আচার্য বিশ্বনাথ কবিরাজ রচিত সাহিত্যদর্পণ গ্রন্থ দশম পরিচ্ছেদ অনুসারে দীপক অলংকার সম্পর্কে সহজভাবে আলোচনা করা হল। দীপক অলংকারের লক্ষণ , উদাহরণ , বাখ্যা ও তাৎপর্য আলোচনা করা হল ।
Table of Contents
দীপক অলংকার
“দীপক” শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হল-
“অপ্রস্তুমপি পদার্থং বুদ্ধাববভাসয়তীতি”।
দীপক অলংকারের লক্ষণ
আচার্য বিশ্বনাথ কবিরাজ তার “সাহিত্যদর্পণ” গ্রন্থের দশম পরিচ্ছেদে দীপক অলংকারের লক্ষণ প্রসঙ্গে বলেছেন-
“অপ্রস্তুত-প্রস্তুতয়োর্দীপকন্তু নিগদ্যতে
অথ কারকমেকং স্যাদ অনেকাসু ক্রিয়াসু চেৎ।।”
অর্থ:- অর্থাৎ, প্রস্তুত (প্রকৃত) এবং অপ্রস্তুত (অপ্রধান) পদার্থ দুটি যখন গুন, ক্রিয়াদিরূপ যেকোনো একটি ধর্মের সঙ্গে সম্বন্ধ হলে দীপক অলংকার হয়। অথবা একটি কারকের সঙ্গে যখন একাধিক ক্রিয়ার সম্বন্ধ থাকে তখনও দীপক অলংকার হয়।
দীপক অলংকারের বাখ্যা
দীপ বা প্রদীপের মতো বস্তুকে প্রকাশিত করে বলে এই অলংকারের নাম দীপক হয়েছে। দীপক একটি নিত্য ক্লীবলিঙ্গ। তবে দীপক অলংকারের লক্ষণের সাথে তুল্যযোগিতা অলংকারের অনেক মিল লক্ষ্য করা যায়।
উদাহরণ:-
“বলাবলেপাদধুনাপি পূর্ববৎ
প্রবাধ্যতে তেন জগজ্জিগীষুণা।
সতী চ যোষিৎ প্রকৃতিশ্চ নিশ্চলা
পুমাংসমভ্যেতি ভবান্তরেষ্বপি ।।”
অর্থ:- জিগীষু বলদপি শিশুপালের দ্বারা পূর্বের ন্যায় আজও পৃথিবী পীড়িত হচ্ছে। সতী স্ত্রী এবং মানুষের নিশ্চলা প্রকৃতি জন্মজন্মান্তরে এই দুইটি পুরুষের অনুগমন করে।
দীপক অলংকারের তাৎপর্য
এখানে মানুষের নিশ্চলা প্রকৃতি প্রকৃত পদার্থ এবং সতী স্ত্রী অপ্রকৃত পদার্থ – একটি মাত্র ক্রিয়ার সাথে (অনুগমন) সম্বন্ধযুক্ত হয়েছে। অর্থাৎ, শিশুপালের প্রকৃতি যেমন পূর্বজন্ম থেকে এজন্মে এসেছে। তেমনি সতী নারীও পূর্বজন্মের ন্যায় পরজন্মেও স্বামীর প্রতি অনুগমন করে। সুতরাং, উক্ত শ্লোকটি দীপক অলংকারের প্রকৃষ্ট উদাহরণ হয়েছে।
কতকগুলি অলংকার সম্পর্কে আলোচনা করা হল –
- উৎপ্রেক্ষা অলংকার
- পরিণাম অলংকার
- দৃষ্টান্ত অলংকার
- শ্লেষ অলংকার
- উপমা অলংকার
- রূপক অলংকার
- নিদর্শনা অলংকার
- তুল্যযোগিতা অলংকার
- সমাসোক্তি অলংকার
- অর্থান্তরন্যাস অলংকার
দীপক অলংকার সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাস্য (FAQ)
প্রকৃত এবং অপ্রধান পদার্থ দুটি যখন গুন, ক্রিয়াদিরূপ যেকোনো একটি ধর্মের সঙ্গে সম্বন্ধ হলে দীপক অলংকার হয়।
দীপ বা প্রদীপের মতো বস্তুকে প্রকাশিত করে বলে এই অলংকারের নাম দীপক হয়েছে।