালে ধাতুর উত্তর ক্তবতু প্রত্যয় হয়।
যেমন – বালক: চন্দ্রং দৃষ্টবান্ । (কর্তৃবাচ্যে)
ক্তবতু প্রত্যয় গঠনের নিয়ম
ক্তবতু প্রত্যয়ের শেষ তবৎ থাকে।
সুতরাং ক্ত প্রত্যয়ান্ত পদের সাথে বৎ যোগ করলে ক্তবতু প্রত্যয়ান্ত পদ গঠিত হয় ।
ত্যাজ্ +ক্ত = ত্যাক্ত + বৎ = ত্যাক্তবৎ (ত্যাজ্ +ক্তবতু )
অথবা ত্যজ্ +ক্তবতু = ত্যজ্ +ক্ত + বৎ = ত্যক্তবৎ।
ক্ত এবং ক্তবতু দিয়ে শব্দ গঠন
ধাতু | ক্ত প্রত্যয় যোগে | ক্তবতু প্রত্যয় যোগে |
---|---|---|
তৃপ | তৃপ্ত | তৃপ্তবৎ |
অর্চ্ | অর্চিত | অর্চিতবৎ |
অর্জ্ | অর্জিত | অর্জিতবৎ |
ইষ্ | ইষ্ট | ইষ্টবৎ |
গম্ | গত | গতবৎ |
তপ্ | তপ্ত | তপ্তবৎ |
ত্যজ্ | ত্যক্ত | ত্যক্তবৎ |
দৃশ্ | দৃষ্ট | দৃষ্টবৎ |
-বচ্ | উক্ত | উক্তবৎ |
ক্ত এবং ক্তবতু প্রত্যয় দ্বারা অনুবাদ নিয়ম
ক্ত দিয়ে বাক্য গঠন
ক্ত প্রত্যয় দ্বারা অনুবাদ নিয়ম
অতীতকালে ক্ত প্রত্যয় দ্বারা অনুবাদ
ক্ত প্রত্যয় কর্মবাচ্যে / ভাববাচ্যে হয় ।
কর্মবাচ্যে ক্ত প্রত্যয় দ্বারা অনুবাদ নিয়ম
কর্মবাচ্যে নিষ্পন্ন ক্ত প্রত্যয়ান্ত শব্দ কর্মের বিশেষন হয়। তাই কর্মের লিঙ্গ,বচন এবং বিভক্তি প্রাপ্ত হয়। ক্ত প্রত্যয়ান্ত পদগুলিকে সমাপিকা ক্রিয়ার মতো ব্যবহার করা যায়।
ক্ত প্রত্যয় দ্বারা কর্মবাচ্যে অনুবাদ নিয়ম-
- কর্তায় তৃতীয়া বিভক্তি হয়।
- কর্মে প্রথমা বিভক্তি হয়।
- কর্ম অনুযায়ী ক্রিয়া হয়।
পুং- নর ( অর্থাৎ পুংলিঙ্গে নর শব্দের মতো )
স্ত্রী- লতা ( অর্থাৎ স্ত্রীলিঙ্গে লতা শব্দের মতো)
ক্লীব- ফল।(ক্লীবলিঙ্গে ফল শব্দের মতো ক্ত প্রত্যয়ের রূপ হয়।)
ক্ত প্রত্যয় দ্বারা কর্মবাচ্যে অনুবাদের উদাহরণ
পুংলিঙ্গে– বালকেন চন্দ্রঃ (দৃশ্ +ক্ত = দৃষ্ট+পুং-১/১/১=দৃষ্টঃ)।
স্ত্রীলিঙ্গে– বালিকয়া চন্দ্রঃ দৃষ্টা ।
