সপক্ষ-বিপক্ষ পার্থক্য আলোচনা করা ।
সপক্ষ ও বিপক্ষ পার্থক্য
সপক্ষ | বিপক্ষ | |
---|---|---|
লক্ষণ | ‘নিশ্চিতসাধ্যবান্ সপক্ষঃ’ | ‘ নিশ্চিতসাধ্যাভাববান্ বিপক্ষঃ |
উদাহরণ | ‘তত্রৈব মহানসম্’ | ‘তত্রৈব মহাহ্রদঃ |
সাধ্যের অস্তিত্ব | আছে | নেই |
অন্বয় ব্যাপ্তিতে উদাহরণ | ” যো যো ধূমবান্ স স বহ্নিমান্ | নেই |
উ:- নৈয়ায়িকদের মত অনুসারে অনুমানকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- সাধ্য, পক্ষ, হেতু বা লিঙ্গ। আচার্য অন্নংভট্ট পক্ষের লক্ষণ নির্ণয় করতে গিয়ে বলেছেন-
‘সন্দিগ্ধসাধ্যবান্ পক্ষঃ’।
অর্থাৎ সন্দিগ্ধ সাধ্যের অধিকরণ বা আশ্রয়কেই বলে পক্ষ। যথা-
‘ধূমবত্ত্বে হেতৌ পর্বতঃ’
এখানে পর্বতটি হল পক্ষ।
স্বপক্ষ এবং বিপক্ষের পার্থক্য গুলি হল নিম্নরূপ-
- i) সপক্ষের লক্ষণ প্রসঙ্গে আচার্য অন্নংভট্ট বলেছেন- ‘নিশ্চিতসাধ্যবান্ সপক্ষঃ’। অর্থাৎ যে অধিকরণে সাধের নিশ্চিত জ্ঞান থাকে তাকেই সপক্ষ বলে।
অপরপক্ষে তিনি বিপক্ষের লক্ষণ প্রসঙ্গে বলেছেন- ‘ নিশ্চিতসাধ্যাভাববান্ বিপক্ষঃ।’ অর্থাৎ যে অধিকরণে সাধ্যাভাবের নিশ্চিত জ্ঞান থাকে তাকে বিপক্ষ বলে। - ii) অন্নংভট্ট সপক্ষের উদাহরণ প্রসঙ্গে বলেছেন- ‘তত্রৈব মহানসম্’ – পর্বতে ধূম দেখে বহ্নির অনুমিতির স্থলে সাধ্যটি বহ্নি, পক্ষটি পর্বত এবং সপক্ষ হল মহানসম্। কেননা মহানস্ প্রভৃতি স্থানে ধূম হেতুর সঙ্গে সাধ্য বহ্নির নিয়ত সাহচার্য বহুবার দেখা গেছে। তাই মহানসে সাধ্য, বহ্নির অবস্থান নিশ্চিত হওয়ায় মহানস্ সপক্ষ হয়েছে।
অপরপক্ষে, তিনি বিপক্ষের উদাহরণ প্রসঙ্গে বলেছেন- ‘তত্রৈব মহাহ্রদঃ।’ অর্থাৎ বিপরীত পক্ষে পূর্বে থেকে জানা আছে যে মহাহ্রদে বহ্নি থাকে না। সুতরাং যেখানে সাধ্যের অভাব নিশ্চিতরূপে বর্তমান থাকে বিপক্ষ বলা হয়। মহাহ্রদে সাধ্য বহ্নির অভাব অর্থাৎ সাধ্যাভাবটি নিশ্চিতরূপে থাকায় মহাহ্রদ হয়েছে বিপক্ষ। - iii) সপক্ষের ক্ষেত্রে সাধ্যের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়।
অপরপক্ষে বিপক্ষে সাধ্যের কোনো অস্তিত্বই নেই। অর্থাৎ সাধ্যের অভাব লক্ষ্য করা যায়। - iv) অন্বয় ব্যাপ্তিতে উদাহরণ বাক্যরূপে স্বপক্ষকে উল্লেখ করা যায়- ” যো যো ধূমবান্ স স বহ্নিমান্ -যথা-মহানসঃ।”
অপরপক্ষে বিপক্ষের ক্ষেত্রে অন্বয় ব্যাপ্তিতে এর উদাহরণ লক্ষ্য করা যায় না।
এটাই হলো স্বপক্ষ ও বিপক্ষে সম্বন্ধে আলোচনা।
Comments