ক্লীবলিঙ্গে-ময়া পুস্তকম্ পঠিতম্।
ভাববাচ্যে ক্ত প্রত্যয় দ্বারা অনুবাদ নিয়ম
ভাববাচ্যে ক্ত প্রত্যয় হলে সর্বদাই ক্লীবলিঙ্গ ও প্রথমার একবচন হবে ।
ক্ত প্রত্যয় দ্বারা ভাববাচ্যে অনুবাদের উদাহরণ
ছেলেটি দেখেছিল – বালকেন দৃষ্টম্ (দৃশ্ + ক্ত = দৃষ্ট + ক্লীব প্রথমার একবচন)
ক্ত প্রত্যয় দ্বারা অনুবাদের ব্যতিক্রম-
ক্ত প্রত্যয় তিন বাচ্যেই হয়। ক্ত প্রত্যয়ান্ত শব্দটি কর্তার বিশেষন হলে কর্তৃবাচ্যে ক্ত,কর্মের বিশেষন হলে কর্মবাচ্যে ক্ত এবং সর্বদাই ক্লীবলিঙ্গ ও প্রথমার একবচন হলে ভাববাচ্যে ক্ত হয়েছে বুঝতে হবে।
কর্তৃবাচ্যে ক্ত কর্তা অনুসারে লিঙ্গ হয় ।
- ১) গমনার্থক ধাতুর পর।
- ২) অকর্মক ধাতুর পর।
- ৩)শী,স্থা,আস্,বস্,জন্,রুহ্ ধাতুর পর।
- যেমন- সঃ গ্রামং গতঃ।
- ৪) ইচ্ছার্থকধাতু, বোঝার্থক ধাতুর পর।
- যেমন- সঃ বিদুষাং পূজিতঃ।
- ৫) বর্তমানকালে ক্ত প্রত্যয় হলে কর্তায় ষষ্ঠী হবে।
- যেমন- বিদ্বান্ সর্বেষাং পূজিতঃ।
ক্তবতু প্রত্যয় দ্বারা অনুবাদ নিয়ম
- অতীতকালে ক্তবতু প্রত্যয় দ্বারা অনুবাদ
- ক্তবতু প্রত্যয় বাচ্যে কর্তৃ বাচ্যে হয় ।
কর্তৃবাচ্যে ক্তবতু প্রত্যয় দ্বারা অনুবাদ নিয়ম
- কর্তা অনুযায়ী ক্রিয়া হয়।
পুং- শ্রীমৎ ( অর্থাৎ পুংলিঙ্গে শ্রীমৎ শব্দের মতো )
স্ত্রী- নদী ( অর্থাৎ স্ত্রীলিঙ্গে নদী শব্দের মতো)
ক্লীব- ইচ্ছৎ (ক্লীবলিঙ্গে ইচ্ছৎ শব্দের মতো )
ক্তবতু প্রত্যয় দ্বারা অনুবাদের উদাহরণ
ছেলেটি চাঁদ দেখেছিল – বালকঃ চন্দ্রম্ দৃষ্টবান্ ।
ক্ত দিয়ে শব্দ গঠন উদাহরণ নিম্নে দেওয়া হল –
,
অশ্(ব্যাপ্তি)- অষ্ট,
অশ্(খাওয়া)- অশিত,
অস্- ভূত,
অস্(ছোঁড়া)- অস্ত,
অঞ্চ্-অঞ্চিত/অক্ত,
অদ্-জগ্ধ/অন্ন,
অর্দ্- অর্দিত,
আপ্-আপ্ত,
আস্-আসিত
ই-ইত
অধি-ই- অধীত
ঈহ্- ঈদিত
ঈক্ষ্- ঈক্ষিত
ঋধ্- ঋদ্ধ
কথ্-কথিত
কাঙ্ক্ষ- কাঙ্ক্ষিত
কম্প্- কম্পিত
ক্লিশ্- ক্লিষ্ট/ক্লিশিত
খন্-খাত
খিদ্- খিন্ন
গৃ- গীর্ণ
গাহ্-গাঢ়
গুহ্- গূঢ়
গ্রন্থ- গ্রথিত
গ্রস্- গ্রস্ত
গৈ-গীত
গ্রহ্-গৃহীত
ঘ্রা-ঘ্রাত,ঘ্রাণ
চিন্ত্-চিন্তিত
ছিদ্-ছিন্ন
জন্-জাত
জৃ-জীর্ণ
জি-জিত
জাগৃ-জাগরিত
জ্ঞা-জ্ঞাত
জীব্-জীবিত
তুষ্-তুষ্ট
তৃষ্-তৃষিত
ত্বরং-তূর্ণ/ত্বরিত
তৃ-তীর্ণ
ত্রৈ-ত্রাণ/ত্রাত
নৃত্-নৃত্ত
পচ্-পক্ক
পা-পীত
পূর্-পৃর্ণ/পূরিত
প্রচ্ছ-পৃষ্ট
পালি- পালিত
পীড়-পীড়িত
পুষ্-পুষ্ট
পূজ্-পূজিত
দহ্- দগ্ধ
দনশ্- দষ্ট
দা-দত্ত
আ-দা-আত্ত/আদত্ত
দিব্- দ্যূত/দ্যূন
দৃ-দীর্ণ
ধা-হিত
ধাব্- ধৌত/ধাবিত
ধ্যৈ-ধ্যাত
নশ্-নষ্ট
প্র-নশ্-প্রণষ্ট
নম্-নত
নিন্দ্-নিন্দিত
বচ্/ব্রূ-উক্ত
ভ্রনশ্-ভ্রষ্ট
ভ্রম্-ভ্রান্ত
মন্-মত
মসজ-মগ্ন
মা-মিত
মুহ্-মুগ্ধ/মূঢ়
মুষ্-মুষ্ট/মুষিত
মূর্চ্ছ-মূর্ত
মৃশ্-মৃষ্ট
ম্লৈ-ম্লান্
মন্থ্- মথিত
মুদ্-মুদিত
মৃ-মৃত
যম্-যত
যজ্-ইষ্ট
যুজ্-যুক্ত
রিচ্- রিক্ত
রুজ্- রুগণ
রু-রুত
রুদ্-রুদিত
রভ্-রব্ধ
রুচ্-রুচিত
রুহ্-রূঢ়
রুধ্-রুদ্ধ
লিহ্-লীঢ়
লী-লীন
লূ-লূন
লিখ্-লিখিত
লভ্+ণিচ্+ক্ত- লম্ভিত
বদ্-উদিত
বপ্-উপ্ত
বস্(পরা)-বসিত
বস্(বাস করা)- ঊষিত
বহ্-ঊঢ়
বম্-বান্ত/বমিত
ব্যধ্-বিদ্ধ
বিজ্-বিগ্ন
বিদ্(পাওয়া)-বিত্ত
বৃধ্-বৃদ্ধ
বিশ্-বিষ্ট
বৃৎ-বৃত্ত
ব্যর্থ- ব্যথিত
শপ্-শপ্ত
শম্-শান্ত
শাস্-শিষ্ট
শুধ্-শুদ্ধ
শ্রু-শ্রুত
শী-শয়িত
শক্-শক্ত
শ্রি-শ্রিত
স্না-স্নাত
সিচ্-সিক্ত
সজ্-সৃষ্ট
স্মৃ-স্মৃত
স্মি-স্মিত
সূ-সূত
সৃ-সৃত
স্পৃশ্-স্পৃষ্ট
সিব্- স্যূত
স্ফায়-স্ফীত
স্বপ্-সুপ্ত
হন্- হত
হা-হীন
হূ-হূত
হৃষ্-হৃষ্ট/হৃষিত
হ্বে- হূত
হিনস্-হিংসিত
হৃ-হৃত
সহ্-সোঢ়া
ক্রমশ ……………
কোন মতামত থাকলে কমেন্ট করে জানতে পারেন ।